শনিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

চতুর্থ ধাপের পৌর নির্বাচন নিয়ে উৎকণ্ঠা-শঙ্কা

কাল ভোট, সব প্রস্তুতি শেষ

গোলাম রাব্বানী

চতুর্থ ধাপের পৌর নির্বাচন নিয়ে উৎকণ্ঠা-শঙ্কা

কাল চতুর্থ ধাপে ৫৫ পৌরসভায় নির্বাচনী লড়াই। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত টানা চলবে ভোট গ্রহণ। এ জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই ধাপে ২৬ পৌরসভায় ব্যালট পেপারে এবং ২৯ পৌরসভায় ইভিএমে ভোট গ্রহণ হবে। আগের রাতে সিল মারা ঠেকাতে ভোট গ্রহণের দিন সকালে কেন্দ্রে কেন্দ্র ব্যালট পেপার পাঠাবে ইসি। নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে মাঠে রয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এ ভোট নিয়ে উৎসাহ-উদ্দীপনার পাশাপাশি শঙ্কা-উৎকণ্ঠায় রয়েছেন প্রার্থী ও ভোটাররা। ভোট গ্রহণের ৩২ ঘণ্টা আগে গতকাল মধ্যরাতে ভোটের প্রচার শেষ হয়েছে। শেষ মুহূর্তের কিছু ঘটনা উদ্বেগ বাড়িয়েছে। গত দুই দিনে বিভিন্ন এলাকায় সংঘাত-সংঘর্ষ ও অফিস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর হয়েছে। রাজবাড়ীতে আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর এবং ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে দুই মেয়র প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়েছে। ঠাকুরগাঁও পৌরসভায় কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলা হয়েছে। এর আগেও প্রচারণা নিয়ে সংঘাত-সহিংসতা হয়েছে। টাঙ্গাইলের গোপালপুর পৌরসভায় দুই মেয়র প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে একজন প্রাণ হারিয়েছেন। ঠাকুরগাঁওয়ে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে দুটি হাতবোমার বিস্ফোরণ হয়েছে। শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় বাধা দেওয়ার নানা অভিযোগ তুলেছেন প্রার্থীরা। অনেক প্রার্থী কেন্দ্র দখলের শঙ্কাও করেছেন। এ ধাপের নির্বাচনী লড়াইয়ে অংশ নিচ্ছে আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল। পাশাপাশি মেয়র পদে লড়ছেন বেশ কিছু স্বতন্ত্র প্রার্থীও। উৎসবমুখর এ নির্বাচন নিয়ে উত্তেজনা যেমন রয়েছে, তেমনি শঙ্কাও রয়েছে ভোটার ও প্রার্থীদের মাঝে। উদ্বিগ্ন খোদ নির্বাচন কমিশনও। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, পরিবেশ শান্ত রেখে কাজ করার জন্য পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি রয়েছে। সামনের নির্বাচনগুলো ভালো ও সুষ্ঠু হবে- সংঘাত হবে না। নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেছেন, সম্প্রতি ভোটারদের ভোটবিমুখতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এটি গণতন্ত্রের জন্য অশনিসংকেত। সহিংসতা ও আচরণবিধি লঙ্ঘনের ক্রমবর্ধমান ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘সহিংসতা ও আচরণবিধি লঙ্ঘনের ক্রমবর্ধমান ঘটনায় আমি উদ্বিগ্ন।’

এদিকে ভোট গ্রহণের দিন সকালে ব্যালট পেপার পৌঁছানো ও ভোট শেষে দ্রুত ফলাফল পাঠাতে বলা হয়েছে ইসির সিনিয়র সহকারী সচিব মোহাম্মদ মোরশেদ আলম স্বাক্ষরিত নির্দেশনায়। এদিকে নির্বাচনী পরিবেশ-পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশ ও আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা টহল শুরু করেছে গতকাল থেকেই। চার স্তরের নিরাপত্তা থাকবে ভোটের পরের দিন পর্যন্ত। সঙ্গে রয়েছেন নির্বাহী ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট।

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে এবার বেশ কয়েক ধাপে পৌরসভা নির্বাচন করছে কমিশন। প্রথম ধাপের তফসিলে ২৪ পৌরসভায় ইভিএমে ভোট হয় ২৮ ডিসেম্বর। ১৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় ধাপের ভোট হয়। তৃতীয় ধাপে ৬৩ পৌরসভায় ভোট হয় ৩০ জানুয়ারি। চতুর্থ ধাপ কাল ৫৭ পৌরসভায় ভোট গ্রহণ হওয়ার কথা থাকলেও দুটি পৌরসভার নির্বাচন স্থগিত রয়েছে। এ ছাড়া পঞ্চম ধাপের ভোট হবে ২৮ ফেব্রুয়ারি। আইন অনুযায়ী, মেয়াদ শেষের পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যেই পৌরসভার ভোট করতে হয়। স্থানীয় সরকার আইন সংশোধনের পর ২০১৫ সালে প্রথম দলীয় প্রতীকে ভোট হয় পৌরসভায়। সেবার ২০টি দল ভোটে ছিল।

সর্বশেষ খবর