শিরোনাম
শনিবার, ১৩ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা
সাক্ষাৎকার - টিপু মুনশি, বাণিজ্যমন্ত্রী

ভারত-চীনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে মুক্তবাণিজ্যে যেতে হবে

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

ভারত-চীনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে মুক্তবাণিজ্যে যেতে হবে

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ার আগে দীর্ঘদিন ব্যবসায় জড়িত ছিলেন। ফলে শিল্প বিনিয়োগের বিকাশে কী প্রয়োজন তা তিনি ভালোই জানেন। গত বছর থেকে করোনা মহামারীর আঘাতে বৈশ্বিক অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের শিল্প খাতও। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগেও ধীরগতি। এরই মধ্যে সম্প্রতি এলডিসি (স্বল্পোন্নত দেশ) থেকে উত্তরণে জাতিসংঘের চূড়ান্ত সুপারিশ পেয়েছে বাংলাদেশ। ফলে ২০২৬ সালের পর আর উন্নত দেশগুলোয় বাজার সুবিধা পাওয়া যাবে না। তৈরি পোশাক পড়বে প্রতিযোগিতার মুখে। ওষুধশিল্পে মিলবে না মেধাস্বত্ব ছাড়। এ পরিস্থিতিতে দেশের শিল্প-বাণিজ্যে যে চ্যালেঞ্জ তৈরি হচ্ছে তা মোকাবিলায় কী কৌশল গ্রহণ করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তথা সরকার সেসব জানতেই বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশ প্রতিদিন। নিচে তাঁর সাক্ষাৎকারের বিস্তারিত তুলে ধরা হলো।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : এলডিসি থেকে উত্তরণের ফলে বাণিজ্য সুবিধা হারাবে বাংলাদেশ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার কী ধরনের কৌশল নিচ্ছে?

টিপু মুনশি : ২০২৬ সালে উত্তরণ হলেও আরও তিন বছর জিএসপি প্লাস অর্থাৎ ২০২৯ সাল পর্যন্ত বাণিজ্য সুবিধা মিলবে। সামনের এ আট-নয় বছর এটি খুব বেশি সময় নয়। বাণিজ্য সুবিধা প্রত্যাহার হলে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর চাপ বাড়বে। এ কারণে আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। আমরা চেষ্টা করছি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক চুক্তি যেমন পিটিএ, এফটিএ করতে; যাতে উত্তরণের পর আমাদের সমস্যা না হয়।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : এর মানে বাংলাদেশ মুক্তবাণিজ্য চুক্তিতে যাচ্ছে ...!

টিপু মুনশি : এখনই মুক্তবাণিজ্যে গেলে আমাদের রাজস্ব আয়ে চাপ পড়বে। কিন্তু লম্বা সময় চিন্তা করে আমরা যদি রাজস্ব ক্ষতি মেনে নিয়েও মুক্তবাণিজ্যে যাই তবে দীর্ঘ মেয়াদে এর সুফল পাওয়া যাবে। এ কারণেই আমরা বিভিন্ন দেশের সঙ্গে পিটিএ, এফটিএ, সেপা (কমপ্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ অ্যাগ্রিমেন্ট), এমনকি বিমসটেকের মতো আঞ্চলিক চুক্তিগুলোর বিষয়েও সিরিয়াস। প্রধানমন্ত্রীও চান এখন থেকে আমরা এগুলো করতে থাকি যাতে ২০২৯ সালের পর হঠাৎ করে সমস্যায় না পড়ি।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : সম্প্রতি বিমসটেকের সেক্রেটারি জেনারেল আপনার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেখানে কী বার্তা দিলেন তিনি?

টিপু মুনশি : আমরা মার্চের শেষ সপ্তাহে সেক্রেটারি লেভেলে একটা মিটিং করতে যাচ্ছি। আমরা এটাতে জোর দিচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীও চাচ্ছেন। একই সঙ্গে সাতটি দেশ একটি অ্যাগ্রিমেন্টে চলে এলাম, যাতে এটা অগ্রাধিকারমূলক বা মুক্তবাণিজ্যের পরিপূরক হতে পারে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : এটা কি অনেকটা আসিয়ানের মতো?

টিপু মুনশি : হ্যাঁ। সদস্য দেশগুলো রপ্তানিতে (শুল্কমুক্ত) সুবিধা দেবে। তা আমাদের সবার জন্যই লাভজনক হবে। কিছু সমস্যা হবেই। কিন্তু সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে আমরা কাজও শুরু করেছি। আশা করি উত্তরণের কারণে আমাদের রপ্তানির ওপর যে প্রভাব পড়বে সেটুকু ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়া যাবে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : এটা তো এ অঞ্চলের বাণিজ্য সুবিধার বিষয়। ইউরোপ-আমেরিকার বাজার নিয়ে কী পরিকল্পনা?

টিপু মুনশি : আমেরিকায় আমাদের কোনো শুল্ক সুবিধা নেই। তার পরও সেটি আমাদের বৃহত্তম বাজার। আমাদের যে সমস্যা হবে তা ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে (ইইউ)। সেটা চিন্তা করে আমরা কিছু কিছু দেশ যেমন ইন্দোনেশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, নেপাল- এসব দেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তির লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছি।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : ইউরোপের জন্য সরকারের পৃথক কৌশল দরকার। কারণ ওই দেশগুলোর সঙ্গে মুক্তবাণিজ্যে গেলে বেশি ক্ষতি হবে।

টিপু মুনশি : সে কারণেই আমরা একটু ধীরগতিতে এগোচ্ছি। আমরা কিছু বিকল্প বাজারের দিকে চোখ রাখছি। একটা বড় মার্কেট রয়েছে যেটা ইউরোপের মার্কেটের সমান ক্ষমতাসম্পন্ন। মারকোসুর জোটভুক্ত দেশগুলো যেমন ব্রাজিল, আর্জেন্টিনাসহ ল্যাটিন আমেরিকার চারটি দেশ রয়েছে। ওই অঞ্চলে প্রায় ২৪ কোটি মানুষের বড় বাজার রয়েছে। ওই বাজারে যদি আমরা ঢুকতে পারি..., এ ছাড়া রাশিয়ান ফেডারেশন যেটা রয়েছে সেখানে যদি আমরা ঢুকতে পারি তাহলে কিন্তু ইউরোপিয়ান মার্কেটের পাশাপাশি নতুন বাজারে রপ্তানি সক্ষমতা তৈরি হবে। আমরা খুব চেষ্টা করছি এ দুটি মার্কেটে ঢোকার। তাহলে আমাদের চাপ অনেক কমে যাবে। কারণ দুটি এলাকা মিলিয়ে প্রায় ৫০ কোটি ক্রেতার বাজার রয়েছে যা ইউরোপের চেয়ে অনেক বড় মার্কেট। এসব পরিকল্পনা আমাদের মাথায় আছে। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। শুল্ক সুবিধা না দিলেই একেবারে আমরা ইউরোপের মার্কেটে পড়ে যাব তা নয়, তার আগেই আমরা তৈরি হব।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার ভারত-চীনের সঙ্গে আমরা কি তত সহজে মুক্তবাণিজ্যে যেতে পারব?

টিপু মুনশি : ভারত আমাদের অনেক সুবিধা দিয়েছে। তার পরও কিছু শুল্ক ও অশুল্ক বাধা আছে। এর পরও আমাদের ভারত ও চায়নার মার্কেটে ঢুকতে হবে। চায়না এখন ৯৭ শতাংশ পণ্যে বাজার সুবিধা দিচ্ছে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : চীনের এ সুবিধা তো ২০২৬-এর পর থাকবে না...।

টিপু মুনশি : হ্যাঁ, তা থাকবে না। তার আগেই বাণিজ্য সুবিধার টাইমফ্রেম যদি ২০২৯ সাল পর্যন্ত হয়, এ সময়টা প্রতিযোগিতায় সক্ষমতা বাড়ানোর সুযোগ পেলাম, পাশাপাশি বাণিজ্য সুবিধাও পেলাম। পরে সুবিধা হারানোর আগে যদি আমরা ওটাতে চলে যেতে পারি তাহলে আমাদের দুই দিকই রক্ষা হলো।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : আপনি বলতে চাইছেন ২০২৯ সাল পর্যন্ত বাণিজ্য সুবিধা নিয়ে ওই সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেভাগে ভারত-চীনের সঙ্গে মুক্তবাণিজ্যে যাবেন।

টিপু মুনশি : সময়ের আগেভাগে না বলে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরা ওই দেশের সঙ্গে এগিয়ে যাব, এ রকমটা বলা যায়।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : তৈরি পোশাকের যে চ্যালেঞ্জের কথা বলা হচ্ছে...।

টিপু মুনশি : তৈরি পোশাকে আমাদের এফিসিয়েন্সি গুড, সবই ভালো আছে। করোনার কারণে ভোক্তার চাহিদা কিছুটা কমেছে। তারা কিনছে কম বিধায় সেলটাও কম হচ্ছে। এটা সাময়িক। নিটের পণ্য কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। কারণ এটা কম দামের জিনিস। আর ঘরে বসে থাকলেও গেঞ্জির কাপড় পরতে হয়। এ জন্য এর ক্রেতা আছে। ওভেন কিছুটা চাপে পড়েছে। মানুষে বাইরে কম যাওয়ার কারণে পোশাকও কম কিনছে। তার পরও আমরা যেহেতু কম দামি পোশাক নিয়ে কাজ করি সেখানে অত বেশি চাপ পড়বে না। যেটুকু পড়েছে খুব শিগগিরই তা থেকে বেরোতে পারব আশা করছি।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : তৈরি পোশাকের ওপর নির্ভরতা কমাতে রপ্তানি বৈচিত্র্যকরণের কথা বলা হয়। বৈচিত্র্য কতটা এসেছে?

টিপু মুনশি : আমরা অনেক প্রোডাক্ট নিয়ে এগোচ্ছি। অনেক পণ্য রপ্তানিতে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। যেমন ফার্মাসিউটিক্যাল, চামড়াজাত পণ্য, পাটজাত পণ্য, হালকা প্রকৌশল। এ বছর তথ্যপ্রযুক্তি খাতে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এই প্রতিটি খাতে বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি আছে। আমরা এ পণ্যগুলো যদি ২ বিলিয়ন ডলারেও উন্নতি করি তাহলে সাত-আটটি আইটেম ৭-৮ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি বেড়ে যাবে। এসবের দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। চামড়াশিল্পে কিছুটা সমস্যা ছিল। নিজস্ব ট্রিটমেন্ট করে সেটাও কাটিয়ে উঠছেন তারা। তো এ বেশ কয়েকটি আইটেম নিয়ে সামনে এগোনোর সুযোগ রয়েছে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : ওষুধ খাতের কথা বলছেন। এলডিসি থেকে উত্তরণের ফলে আমাদের মেধাস্বত্ব সুবিধা প্রত্যাহার হয়ে যাবে। তখন ওষুধশিল্প চ্যালেঞ্জে পড়বে...।

টিপু মুনশি : ওষুধশিল্পে ২০৩৩ সাল পর্যন্ত মেধাস্বত্ব সুবিধা পাওয়ার কথা...।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : কিন্তু আমরা তো শুনছি ২০২৬-এর পর পাওয়া যাবে না...।

টিপু মুনশি : এটা ২০২৯ সাল পর্যন্ত হতে পারে। তবে এ বিষয়ে এখনো পরিষ্কার কিছু জানা যায়নি। আমরা খতিয়ে দেখছি ২০২৯ সালেই শেষ হবে নাকি ২০৩৩ পর্যন্ত পাওয়া যাবে, এটা আমার নিজেরও দেখতে হবে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : ওষুধশিল্পের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার কী উদ্যোগ নিচ্ছে?

টিপু মুনশি : ওষুধের কিন্তু আমাদের কোয়ালিটি খুব ভালো। এর মধ্যে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সক্ষমতাও বাড়ছে। আমরা মনে করছি এ সক্ষমতা আরও বাড়িয়ে বাজার ধরে রাখতে পারব। একটু ধাক্কা আসতেও পারে। কিন্তু বাই দিজ টাইম, আমাদের অ্যাবিলিটি বাড়বে। আমাদের নিজস্ব মার্কেটেও চাহিদা মিটছে। আফ্রিকার মার্কেটটা যদি ধরতে পারি সেখানে বড় সুবিধা পাওয়া যাবে। এ রকম নতুন বাজারে যাওয়ার প্রচেষ্টা চলছে। খুব বড় রকমের অসুবিধায় পড়ব বলে আমরা মনে করি না।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : রপ্তানি বাড়ানোর ক্ষেত্রে বৈদেশিক মিশনগুলোর একটা বড় ভূমিকা থাকে...।

টিপু মুনশি : ঠিক বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী বারবার একটা কথা বলছেন, আমাদের বৈদেশিক মিশনগুলোকে বাণিজ্যিক মিশন বানাতে হবে। এ দিকটাতে কাজ করতে হবে। ডিপ্লোম্যাটিক মিশন আছে যেটা কনভেনশনাল কাজ করেই যাবে। তার পরও নতুন সময়ে নতুন চিন্তায় এগিয়ে যেতে হবে। এদের জব দিয়ে দাও যে এরা কী করল, কী ব্যবসা ডেভেলপ করতে পারল, কী মার্কেট করতে পারল, কী ডিসপ্লে করতে পারল...।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : প্রধানমন্ত্রী কমার্শিয়াল ডিপ্লোম্যাসিতে জোর দিচ্ছেন...?

টিপু মুনশি : হ্যাঁ। যেমন নাইজেরিয়ায় আমাদের একটা শোরুম করা হয়েছে দূতাবাসের উদ্যোগে। সেখানে আমাদের পণ্যগুলো দেখানো হয়। কানাডায়ও আমরা বলেছি পাটজাত পণ্যের প্রদর্শনী করতে। মিশনগুলোকে বলা হয়েছে, মাঝেমধ্যে বাইরের লোকদের ডেকে যাতে এসব পণ্য দেখানো হয়। আমাদের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর যারা আছেন তাদের মোটিভেট করা, প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। তাদের জব ডেসক্রিপশন দেওয়া হয়েছে। প্রতি তিন মাস পরপর তাদের বলতে হবে কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে। এটা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ- ওখানে বসে মিশনগুলো কী করছে তার খোঁজ রাখতে হবে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : সামনে নতুন বাজেট আসছে। করোনা মহামারীর প্রভাব আছে। এ অবস্থায় শিল্প খাত উজ্জীবিত করতে বাজেটে কী ধরনের উদ্যোগ থাকা উচিত?

টিপু মুনশি : করোনা মহামারী দীর্ঘায়িত হলে যে খাতগুলো ক্ষতির মুখের পড়বে তার ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করতে হবে। দেখতে হবে সমস্যাগুলো কী। পাশাপাশি একটা স্টাডি করতে হবে করোনা প্রলম্বিত হলে কীভাবে আরও প্রণোদনা দেওয়া যায়, বাজেট সাপোর্ট দেওয়া যায়। কারণ আমাদের সবকিছু মাথায় নিয়েই এগোতে হবে। প্রধানমন্ত্রী খুব সঠিক সময় শিল্প খাতে প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। না হলে কিন্তু গার্মেন্ট সেক্টর একদম বিপর্যয়ে পড়ত। এ অভিজ্ঞতা থেকেই আমাদের কৌশল নির্ধারণ করতে হবে এবং সে অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : সরকার কি আরও নতুন প্রণোদনা দিতে পারে?

টিপু মুনশি : এটা এখনই বলা মুশকিল। সরকার কিন্তু ঋণ পরিশোধের সময়সীমা ছয় মাস আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এখন পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। পরিস্থিতি বুঝে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : করোনায় যেসব খাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের বিষয়ে বাজেটে করসংক্রান্ত কোনো সুবিধার সুপারিশ ট্যারিফ কমিশনের মাধ্যমে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় করবে কি না?

টিপু মুনশি : এ বিষয়ে একটা স্টাডি হচ্ছে। আমরা আমাদের রিপোর্টে উল্লেখ করব কোথায় কোথায় কর সুবিধা দিতে হবে। এফবিসিসিআই এ ব্যাপারে আমাদের সাপোর্ট করবে। আমরা তাদের কাছ থেকে তথ্য নেব প্রকৃতভাবে কোন শিল্পে কতটা ক্ষতি হয়েছে, ডিউটিতে কোথাও সুবিধা দেওয়া দরকার কি না বা ট্যাক্সে কী ছাড় দেওয়া যায়। এ নিয়ে আমাদের একটা টিম কাজ করছে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : আগামী মাসেই রমজান। এ মুহূর্তে পিঁয়াজের দাম বাড়ছে। আন্তর্জাতিক বাজারের কারণে ভোজ্য তেলের দামও ঊর্ধ্বমুখী। নিত্যপণ্য নিয়ে সরকারের পরিকল্পনা কী?

টিপু মুনশি : পিঁয়াজ নিয়ে কোনো চিন্তা করছি না। এখনো ২৫ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে আছে। তা ছাড়া রমজান মাস পুরোপুরি পিঁয়াজ উৎপাদনের সময়। ভোজ্য তেলের দাম বিশ্ববাজারেই এখন বাড়তি। আমাদের চাহিদার ৯৫ ভাগ বাইরে থেকে আনতে হয়। ফলে সে দামের সঙ্গে দেশের বাজারে দাম বাড়বেই। আমরা চাইছি আন্তর্জাতিক বাজারে যে দাম রয়েছে তার সঙ্গে অভ্যন্তরীণ বাজারের দামটা যেন সমন্বিত হয়। অহেতুক যেন কেউ না বাড়ায়। সে জন্য একটা ফরমেটে ফেলে দাম ফিক্সডআপ করে দিয়েছি। পাশাপাশি টিসিবিকে ভর্তুকি দিয়ে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে দেওয়ার জন্য প্রায় ৩০ হাজার টন ভোজ্য তেল আমদানি করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ প্রতিদিন : তাহলে আপনি ভোক্তাদের আশ্বস্ত করছেন এবার রমজানে কোনো ধরনের সমস্যা হবে না...।

টিপু মুনশি : ইনশা আল্লাহ! তবে ভোজ্য তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে বেশি থাকায় আমাদের দেশের মার্কেটটা তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ রাখার চেষ্টা করব।

 

সর্বশেষ খবর