সাম্প্রদায়িক অপশক্তি প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ১০ বিশিষ্ট নাগরিক। তাঁরা অবিলম্বে হেফাজত নেতা মামুনুল হকসহ শাল্লার নিরীহ মানুষের ওপর আক্রমণকারী, অগ্নিসংযোগকারী ও লুণ্ঠনকারীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন। গতকাল শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, লেখক, নাট্য ব্যক্তিত্বসহ ১০ বিশিষ্ট নাগরিক গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলেন, বাংলাদেশের জনগণ যখন স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ পালন করছে, তখন শাল্লায় যে অমানবিক সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটেছে, তা আমাদের ক্ষুব্ধ করেছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন এ ধরনের সাম্প্রদায়িক ঘটনা আমাদের বিস্মিত করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম মারফত জানা গেছে, হেফাজতের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মামুনুল হকের উসকানিতে হেফাজতের অনুসারীরা সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করে এ বীভৎস সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটায়। স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সম্ভাব্য হামলা সম্পর্কে জেনেও যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি। তাঁরা আরও বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন মহলের প্রশ্রয়ে সাম্প্রদায়িক হেফাজত-জামায়াতিরা দেশের বিভিন্ন স্থানে এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর সাহস পাচ্ছে। এ সাম্প্রদায়িক শক্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেশের অনেক প্রগতিশীল ব্যক্তিদের নামে কুৎসা রটনা করছে। অথচ বিটিআরসি এই কুৎসা রটনাকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আমরা এই দন্ডযোগ্য অপরাধ নিয়ন্ত্রণে বিটিআরসির যথাযথ তৎপরতা প্রত্যাশা করি। বিবৃতিদাতারা বলেন, আমাদের আশঙ্কা, শেখ হাসিনা দেশকে যে লক্ষ্যে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এবং বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের যে ভাবমূর্তি গড়ে তুলেছেন, শাল্লাজাতীয় সাম্প্রদায়িক ঘটনা সেই ভাবমূর্তিকে বিনষ্ট করবে এবং একটি নেতিবাচক দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বে প্রতীয়মান হবে। আমদের আশঙ্কা এ ধরনের সাম্প্রদায়িক ঘটনা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে না, পিছিয়ে যাবে এবং এতদিনের সব অর্জন ভূলুণ্ঠিত হবে। এই সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে সরকার যে ব্যবস্থাই নেন, তা সরকারের বিবেচনা। সব শেষে দেশের সব সুনাগরিকের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তাঁরা বলেন, আসুন আমরা সম্মিলিতভাবে এই জঙ্গি সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে প্রতিরোধ করি। বিবৃতিদাতারা হলেন- আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী, হাসান আজিজুল হক, শামসুজ্জামান খান, সারোয়ার আলী, মফিদুল হক, মামুনুর রশীদ, মুনতাসীর মামুন, শাহরিয়ার কবীর, আবদুস সেলিম ও নাসির উদ্দীন ইউসুফ।
