বৃহস্পতিবার, ১১ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

বাড়ছে নানা রোগবালাই

নিজস্ব প্রতিবেদক

বায়ু, পানি, শব্দ দূষণে বাসযোগ্য শহরের তালিকায় তলানিতে অবস্থান রাজধানী ঢাকার। পরিবেশ দূষণের কারণে বাড়ছে রোগবালাই। দূষিত বায়ু থেকে শ্বাসতন্ত্রের রোগ, অ্যালার্জি, হাঁপানি, নিউমোনিয়া, যক্ষ্মা, ফুসফুস ক্যান্সারের মতো রোগ হয়। পানি দূষণে টাইফয়েড, জন্ডিস, আমাশয় রোগে আক্রান্ত হচ্ছে রাজধানীর মানুষ। রাজধানীতে উচ্চমাত্রার শব্দদূষণ কমিয়ে দিচ্ছে শ্রবণ শক্তি। দূষণে শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছে নগরবাসী। বায়ুমন্ডলীয় বিজ্ঞান নিয়ে ২০ বছর ধরে কাজ করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. আবদুস সালাম। ২০১৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগ থেকে তারা ঢাকা শহরের ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাতাসের মান নিয়ে গবেষণা করেন। বায়ুদূষণ শিশুদের শ্বাসতন্ত্রের ওপর কী ধরনের প্রভাব ফেলছে তা দেখাই ছিল গবেষণার মূল লক্ষ্য। সেখানে দেখা যায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বেঁধে দেওয়া মানের চেয়েও চার থেকে পাঁচ গুণ বেশি ক্ষতিকর উপাদান ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর বাতাসে রয়েছে। গবেষকরা ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর ৯ থেকে ১০ বছর বয়সী ২৫০ জন শিক্ষার্থীর ওপর জরিপ চালিয়ে দেখেন ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ শিক্ষার্থী কাশি, ৬ শতাংশ অ্যাজমা অথবা শ্বাসকষ্ট এবং ৫ দশমিক ৬ শতাংশ ছাত্র-ছাত্রী মাইগ্রেন অথবা মাথাব্যথায় ভুগছেন। ৫০-৬০ শতাংশ শিক্ষার্থী স্বাভাবিক ভাবে শ্বাস নিতে পারছে না। জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক শাহেদুর রহমান খান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে, শীতের সময় ছাড়া অন্য সময়েও রোগী বাড়ছে। এখন প্রতিদিন গড়ে ৮০০ থেকে ১ হাজার রোগী আসছে বহির্বিভাগে। পাঁচ বছর আগে গড়ে প্রতিদিন ২০০-৩০০ জন রোগী আসত। তবে সেবার মান ও সচেতনতা বৃদ্ধির কারণেও রোগী বেড়েছে। বক্ষব্যাধির অনেক রোগ বায়ুর সঙ্গে সম্পৃক্ত। পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. লেনিন চৌধুরী বলেন, পরিবেশ দূষণ রাজধানীবাসীর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলছে। বায়ুদূষণের ফলে শ্বাসতন্ত্রে অ্যালার্জি, কাশি, হাঁপানি, নিউমোনিয়া, যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। দীর্ঘমেয়াদে দূষিত বায়ুর মধ্যে থাকলে ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। দূষিত বাতাসে থাকা বস্তুকণা শ্বাসতন্ত্রের ভিতরে গিয়ে লিভার, কিডনির কার্যকারিতা কমিয়ে দিতে পারে। তিনি আরও বলেন, দূষিত পানি পান ও খাবারের মাধ্যমে মানুষের শরীরে জীবাণু প্রবেশ করে। এতে টাইফয়েড, জন্ডিম, আমাশয় রোগে আক্রান্ত হয় মানুষ। শব্দদূষণ কানের শ্রবণ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। দীর্ঘদিন উচ্চমাত্রার শব্দের মধ্যে কেউ থাকলে স্থায়ীভাবে বধির হয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া উচ্চরক্তচাপ, পালস রেট বেড়ে যাওয়া, মেজাজ খিটখিটে ও অমনযোগী হয়ে পড়তে পারে মানুষ।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর