শিরোনাম
শুক্রবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

পাপুলের স্ত্রী-কন্যার জামিনের নথি জালিয়াতি তদন্তের নির্দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

কুয়েতের কারাগারে আটক লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য শহিদ ইসলাম পাপুলের স্ত্রী-কন্যার জামিন আবেদনে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তার নথি জালিয়াতির ঘটনা তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) দুই মাসের মধ্যে এ তদন্ত সম্পন্ন করতে বলা হয়েছে। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ গতকাল এ রায় দেয়। আদালতে দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান। জামিন আবেদনকারীর পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ রাজা। এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোতাহার হোসেন সাজু, বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।

পরে খুরশীদ আলম খান বলেন, আগাম জামিন আবেদনে নথি জালিয়াতির অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। দুই মাসের মধ্যে সংসদ সদস্য সেলিনা ইসলাম ও তার মেয়ে ওয়াফা ইসলাম এবং তদবিরকারী হাফেজ আহমেদসহ সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রতিবেদন দেবে দুদক। দুই কোটি ৩১ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ ও ১৪৮ কোটি টাকার অর্থপাচারের অভিযোগে শহিদ ইসলাম পাপুল ও তার স্ত্রী, কন্যা ও শ্যালিকার বিরুদ্ধে গত বছরের ১১ নভেম্বর মামলা করে দুদক। এ মামলায় ওই বছরের ২৬ নভেম্বর তারা হাই কোর্টে জামিনের আবেদন করেন। এর মধ্যে পাপুলের স্ত্রী ও মেয়ের আবেদনের শুনানি নিয়ে তাদের আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। তবে তাদের আবেদনে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি নথি জমা দেওয়া হয়। যেখানে বলা হয়, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের একটি শাখায় হিসাবে অর্থপাচার সংঘটিত হতে পারে মর্মে প্রতীয়মান হয়নি। বিষয়টি আদালতের নজরে আসায় ওই নথিতে স্বাক্ষরকারী বাংলাদেশ ব্যাংকের উপ-পরিচালক মো. আরেফিন আহসান মিঞাকে তলব করে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে (সুয়োমোটো) রুল জারি করে। তিনি হাজির হয়ে বলেন, এ নথিতে টেম্পার্ড করা হয়েছে। তবে পাপুলের স্ত্রী-কন্যার আইনজীবীর দাবি এ নথি এনআরবি ব্যাংক তাদের সরবরাহ করেছে। এরপর আদালত এনআরবি ব্যাংকের কাছে এ বিষয়ে জানতে চায়। ১২ জানুয়ারি এনআরবি ব্যাংক জানায়, তারা এ ধরনের নথি দেয়নি। এরপর আদালত এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সব নথি তলব করে। এ আদেশ অনুসারে বাংলাদেশ ব্যাংক নথি দাখিল করে। নথি উপস্থাপন করে বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনজীবী আদালতে বলেন, জামিন আবেদনে দেওয়া নথির সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের নথির মিল নেই। জামিন আবেদনে যা দাখিল করা হয়েছে তা জালিয়াতি হয়েছে। এর সঙ্গে কে বা কারা জড়িত তার তদন্ত হওয়া দরকার। শুনানিতে জামিন আবেদনকারীর আইনজীবীও বলেন, ওই নথি যদি জালিয়াতি হয়ে থাকে তবে এর সঙ্গে কে বা কারা জড়িত তা তদন্ত হওয়া দরকার। শুনানি শেষে আদালত ১১ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে রায়ের জন্য দিন ধার্য করে। সে অনুসারে গতকাল রায় দেয় হাই কোর্ট।

সর্বশেষ খবর