বৃহস্পতিবার, ১ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

হার মানিয়েছে মধ্যযুগীয় বর্বরতা

-মিছবাহুর রহমান চৌধুরী

শফিকুল ইসলাম সোহাগ

হার মানিয়েছে মধ্যযুগীয় বর্বরতা

হেফাজতে ইসলামের তান্ডব মধ্যযুগীয় বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরী।

গত রবিবার হেফাজতের ঘোষিত হরতাল কর্মসূচিতে আগুন জ্বালাওপোড়াও প্রসঙ্গে গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।

মিছবাহুর রহমান চৌধুরী বলেন, দেশের  ষোলো কোটি মানুষের সম্পদ বিশেষ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তারা যেভাবে ছাড়খার করে দিল, এসব কর্মকান্ড ইসলাম সমর্থন করা দূরে থাক, ঘৃণা করে। মানুষের অধিকার ক্ষুণœ করার জন্য কিয়ামতের দিন তাদের জবাবদিহিতার কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে এবং আল্লাহর কাছে জবাব দিতে হবে। আর এসব লোকের দ্বারা ইসলাম হেফাজত করবেন, এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। তিনি বলেন, প্রশ্ন হচ্ছে তারা কেন জ্বালাও পোড়াও করলেন, নেপথে কারা? তিনি বলেন, নরেন্দ্র মোদি ভারতের প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী দাওয়াত করেছেন। একই সঙ্গে বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে মুজিববর্ষ পালন করা হচ্ছে। দাওয়াত করা হয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে। নরেন্দ্র মোদি কেন, এই পদে যিনি থাকুন তাকেই এই অনুষ্ঠানে দাওয়াত করা অত্যন্ত যৌক্তিক। এই কারণে যে, মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত আমাদেরকে সহযোহিতা করেছে। আমাদের এক কোটি শরণার্থীকে তারা আশ্রয় দিয়েছে। আমাদের মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে ভারতের সৈন্যরা যৌথভাবে যুদ্ধ করেছে। তাদের অনেক সৈন্য নিহত হয়েছে। এই হিসেবে আমাদের দেশ স্বাধীন হওয়ার পেছনে তাদের অবদানকে আমরা ছোট করে দেখতে পারি না। নরেন্দ্র মোদি একজন ব্যক্তি। তাদের রাজনীতিকে আমরা অপছন্দ করি। কিন্তু ভারত পৃথিবীর অন্যতম বৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। এখানে প্রায় ৩০ কোটি মুসলমানের বসবাস। তিনি বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে দাওয়াত দেওয়ায় হেফাজত ক্ষুব্ধ হয়েছে বিষয়টা এমন নয়। তারা ছয়-সাত মাসব্যাপী হেলিকপ্টারে সফর করে দশ থেকে বারোজন সারা দেশে সরকারের বিরুদ্ধে নানাভাবে কুৎসা রটাচ্ছিলেন। সরকারকে ইসলামদ্রোহী হিসেবে আখ্যায়িত করে কুৎসা রটাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, গত ৬ ফেব্রুয়ারি জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বলেছি, বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য হেফাজত প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। মিথ্যাচার করছেন। ইসলামে মিথ্যাচার কখনো বৈধ নয়। ইসলাম মহান শান্তির ধর্ম। গত ২০ বছর আগেও তারা অসাম্প্রদায়িক ছিলেন। দেওবন্দের শতবর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠানে তারা ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে প্রধান অতিথি করেছিলেন। মিছবাহুর রহমান চৌধুরী বলেন, যখন মোদি আসেন তখন হেফাজত গ্রামে গ্রামে গিয়ে মাহফিল করে অপপ্রচার চালিয়েছেন, নরেন্দ্র মোদি নাকি কোরআন শরিফের ২৬টি আয়াত উঠিয়ে দিয়েছেন। একজন মুসলিম নামধারী কুফর ওয়াসিম পারভেজ সে ভারতের হাই কোর্টে রিট করেছে। আমরা মোদির কাছে দাবি করতে পারি, ভারতের হাইকমিশন বা মিছিলের মাধ্যমে ওসাসিম পারভেজকে যেন কোনো প্রকার সহযোহিতা না করেন। তিনি বলেন, সারাবিশ্ব আমাদের উন্নয়নের প্রশংসা করছিল। অথচ এই সময়ে তারা গৌরবে শামিল না হয়ে আগুন দিয়ে তান্ডব চালিয়ে বিশ্বের কাছে আমাদের ছোট করল। হরতাল আহ্বানকারীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত এবং নিহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর