বুধবার, ৩ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

মশা তাড়াতে নেই সমন্বিত উদ্যোগ

------- স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন

মশা তাড়াতে নেই সমন্বিত উদ্যোগ

নগর বিশ্লেষক ও স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন বলেছেন, রাজধানীতে মশা মারতে দুই ভাগে ঢাকা সিটি করপোরেশনের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, মশা কোনো বর্ডার চেনে না। মশার গায়ে কোনো সিল মারা নেই যে কোন এলাকার মশা। ঢাকা শহরে পুরাতন ও নতুন  বিমানবন্দর, সেনানিবাস ও পিলখানায় সিটি করপোরেশনের কোনো কার্যক্রম নেই। মশা মারতে হলে দুই সিটি করপোরেশনসহ এই চারটি প্রতিষ্ঠানকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। সবগুলো মিলে একটি প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বে কাজ করা জরুরি।

গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে ফোনালাপে তিনি এ মন্তব্য করেন। আলাপচারিতায় নগর বিশ্লেষক মোবাশ্বের হোসেন বলেন, সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া সেরা ওষুধ দিয়েও মশা মারা যাবে না। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে একটি প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ নেওয়া হলে মশা নির্মূল করা অনেকাংশেই সম্ভব। তাছাড়া মশা মারতে যেসব ওষুধ কার্যকর সেই ধরনের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নিতে হবে। তাদের প্রস্তাব নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এরপর কাজ হলেই তাদের টাকা দেওয়া হবে। কিন্তু ৫০ বছর ধরে প্রচলিত পদ্ধতি ব্যবহার করেও মশা নিধন করা যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, সিটি করপোরেশন যদি বিল্ডিং বানানোর বিভিন্ন ডেভেলপার কোম্পানিগুলোকে বলে দেয়, তারা তিন-চার বছরে যেসব বিল্ডিং বানায়, সেখানে যাতে কোনোভাবেই মশার উপদ্রব না বাড়ে সে ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তাছাড়া সরকারি-আধাসরকারি সব বিল্ডিংয়ের ছাদেও ব্যাপক পরিমাণে মশার উপদ্রব রয়েছে। কারণ, এসব স্থান অপরিচ্ছন্ন, নোংরা ও পানি জমে থাকে। ছাদ পরিষ্কারে কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয় না। অথচ ছোট-বড় সাহেবদের টেবিল পরিষ্কারের জন্য কর্মচারী রাখা হয়। কিন্তু ছাদ পরিষ্কারের জন্য কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয় না।

স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন বলেন, উন্নয়নের কারণে ঢাকা শহরে যানবাহন অনেক বেড়ে গেছে। এ জন্য বাসভবনের বেজমেন্ট নির্মাণ করা হচ্ছে। এসব বেজমেন্টেও মশার ব্যাপক বিস্তার দেখা যায়। নির্মাণাধীন ভবনের বেজমেন্টে পানিও জমছে। সেখানেও মশার উৎপাত লক্ষ্য করা যায়। যারা এসব কাজ করছেন, তাদের বাধ্যতামূলকভাবে মশা মারতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। এটা সিটি করপোরেশনের কাজ নয়, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানকেই এর উদ্যোগ নিতে হবে।

তিনি বলেন, বহু ভবনে এখন সানসেট নির্মাণ করা হচ্ছে। সানসেট থাকায় সেখানে পানি জমে। মশার বংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভবনের কোনো সানসেটে যেন পানি না জমে সে ব্যাপারে কঠোরতা অবলম্বন করতে হবে। যদি কারও ভবনের সানসেটে জমা পানি পাওয়া যায়, মশার উপদ্রব দেখা যায় তাকে জরিমানা করতে হবে। সবাইকে বলে দিতে হবে, কোনো অপরিচ্ছন্ন ছাদ বা সানসেটে পানি জমে থাকলে তা হটলাইনের মাধ্যমে মোবাইল কোর্টকে জানাতে হবে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের  জরিমানা গুনতে হবে। এ জন্য একটি হটলাইন চালু করা উচিত। প্রযুক্তিনির্ভর ব্যবস্থা নিতে হবে।

নিজের বাসার অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে স্থপতি মোবাশ্বের আরও বলেন, সন্ধ্যায় ওষুধ দেওয়ার পর রাত ১২টায় আবারও কামড়ায় মশা। অ্যারোসল দিয়েও কাজ হয় না। কয়েলও কাজ করছে না। এসব ব্যবহারে মশা কিছুক্ষণ সেন্সলেস হয়ে পড়ে থাকে। পরে আবারও আক্রমণ করে। একই ওষুধ বারবার ব্যবহারের ফলে মশা মরছে না। এগুলো বিবেচনায় নিয়ে সংশ্লিষ্টদের কাজ করতে হবে। 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর