বৃহস্পতিবার, ১১ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা
রাজধানীতে বিএনপির সমাবেশ

অথর্ব নির্বাচন কমিশন বাতিল করতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক

অথর্ব নির্বাচন কমিশন বাতিল করতে হবে

নিরপেক্ষ নির্বাচন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে গতকাল রাজধানীর খিলগাঁও তালতলা মার্কেটের সামনে সমাবেশ করে বিএনপি -বাংলাদেশ প্রতিদিন

নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবিতে বিভাগ পর্যায়ে ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল বিকালে ঢাকা মহানগরী উত্তর বিএনপির সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে অংশ নিয়ে বিএনপির শীর্ষ নেতারা বলেছেন, অবিলম্বে এই অযোগ্য, অথর্ব নির্বাচন কমিশন বাতিল করতে হবে। যোগ্য ও নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে হবে। বাতিল করতে হবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন।

রাজধানীর খিলগাঁও তালতলা মার্কেটে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, তারেক রহমানের নামে মামলা ও সাজা প্রত্যাহারসহ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে এ প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল এতে সভাপতিত্ব করেন। এতে অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অবিলম্বে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) পদত্যাগের দাবি জানান। তিনি বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন আজ্ঞাবহ। এ কমিশন বাতিল করে যোগ্য ব্যক্তিদের দিয়ে নতুন ইসি গঠন করতে হবে। সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা                আইন বাতিল করুন। নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দিন। অবাধ, সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় কেউ পার পাবেন না।

মহানগরী উত্তর বিএনপির যুগ্মসাধারণ সম্পাদক আবুল বাসেত আঞ্জুর পরিচালনায় বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, যুগ্মমহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, রাজশাহী মহানগরী বিএনপি সভাপতি, সাবেক সিটি মেয়র মিজানুর রহমান মিনু, বরিশাল সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মজিবর রহমান সরোয়ার, খুলনা মহানগরী বিএনপি সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু, রাজশাহীর মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, চট্টগ্রামের ডা. শাহাদাত হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন। সমাবেশে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, আমানউল্লাহ আমান, যুগ্মমহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব-উন নবী খান সোহেল, সাবেক এমপি জহিরউদ্দিন স্বপন, মীর সরাফত আলী সপু, শামীমুর রহমান শামীম, সেলিমুজ্জামান সেলিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা অত্যন্ত কঠিন সময় পার করছি। স্বাধীনতার পর জাতি আর কখনো এত কঠিন সময় অতিক্রম করেনি।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি জানিয়ে বিএনপির মুখপাত্র বলেন, এ সরকার খুব দুর্বল। এত দুর্বল যে তাদের নিজেদের রক্ষা করার জন্য নতুন নতুন আইন তৈরি করতে হয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করে মানুষের বাকস্বাধীনতা, লেখার স্বাধীনতা বন্ধ করে দিতে চাইছে। অবিলম্বে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নামে এ কালাকানুন বাতিল করতে হবে।

মির্জা আব্বাস বলেন, গণতন্ত্র, ভোটাধিকারের জন্য মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল। কিন্তু নতুন প্রজন্ম এখনো ভোটের অধিকার ও গণতন্ত্র খুঁজে বেড়ায়। বাংলাদেশে গভীর রাতে এখন ভোট দেওয়া হয়। ভোটাধিকার হরণের জন্য নির্বাচন কমিশনের বিচার হবে। গুম-খুনের জন্য আওয়ামী লীগের বিচার হবে। বিনা বিচারে কেউই ছাড় পাবে না। যুদ্ধ হবে, সংগ্রাম হবে, গণতন্ত্র ফিরে আসবে। আমাদের অধিকার আমাদেরই আদায় করতে হবে। আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এ সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচনে বিএনপি যাবে না। মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিয়েই নির্বাচনে অংশ নেবে বিএনপি। তাবিথ আউয়াল বলেন, বাংলাদেশ থেকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ছুড়ে ফেলতে হবে। আমাদের অধিকার আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদেরই আদায় করে নিতে হবে। কেউ এসে দিয়ে যাবে না। সেজন্য আমাদের সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। আজকের এ সমাবেশে জনতা প্রমাণ করেছে তারা আমাদের আন্দোলনের সঙ্গে আছে। ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেন, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে আজও লজ্জিত। কারণ আমরা নতুন প্রজন্ম এখনো ভোটের অধিকার ও গণতন্ত্র খুঁজে বেড়াই। আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি, এ আন্দোলন-সংগ্রাম সফল করতে, এ সরকারের পতন ঘটাতে প্রথম বুলেটটা নেওয়ার জন্য আমার বুক পেতে দেব। তবু পালিয়ে যাব না।

সর্বশেষ খবর