শুক্রবার, ২৬ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

বাড়ছে করোনা টেস্ট কমছে টিকাদান

তিন মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ মৃত্যু টিকা রপ্তানি স্থগিত ভারতের

জয়শ্রী ভাদুড়ী

চলতি মাসের শুরু থেকে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। করোনা শনাক্তে বেড়েছে নমুনা টেস্ট। কিন্তু করোনা প্রতিরোধে টিকা নিতে আগের চেয়ে কমেছে নিবন্ধন ও টিকাদান। আগামী ৮ এপ্রিল শুরু হবে টিকার দ্বিতীয় ডোজ। এর মধ্যে আজ ভারত থেকে উপহার হিসেবে আসছে  আরও ১২ লাখ ডোজ টিকা। দেশে করোনার গণটিকাদান শুরু হয় ৭ ফেব্রুয়ারি। শুরুর দিকে দৈনিক টিকাগ্রহীতার সংখ্যা ২ লাখ ৩০ হাজারের বেশি ছিল। অথচ গতকাল টিকা নিয়েছেন ৭০ হাজার ৪০৭ জন। গতকাল টিকার জন্য নিবন্ধন করেছেন ৭৩ হাজার ৫৬০ জন, গত বুধবার নিবন্ধন করেছেন ৮৯ হাজার ৭৫৯ জন, গত মঙ্গলবার নিবন্ধন করেছেন ৯১ হাজার ৬৯৫ জন, গত সোমবার নিবন্ধন করেছেন ৮৪ হাজার ২৩৬ জন। প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও ইউজিসি অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ বলেছেন, যত বেশি মানুষকে টিকার আওতায় আনা সম্ভব হবে, সংক্রমণ থেকেও তত বেশি সুরক্ষা পাওয়া যাবে। নিবন্ধন ও দৈনিক টিকা দেওয়ার গতি বাড়িয়ে অল্প সময়ে বেশি মানুষকে টিকার আওতায় আনা দরকার। টিকা দিলেও স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। বাইরে বের হলে মাস্ক পরতে হবে, হাত ধুতে হবে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। সুস্থ থাকতে চাইলে এগুলো অবশ্যই মানতে হবে। করোনা টিকা নিলে মৃত্যুঝুঁকি কমে। এ জন্য করোনায় সম্মুখসারির কর্মী ও ৪০ বছরের বেশি বয়সীরা অবশ্যই টিকা নিবেন। স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, গতকাল করোনার নমুনা টেস্ট হয়েছে ২৭ হাজার ৪৫ জনের। এর মধ্যে দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ৫৮৭ জনের। গতকাল করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩৪ জন। সংক্রমণের হার ১৩ দশমিক ২৬ শতাংশ। গত বুধবার নমুনা টেস্ট হয়েছে ২৭ হাজার ৫০২ জনের। এর মধ্যে শনাক্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৫৬৭ জন। মঙ্গলবার টেস্ট হয়েছে ২৫ হাজার ৯৫৪ জনের, করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ৫৫৪ জন। সোমবার টেস্ট হয়েছে ২৫ হাজার ১১১ জনের, আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৮০৯ জন। প্রতিদিনই বাড়ছে করোনা টেস্ট ও আক্রান্তের হার। চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতির অন্যতম কারণ কয়েক প্রকারের করোনাভাইরাসের ভেরিয়েন্ট। প্রথম করোনাভাইরাসের যে ভেরিয়েন্ট সারাবিশ্বে সংক্রমণ ঘটিয়ে ছিল সেটি কভিড-১৯। এরপর দ্বিতীয় ভেরিয়েন্টের নাম ইউকে ই-১১৭, তৃতীয় ভেরিয়েন্টের নাম ইউকে ই-১৫২৫, চতুর্থ সাউথ আফ্রিকান ভেরিয়েন্ট ই-১৩৫, পঞ্চম ভেরিয়েন্ট ব্রাজিলিয়ান পি-১। যে টিকাগুলো আবিষ্কৃত হয়েছে সেগুলো বেশিরভাগ ভেরিয়েন্টের বিরুদ্ধে কাজ করে। কিন্তু কোনো কোনো ভেরিয়েন্টের ব্যাপারে কাজ করে না বা কাজ করে কিনা এটা এখনো প্রমাণিত হয়নি। তাই টিকা নিলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলায় জোর দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি না মানায় ও দেশে নতুন ভেরিয়েন্টের কারণে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। করোনাভাইরাসের জিন বিশ্লেষণে নতুন দুটি ভেরিয়েন্ট পাওয়া গেছে। যার সঙ্গে যুক্তরাজ্যের অত্যধিক সংক্রমণকারী ভেরিয়েন্টের মিল রয়েছে। এবার অপেক্ষাকৃত কম বয়সীরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। করোনা সংক্রমণ বাড়লেও টিকার নিবন্ধন ও টিকাদান কমেছে। গতকাল টিকা নিয়েছেন ৭০ হাজার ৪০৭ জন। এ পর্যন্ত টিকা নিতে নিবন্ধন করেছেন ৬৫ লাখ ২৬ হাজার ৫৩৮ জন।

অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন রফতানি স্থগিত করল ভারত : নতুন করে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড ভ্যাকসিন রফতানি সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে ভারত। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ২৫ মার্চ থেকে প্রতিষ্ঠানটির টিকা রফতানি করা হবে না।

সর্বশেষ খবর