বুধবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

ভারতের বিরোধিতা করে উন্নয়ন সম্ভব নয় : তথ্যমন্ত্রী

সন্দেহ পিছু ফেলে চলুন একসঙ্গে চলি : হাইকমিশনার

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভারতের বিরোধিতা করে বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক, তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, নির্বাচন এলে বিএনপি ও কিছু দল ভারত-বিরোধিতাকে সামনে এনে প্রচারণা করে। যাদের সহযোগিতা ছাড়া এ দেশের স্বাধীনতা সম্ভব ছিল না, তাদের বিরোধিতা করে! অন্যদিকে ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী বলেছেন, পরস্পরের সন্দেহ ও সংশয় দূরে রেখে একসঙ্গে চলার মধ্য দিয়ে দুই দেশই সমৃদ্ধির পথে এগোতে পারবে। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে ইন্ডিয়ান মিডিয়া করেসপনডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ইমক্যাব) আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু : বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক’ শীর্ষক সেমিনারে নিজেদের বক্তব্যে তারা এসব মন্তব্য করেন।

ইমক্যাব সভাপতি বাসুদেব ধরের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ডেইলি অবজারভার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মুক্তিযোদ্ধা ও সিনিয়র সাংবাদিক হারুন হাবীব এবং শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সবুজ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন এলে বিএনপি ও কিছু দল ভারত-বিরোধিতাকে সামনে এনে প্রচারণা করে। যাদের সহযোগিতা ছাড়া এ দেশের স্বাধীনতা সম্ভব ছিল না, তাদের বিরোধিতা করে! প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে বৈরিতা করে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয় এ কথা তারা বুঝেও বোঝে না। আবার বুঝলেও রাজনীতির স্বার্থে অপরাজনীতি করে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শিতার কারণে ১৯৭৪ সালে ভারতের সঙ্গে মৈত্রীচুক্তি হয়েছিল। ওই চুক্তির কারণে আমরা ভারতের কাছ থেকে আমাদের ছিটমহলের অধিকার ফিরে পেয়েছি। অথচ এ চুক্তি নিয়ে একটি মহল বিরূপ প্রচারণা চালিয়েছিল।

মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের জনগণকে ভারতের সহযোগিতা এবং বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত করতে দেশটির তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর ভূমিকার কথা স্মরণ করেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, পাকিস্তানের জেল থেকে বঙ্গবন্ধুকে মুক্ত করতে ইন্দিরা গান্ধী বিশ্বব্যাপী জনমত গঠন করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুকে যেন ফাঁসি দেওয়া না হয় সে জন্য ৩০টির মতো দেশ সফর করেছিলেন তিনি। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ভারতীয় হাইকমিশনার বলেন, আমাদের সম্পর্ক টেকসই হওয়ার মূলনীতি ইতিমধ্যে তৈরি হয়ে আছে। এখন আমাদের উচিত সন্দেহ-সংশয় দূরে রেখে কাজ করা। কারণ সন্দেহ ও অবিশ্বাসের কোনো জায়গা এখানে নেই। পৃথিবী খুব দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে আমরা যত দ্রুত এগোতে পারব তত দ্রুতই আমরা একসঙ্গে সমৃদ্ধি লাভ করতে পারব। দুই দেশের মানুষের মধ্যে সম্পর্কোন্নয়নে জোর দিয়ে তিনি বলেন, শিক্ষা, বাণিজ্য, সংস্কৃতি, চলচ্চিত্র, গণমাধ্যাম, ব্যবসায়, ভ্রমণ, পরিবহন বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুই দেশের একসঙ্গে কাজ করার ক্ষেত্র তৈরি রয়েছে।

দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক কেমন হবে তার মূলনীতি ও পথ বঙ্গবন্ধুর সময়ই তৈরি হয়ে যায় মন্তব্য করে তিনি বলেন, ’৭৫-পরবর্তী সময়ে এখন দুই দেশের সম্পর্ক সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ আমাদের সবচেয়ে বড় ব্যবসায়িক এবং বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বড় ট্রাভেল পার্টনার। এভাবেই আমাদের সম্পর্ক এগিয়ে যাচ্ছে। ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক যেমন বৃদ্ধি হয়েছে তেমনি সে সম্পর্ক ধ্বংসেরও চেষ্টা হয়েছে। জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক নষ্ট করেছেন। প্রতিবেশীদের মধ্যে নানা সমস্যা থাকে। সে সমস্যা আন্তরিকতার সঙ্গে সমাধান করতে হবে। ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, দুই দেশের সম্পর্ক এখন সবচেয়ে উচ্চমাত্রায়। তবে দুই দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্কোন্নয়নে আরও কাজ করতে হবে। কিছু বিষয় এখনো অমীমাংসিত। তিস্তা চুক্তি নিয়ে হতাশা রয়েছে। সীমান্তে হত্যা হলে আমাদের সম্পর্ক অম্লমধুর হয়ে যায়। করোনাকালে ভারতের সহযোগিতার প্রশংসা করে তিনি বলেন, ভারত তাদের বন্ধুত্বের প্রমাণ এই করোনা মহামারীর সময়ও দিয়েছে। ভারতের সহযোগিতায় বিশ্বের অনেক উন্নত দেশের আগে আমরা কভিড ভ্যাকসিন পেয়েছি।

সর্বশেষ খবর