বাংলাদেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পুনর্বিবেচনা চেয়েছেন জাতিসংঘ মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল বাশেলেট। তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ হওয়া উচিত। এ আইনে মুশতাক আহমেদের নামে মামলা হয়। মতপ্রকাশের কারণে এ আইনের আওতায় যাদের আটক করা হয়েছে তাদের অবশ্যই মুক্তি দিতে হবে। গতকাল জাতিসংঘ মানবাধিকারবিষয়ক হাই-কমিশনারের কার্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানান তিনি। বাংলাদেশে কারাহেফাজতে লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর ঘটনা ও কার্টুনিস্ট আহমেদ কিশোরকে নির্যাতনের অভিযোগের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে দ্রুত, স্বচ্ছ ও স্বতন্ত্র তদন্ত নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন হাইকমিশনার মিশেল বাশেলেট। তিনি তাৎক্ষণিক ও কার্যকর তদন্তের পাশাপাশি কিশোরের নিরাপত্তা এবং সুস্থতা নিশ্চিতে সরকারের বাধ্যবাধকতার বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দেন। তিনি বলেন, ‘সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে যে আহমেদ কিশোরের মৃত্যুর বিষয়টি দ্রুত, স্বচ্ছতার সঙ্গে এবং স্বতন্ত্রভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। এর সঙ্গে অন্য আটকদের সঙ্গে অসদাচরণের যে অভিযোগ এসেছে তারও দ্রুত তদন্ত করা উচিত।’
মুশতাককে গত বছর মে মাসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার করে এবং বিচারবহির্ভুতভাবে নয় মাস তিনি কারাবন্দী থাকেন। ২৫ ফেব্রুয়ারি কারাগারেই মারা যান। মুশতাকের মৃত্যুর বিচার দাবিতে বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশের হামলায় ৩৫ জন আহত এবং সাতজন আটকের খবরেও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন হাইকমিশনার মিশেল বাশেলেট। মুশতাকের মৃত্যুতে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেওয়ায় রুহুল আমিনকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে। বাশেলেট বলেন, ‘সরকারের সমালোচনার শাস্তি দিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দুর্বলভাবে সংজ্ঞায়িত বিধানগুলোর বিষয়ে জাতিসংঘের বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা দীর্ঘদিন উদ্বেগ জানিয়েছে। বাংলাদেশের জরুরিভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োগ স্থগিত করা এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের প্রয়োজনীয়তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে এর বিধানগুলো পর্যালোচনা করা দরকার। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করতে আমার অফিস প্রস্তুত আছে।’
