শুক্রবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

এক ডোজ ভ্যাকসিনও পায়নি ১৩০ দেশ

প্রতিদিন ডেস্ক

এক ডোজ ভ্যাকসিনও পায়নি ১৩০ দেশ

অ্যান্তোনিও গুতেরেস

করোনা বিভীষিকার ভিতর জমে উঠেছে ভ্যাকসিন রাজনীতি। ফলে ধনী ১০ দেশের কবজায় চলে গেছে ভ্যাকসিনের ৭৫ শতাংশ, আর বাকি ২৫ শতাংশ জুটেছে গরিব বা অনুন্নত দেশগুলোর ভাগে। আবার গরিবদের মধ্যে ১৩০ দেশ ভ্যাকসিনের একটি ডোজও পায়নি। এ রকম ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিবও। সূত্র : রয়টার্স, এএফপি।

প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) টিকার সরবরাহ ও প্রাপ্তি নিয়ে উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। তিনি বলেছেন, এখন পর্যন্ত মোট টিকার ৭৫ শতাংশ গেছে মাত্র ১০টি দেশের হাতে। অথচ ১৩০টি দেশ টিকার একটি ডোজও পায়নি। এমন পরিস্থিতিতে      জাতিসংঘ গত বুধবার কভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে টিকাদানের ক্ষেত্রে একটি সমন্বিত বৈশ্বিক প্রচেষ্টা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে। সেই সঙ্গে বিশ্ব সংস্থা সতর্ক করে বলেছে, এ মহামারী নিয়ন্ত্রণের প্রাথমিক প্রচেষ্টায় বৈষম্যের এই বিরাট ফারাক গোটা বিশ্বকে ঝুঁকিতে ফেলেছে। মেক্সিকোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্সেলো আবরার্ড টিকার সরবরাহ ও প্রাপ্তি নিয়ে ‘অবিচারের’ নিন্দা জানান। বিষয়টিকে তিনি ক্রমে গভীর হতে থাকা ‘বৈষম্যের ফারাক’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন, যা ধনী দেশগুলোর ‘টিকা একচেটিয়াকরণের’ ফলে সৃষ্টি হচ্ছে। যুক্তরাজ্যের আহ্বানে করোনার টিকা নিয়ে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ভার্চুয়াল অধিবেশন। এতে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা অংশ নেন।  বৈঠকে বলা হয়, এই মহামারী প্রতিরোধে বিশ্বকে একসঙ্গে কাজ করা একটি নৈতিক দায়িত্ব। সারা বিশ্বে এরই মধ্যে ২৪ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে করোনায়। বৈঠকে জাতিসংঘের মহাসচিব গুতেরেস বলেন, বিশ্বে জরুরি ভিত্তিতে একটি বৈশ্বিক টিকাদান পরিকল্পনা গ্রহণ করা দরকার। যাতে ক্ষমতা, বৈজ্ঞানিক দক্ষতা, উৎপাদন ও অর্থনৈতিক সক্ষমতাসম্পন্ন সব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে এক কাতারে নিয়ে আসা যায়। এই মহামারী থেকে আমাদের যে কাউকে বেরিয়ে আসার একমাত্র পথ আমাদের সবার জন্য টিকার সহজলভ্যতা নিশ্চিত করা। গুতেরেস আরও বলেন, অর্থনৈতিকভাবে ক্ষমতাধর দেশগুলোর জোট গ্রুপ অব ২০ (জি-২০) বৈশ্বিক টিকাদান কর্মসূচিতে অর্থায়ন ও এটির বাস্তবায়নে একটি টাস্কফোর্স গঠনের এবং জাতিসংঘকে পূর্ণ সমর্থনদানের প্রস্তাব দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, করোনাভাইরাসকে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়তে দিলে এটি বারবার রূপ বদলাবে। এ ভাইরাসের যেসব নতুন ধরন দেখা যাচ্ছে, তাতে এগুলো আরও বেশি সংক্রামক, আরও প্রাণঘাতী এবং বর্তমান টিকার কার্যকারিতা ও রোগনির্ণয়ের ব্যবস্থাকে হুমকিতে ফেলতে পারে। জাতিসংঘ শিশু তহবিলের (ইউনিসেফ) প্রধান হেনরিয়েটা ফোর বলেন, ‘এই মহামারী থেকে আমাদের যে কাউকে বেরিয়ে আসার একমাত্র পথ আমাদের সবার জন্য টিকার সহজলভ্যতা নিশ্চিত করা।’ প্রসঙ্গত, উন্নয়নশীল দেশগুলোয় করোনার টিকাদান কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহায়তা করার লক্ষ্যে এরই মধ্যে একটি পরিকল্পনা তৈরি হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ‘কোভ্যাক্স’ কর্মসূচির আওতায় এ বছর ২০০ কোটি ডোজ টিকা সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। অতিরিক্ত আরও ১০০ কোটি ডোজ টিকা সংগ্রহের বিষয়ও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে এ পরিকল্পনায়।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর