সোমবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

ফ্রান্সফেরত সাইফের সঙ্গে যোগাযোগ সিরিয়াভিত্তিক জঙ্গিদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফ্রান্সফেরত তরুণ সাইফ রহমানের সঙ্গে সিরিয়াভিত্তিক উগ্রবাদী সংগঠনের যোগাযোগের তথ্য পেয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। দুই দিনের রিমান্ডে তিনি ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম ইনভেস্টিগেশন (সিটিআই) বিভাগের হেফাজতে রয়েছেন। রিমান্ড শেষ হওয়ায় আজ সোমবার তাকে আদালতে পাঠানো হবে। ফ্রান্স সরকার দেশটির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনায় সাইফকে সে দেশ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে।

সিটিআইর ডিসি মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, সাইফের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপে সিরিয়াভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগের তথ্য তারা পেয়েছেন। তবে সাইফ তাদের বলেছেন, ফরাসি পুলিশকে সহযোগিতার জন্য তিনি ওই সংগঠনগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাদের জন্য তথ্য সংগ্রহই ছিল তার উদ্দেশ্য। পুলিশ সাইফের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য ও তার বক্তব্য যাচাই করে দেখছে।

সিটিআই সূত্র জানায়, সাইফকে বহিষ্কারের ব্যাপারে ফরাসি কর্তৃপক্ষ আগেই বাংলাদেশকে জানিয়েছিল। সে দেশের পুলিশের একটি দল গত ১৪ জানুয়ারি তাকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত দিয়ে যায়। সেখান থেকে সিটিটিসি তাকে ৫৪ ধারায় আটক করে আদালতে পাঠায়। পুলিশ সাইফকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড প্রার্থনা করে। পাশাপাশি তার সম্পর্কে ফরাসি সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ফরাসি ভাষায় লেখা যে নথি সরবরাহ করে, সেটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটে অনুবাদের জন্য আবেদন করে।

অনুবাদ করা প্রতিবেদন অনুযায়ী, সাইফ রহমান ২০২০ সালে সন্ত্রাসী সংগঠন দায়েস নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে ভ্রমণ করার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন। সাইফের মধ্যে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের প্রবণতা দেখা যায়। যেসব ‘উঠতি জিহাদি’ ইরাক-সিরিয়ায় যেতে পারেনি, সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো প্রায়ই তাদের উৎসাহিত করছে। বিভিন্ন দেশে তারা, বিশেষ করে দায়েসের মাধ্যমে সহিংস ঘটনা ঘটাচ্ছে। ফ্রান্সে সম্প্রতি সন্ত্রাসী হামলা অনেক বেশি বেড়ে গেছে। ২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর প্যারিসে রম্য সাময়িকী শার্লি এবদোর তৎকালীন কার্যালয়ের সামনে হামলা হয়। ২০২০ সালের ১৬ অক্টোবর কঁফ্লিয়-সান্ত অনোহিনে এবং ২০২০ সালের ২৯ অক্টোবর নিসে হামলা হয়। প্রতিবেদন বলছে, সাইফও ফ্রান্সের মাটিতে সহিংস ঘটনা ঘটাতে পারেন। অনুবাদ করা প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর পুলিশ ৫৪ ধারায় আটক সাইফের বিরুদ্ধে বিমানবন্দর থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করে। এজাহারে সিটিআইর পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম খান অভিযোগ করেন, সাইফ বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে বিদেশে থেকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দায়েসে যোগদানের চেষ্টা করেন। তিনি সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা নিয়ে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করেন। ফ্রান্সের নিরাপত্তা  বিঘ্নিত করার ইচ্ছা ছিল তার। তিনি ওই দেশের সম্পত্তির ক্ষতিসাধনের চেষ্টা করেছেন এবং প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর