শিরোনাম
সোমবার, ২২ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

বঙ্গবন্ধুর পথ অনুসরণ করেই দেশ আজ উন্নয়নশীল : শেখ হাসিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

বঙ্গবন্ধুর পথ অনুসরণ করেই দেশ আজ উন্নয়নশীল : শেখ হাসিনা

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথ অনুসরণ করেই বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে। এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখে আগামী ’৪১ সালে বাংলাদেশ  উন্নত সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুুজিবুর রহমানের ১০১তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ সভায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শেখ হাসিনা গণভবন থেকে সভাপতিত্ব করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর ইতিহাস থেকে তাঁর নামটা মুছে ফেলার আপ্রাণ চেষ্টা হয়েছিল। স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে জিয়াকে দাঁড় করানো হয়েছিল। স্বাধীনতার নায়ক বানানো হয়েছিল। মিথ্যা ঘোষক হওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। আজকে আন্তর্জাতিকভাবেও সেই ঘোষকের আর কোনো ঠিকানা থাকবে না। ১৫ আগস্ট জাতির পিতার হত্যাকান্ডের নির্মম বর্বরতার বিভিন্ন প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, এভাবে তাঁকে হত্যা করা হবে, এটি বোধহয় তিনি কখনো কল্পনাও করতে পারেননি, বিশ্বাসও করতে পারেননি। তার কারণ ছিল বাংলাদেশের মানুষকে তিনি গভীরভাবে ভালোবেসে ছিলেন। তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো সেই দীর্ঘ সংগ্রামের পথ বেয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আমাদের যে স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন, অথচ সেই স্বাধীন দেশেই তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করা হলো। শুধু হত্যা করা নয়, হত্যার পর ইতিহাস থেকে তাঁর নামটা মুছে ফেলার আপ্রাণ চেষ্টা করা হয়। তিনি বলেন, এই বাংলাদেশে এমন একটা সময় ছিল যে বঙ্গবন্ধুর নামটা পর্যন্ত নেওয়া যেত না। তাঁর নামটা নেওয়া যেন নিষিদ্ধ ছিল। যে মহান মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদ রক্ত দিয়েছে, কত মা-বোন ইজ্জত দিয়েছে, কত মানুষ আপনজন হারিয়েছে, গৃহহারা হয়েছে, এই যে এত বড় একটা বিশাল অবদান; সেই অবদানের মধ্য দিয়ে আমরা পেয়েছিলাম স্বাধীনতা। কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশে ’৭৫-এর পর এমন একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল যে যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছিল তারা নিজেরা যে বলবে, আমি মুক্তিযুদ্ধ করেছি; সেই কথাটা বলার মতো সাহস তাদের ছিল না। সে সাহসটাও হারিয়ে ফেলেছিল। কারণ তাহলেই নির্যাতনের শিকার হতে হতো। তিনি বলেন, শুধু জাতির পিতাকে হত্যা করে অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে যারা ক্ষমতা দখল করেছিল, তাদের চাটুকারিতা যারা করতে পারত শুধু তারাই সবকিছু বলতে পারত। তাদের জন্য যেন সবকিছু বলার একটা অধিকার ছিল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৭ মার্চের সেই ঐতিহাসিক ভাষণ, যে ভাষণ এ দেশের মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছিল। যে ভাষণের মধ্য দিয়ে অসহযোগ আন্দোলন করে, সেই অসহযোগ আন্দোলনকে সশস্ত্র বিপ্লবে রূপ দিয়েছিলেন। সেই ভাষণ নিষিদ্ধ ছিল। আজকে জাতির পিতার জন্মদিন আমরা পালন করছি। আমি বাংলাদেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমি, আমার দল, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং তার সহযোগী সংগঠনের সব নেতা-কর্মীর প্রতি কৃতজ্ঞ।’ সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আবারও নতুনভাবে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। আমি সবাইকে অনুরোধ করব স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার, এটা খুব প্রয়োজন। কারণ আমরা আমাদের গৃহীত পদক্ষেপে করোনাভাইরাস যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছি। নতুনভাবে সারা বিশ্বেই আবার এই করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এর ফলে আমরা অর্থনৈতিকভাবে যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হই সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। পাশাপাশি সাংগঠনিকভাবেও আমাদের কাজ করতে হবে। চাষাবাদের ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের কর্মী ভাইদেরও আরেকটি অনুরোধ করব ১ ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। কারণ করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বব্যাপী যে কোনো সময় দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে। আমাদের দেশের মানুষের যেন কখনো খাদ্য সংকট দেখা না দেয়, আমরা যেন অপরকে সহযোগিতা করতে পারি সেদিকে আমাদের সবাইকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে সারা দেশে কর্মসূচি নিতে হবে। দরিদ্র মানুষকে সাহায্য করতে হবে। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য রাখেন দলীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ ছাড়া বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, ড. আবদুর রাজ্জাক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, মির্জা আজম, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান, শিক্ষা সম্পাদক শামসুন্নাহার চাঁপা, আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তরের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান এবং দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির। গণভবন প্রান্তে সভা পরিচালনা করেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ।

সর্বশেষ খবর