বৃহস্পতিবার, ৪ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

বাতিলের দাবি ২৬ মার্চের মধ্যে পদযাত্রায় পুলিশের বাধা

নিজস্ব প্রতিবেদক

আগামী ২৬ মার্চের মধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানিয়েছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর নেতৃত্বে বিভিন্ন সংগঠনকে নিয়ে গড়ে তোলা প্ল্যাটফরম ‘নাগরিক সমাজ’। কারাগারে লেখক মুশতাক  আহমেদের মৃত্যুর প্রতিবাদ এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে গতকাল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা কর্মসূচি থেকে এ দাবি জানানো হয়। জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে শুরু হওয়া নাগরিক সমাজের এই পদযাত্রা পুলিশের বাধায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে আটকে যায়। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে জাফরুল্লাহ চৌধুরী ২৬ মার্চের মধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের জোর দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘২৬ মার্চের আগেই এই মানবতাবিরোধী কালো আইনটি বাতিল করুন।’

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আজকে আমাদের দাবি একটাই, এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করে দিতে হবে। এটা সংস্কারের প্রয়োজন নাই। বাতিল চাই।’ এ আইনের অধীনে গ্রেফতার সবাইকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ারও দাবি জানান গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি।

জাফরুল্লাহ চৌধুরীর পাশাপাশি নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, অধ্যাপক রেহেনুমা আহমেদ, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর, ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুসহ বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা এ পদযাত্রায় অংশ নেন।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, আগামী ২৬ মার্চের মধ্যে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করা না হলে ‘কঠোর আন্দোলন’ গড়ে তোলা হবে।

ড. কামাল হোসেন অসুস্থতার কারণে নাগরিক সমাবেশে উপস্থিত থাকতে না পারলেও দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে লিখিত বক্তব্য পাঠিয়েছেন। সেই বক্তব্য পড়ে শোনান তার দল গণফোরামের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মোশতাক আহমেদ। সেখানে বলা হয়, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহারের মাধ্যমে মুক্তচিন্তা, বাকস্বাধীনতা ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা চরমভাবে খর্ব করা হয়েছে।’ একটি স্বাধীন কমিশনের মাধ্যমে কারাগারে লেখক মুশতাক আহমেদর মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করার দাবি জানান প্রবীণ আইনজীবী কামাল হোসেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবীণ শিক্ষক অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীও এই নাগরিক সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করে একটি লিখিত বক্তব্য পাঠান। সেখানে বলা হয়, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ইচ্ছামতো মামলা দেওয়া হচ্ছে, মানুষ গ্রেফতার হচ্ছেন, নাজেহাল হচ্ছেন। সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল তো গুমই হয়ে গিয়েছিলেন। সীমান্ত এলাকায় যখন তাকে দেখা গেল, তখন অসুস্থ মানুষটিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতার দেখানো হলো। ওই সময় জামিনের চেষ্টা হলো, কিন্তু কাজ হলো না।’

আটকে দেওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে পুলিশের রমনা জোনের ডিসি সাজ্জাদুর রহমান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ স্থান। রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থান হিসেবে সীমারেখা আছে। সেই সীমারেখা সম্পর্কে আমরা তাদের অবহিত করেছি। এ কথাতেই তারা এখানে থেমে তাদের বক্তব্য দিয়ে কর্মসূচি শেষ করে চলে গেছেন। তারা প্রেস ক্লাব থেকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল পর্যন্ত এসেছেন। প্রতিটি পয়েন্টে আমাদের পুলিশ থাকার পরও তাদের কোনো বাধা দেওয়া হয়নি।’

সর্বশেষ খবর