বৃহস্পতিবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা
এবার জিয়ার খেতাব বাতিল নিয়ে বিতর্ক

রাজনৈতিক কারণে এ সিদ্ধান্ত নয়

--মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক ও গাজীপুর প্রতিনিধি

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার দালিলিক প্রমাণসহ খন্দকার মোশতাক, জিয়াউর রহমান ও আরও অনেকের নাম এসেছে। এই দালিলিক প্রমাণের ভিত্তিতে তাদের সম্মানসূচক পদবি বাতিল করা হবে। এ রকম নজির কেবল বাংলাদেশে নয়, বহির্বিশে^ও আছে। রাজনৈতিক কারণে এ সিদ্ধান্ত নয়। গতকাল দুপুরে গাজীপুরের চন্দ্রা এলাকায় কালিয়াকৈর পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাসমূহ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্টজনের নামে নামকরণ ফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, যারা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী, আদালতে যাদের বিরুদ্ধে রায় ঘোষিত হয়েছে, তাদের চারজনের সনদ-সম্মাননা বাতিল হয়েছে। একই মিটিংয়ে (জামুকা) বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার দালিলিক প্রমাণসহ খন্দকার মোশতাক, জিয়াউর রহমানসহ আরও অনেকের নাম এসেছে। বঙ্গবন্ধু হত্যায় কার কী ভূমিকা ছিল, কী কী দালিলিক প্রমাণ আছে সেগুলোসহ পেশ করার জন্য আমরা একটি উপ-কমিটি করেছি আগামী মিটিংয়ে পেশ করার জন্য। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান, খন্দকার মোশতাক, মাহবুব আলম চাষীসহ এমন অনেকের নাম এসেছে, তাদের কার কী ভূমিকা, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডে সম্পৃক্ততা কী, তার দালিলিক প্রমাণসহ পরবর্তী সভায় উপস্থাপিত হলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। মঙ্গলবার শুধু আলোচনা হয়েছে। আমরা একটি উপ-কমিটি করে দিয়েছি। আগামী এক মাসের মধ্যে তারা রিপোর্ট দেবে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. শাহাবুদ্দিন আহসানের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে কালিয়াকৈর পৌরসভার মেয়র মজিবুর রহমান, কালিয়াকৈর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুরাদ করিব, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রাসেল, আওয়ামী লীগ নেতা মোশারফ সিকদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর ওহাব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। পরে মন্ত্রী ফিতা কেটে মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নামে ৪২টি সড়কের নাম ফলক উদ্বোধন করেন তিনি। এর মধ্যে মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম মোজাম্মেল হকের নামেও একটি সড়কের নামকরণ করা হয়েছে।

জিয়ার ‘বীরউত্তম’ খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত জামুকার : সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ‘বীরউত্তম’ খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)। পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি শরিফুল হক ডালিম, নূর চৌধুরী, রাশেদ চৌধুরী ও মোসলেহ উদ্দিনের রাষ্ট্রীয় খেতাবও বাতিলের সুপারিশ করা হয়। গত মঙ্গলবার জামুকার ৭২তম সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে শরিফুল হক ডালিমের নামের সঙ্গে ‘বীরউত্তম’, নূর চৌধুরীর নামের সঙ্গে ‘বীরবিক্রম’, রাশেদ চৌধুরীর নামের সঙ্গে ‘বীরপ্রতীক’ ও মোসলেহ উদ্দিনের নামের সঙ্গে ‘বীরপ্রতীক’ উপাধি ছিল। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদন্ডের আদেশ হওয়া আত্মস্বীকৃত চার খুনির খেতাব বাতিলের বিষয়টি জামুকার সভায় উত্থাপন করা হয়। জামুকার সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শাজাহান খান এমপি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত ও দন্ডপ্রাপ্ত খুনিদের খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি ওই হত্যাকান্ডে মদদ দেওয়ার কারণে জিয়াউর রহমানের খেতাবও বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।’ তিনি জানান, তাদের এসব সিদ্ধান্ত এখন মন্ত্রণালয়ে যাবে। তবে এটি গ্রহণ করা বা না করার ক্ষমতা মন্ত্রণালয়ের আছে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের ভূমিকার জন্য পাওয়া খেতাব পরবর্তীতে বাতিলের সুযোগ আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে শাহাজান খান বলেন, একটা কমিটি এ নিয়ে কাজ করবে এবং তারাই বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবে।

সর্বশেষ খবর