শুক্রবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

অনুকম্পানির্ভর মানসিকতার উত্তরণ ঘটাতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

অনুকম্পানির্ভর মানসিকতার উত্তরণ ঘটাতে হবে

ইফতেখারুজ্জামান

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ চ্যাপ্টার-টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, জাতীয় বাজেটে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো বরাদ্দ নেই। বিচ্ছিন্নভাবে কোনো কোনো মন্ত্রণালয়ে কিছু ব্যয় করা হয়, কিন্তু তা পর্যাপ্ত ও সমন্বিত নয়। জাতিসংঘ সনদের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রতিবন্ধিতাসহ ব্যক্তিদের সংগঠন পরিচালনার জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ বরাদ্দ থাকার কথা, তাও নেই। প্রতিবন্ধী ভাতা যেটা দেওয়া হয়, সেটির পরিমাণ খুবই নগণ্য এবং       তার আওতায় প্রায় ১৬ শতাংশ প্রতিবন্ধিতাসহ ব্যক্তি অন্তর্ভুক্ত নয়। গতকাল ‘উন্নয়নে অন্তর্ভুক্তি এবং প্রতিবন্ধিতা : সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ওপর মূল দায়িত্ব, কিন্তু এ ক্ষেত্রে আমরা দেখছি যে, মুদ্রাস্ফীতি ও প্রতিবন্ধিতাসহ ব্যক্তিদের সংখ্যার বিচারে কিছু বরাদ্দ সাম্প্রতিক সময়ে বৃদ্ধি পেয়েছে, কিন্তু তা সত্ত্বেও প্রয়োজনের তুলনায় তা পর্যাপ্ত ও অন্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বিত নয়। প্রতিবন্ধিতাসহ ব্যক্তিদের অধিকার সুরক্ষার কার্যক্রম মূলত সামাজিক সুরক্ষা ও কিছুটা অনুকম্পাসুলভ কার্যক্রমের মধ্যে সীমাবদ্ধ। প্রতিবন্ধিতাসহ ব্যক্তিরা আমাদের অনুকম্পা নয় বরং তারা তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হোক সেটা চায়। তাদের অধিকারের ওপর ভিত্তি করে ন্যায্য অংশগ্রহণের মাধ্যমে উন্নয়ন কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত হতে চায়। এই সুযোগটি করে দিতে হবে এবং আমাদের অনুকম্পানির্ভর মানসিকতার উত্তরণ ঘটিয়ে অংশগ্রহণমূলক কার্যক্রমের দিকে অগ্রসর হতে হবে। তিনি বলেন, প্রতিবন্ধিতাসহ ব্যক্তিদের প্রকৃত সংখ্যা নিরূপণে সরকারি নীতি-নির্ধারণী থেকে কোনো সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি, যার ফলে এ ক্ষেত্রে যারা রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধাসমূহ পাওয়ার কথা, অধিকার প্রাপ্তির তাদের যে নিশ্চয়তা রয়েছে, সেটি যথাযথভাবে প্রতিপালিত হয় না। প্রতিবন্ধিতাসহ ব্যক্তিদের স্বাস্থ্য ও শিক্ষাসহ সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত ব্যক্তিদের সংবেদনশীলতার ঘাটতি অত্যন্ত বেদনাদায়ক বলে আমরা মনে করি। শুধু সংবেদনশীলতার ঘাটতিই নয় এমনকি বিরূপ আচরণের অভিযোগও রয়েছে। এমনকি আমরা দেখলাম যে, পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মতো প্রতিষ্ঠানে প্রতিবন্ধিতাসহ ব্যক্তিরা বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। অনেক ক্ষেত্রেই তারা ন্যায়বিচার প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হন। বিশেষ করে নারী ও শিশুদের ক্ষেত্রে এই বৈষম্যের চিত্রগুলো আরও বেশি দৃশ্যমান। এ খাতে অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৪ দফা সুপারিশ করেছে টিআইবি। সম্মেলনে টিআইবির গবেষণা ও পলিসি বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল হাসান এবং গবেষণা তত্ত্ববধায়ক শাহজাদা এম আকরাম উপস্থিত ছিলেন।  প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন টিআইবির গবেষণা ও পলিসি বিভাগের প্রোগ্রাম ম্যানেজার ফারহানা রহমান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন টিআইবির আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের পরিচালক শেখ মনজুর-ই-আলম।

সর্বশেষ খবর