শনিবার, ৩ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা ক্যাম্পসংলগ্ন এলাকায় আগুন তিনজন নিহত

কক্সবাজার প্রতিনিধি

রোহিঙ্গা ক্যাম্পসংলগ্ন এলাকায় আগুন তিনজন নিহত

উখিয়ার কুতুপালং বাজারে ভয়াবহ আগুন -বাংলাদেশ প্রতিদিন

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ১০ দিনের মাথায় এবার উখিয়ার কুতুপালং বাজারে একটি মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয়ে এ পর্যন্ত তিনজন মারা গেছেন। তারা দোকানের কর্মচারী বলে জানা গেছে। ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২ কোটি টাকার। বৃহস্পতিবার দিবাগত ভোর রাত ৩টার দিকে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে।  আগুনে পুড়ে যাদের মৃত্যু হয়েছে তারা হলেন- উখিয়ার কুতুপালং ১০ নম্বর ক্যাম্পের ব্লক-১০ (জি)র বাসিন্দা সৈয়দ আলমের ছেলে আনসারুল্লাহ (২০), একই ক্যাম্পের রেজাউল করিমের ছেলে ফরিদুল ইসলাম (২৫) ও আমান উল্লাহর ছেলে মুহাম্মদ আয়াছ (২২)। তারা তিনজনই দোকানের কর্মচারী ও রোহিঙ্গা নাগরিক।  এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ড কুতুপালং এলাকার সদস্য ও বাজার কমিটির সভাপতি প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন।

তিনি জানান, শুক্রবার ভোর রাত ৩টার দিকে কুতুপালং বাজারে আগুন লাগার খবর পেয়ে উখিয়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে খবর দেওয়া হয়। স্টেশনের দলনেতা ইমদাদুল হকের নেতৃত্বে দমকল বাহিনী ঘটনাস্থলে এসে প্রায় তিন ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন। আগুনের সূত্রপাত কীভাবে হয়েছে তা এখনো নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছি না। তবে ধারণা করা হচ্ছে, কয়েলের আগুন থেকে আগুন লেগেছে। কাপড়ের দোকানসহ সাতটি দোকান সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরও ২৫-৩০টি দোকান। অগ্নিকান্ডে প্রায় ২ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনার খবর পেয়ে কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। হেলাল আরও জানান, বাজারের দোকানে মানুষ রাত যাপন করে না। কিন্তু গত রাতে কাজ সেরে কর্মচারীরা থেকে যান। একটি দোকানে পাঁচজন ও অপর দোকানে ছয়জন রাত যাপন করেছে। আগুন লাগলে একটি দোকানের পাঁচজনই দরজা খুলে বের হতে পেরেছেন। অন্য দোকানের তিনজন বের হতে পারলেও বাকি তিনজন অঙ্গার হয়ে যান। এদের একজন দোকানের ভিতর টয়লেটের পানির কল ছেড়ে আগুন থেকে বাঁচার চেষ্টা করেও বাঁচতে পারেননি। পানি লাগা পা দুটি কম পুড়লেও পুরো শরীর তার অঙ্গার হয়ে যায়।  দমকল বাহিনীর কর্মকর্তা ইমদাদুল বলেন, উখিয়ার শরণার্থী ক্যাম্প-সংলগ্ন কুতুপালং বাজারের মার্কেটে আগুন লাগার খবর পেয়ে সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালায়। এক পর্যায়ে ভোর রাত সোয়া ৫টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। তবে তার আগে বেশ কিছু দোকানপাট ও অন্যান্য স্থাপনা ভস্মীভূত হয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের পাশাপাশি স্থানীয় লোকজনও সহযোগিতা করে। আগুনের সূত্রপাতের কারণ এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নির্ধারণ এখনো সম্ভব হয়নি। উল্লেখ্য, গত ২২ মার্চ উখিয়ার বালুখালীসহ তিনটি আশ্রয় শিবিরে আগুনে ১০ হাজার বসতি পুড়ে যাওয়ার পাশাপাশি ছয় শিশুসহ অন্তত ১১ জন রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন প্রায় ৪৫০ জন, গৃহহীন হয়েছিল ৪৫ হাজার মানুষ। এর ১০ দিনের মাথায় বাজারের এ অগ্নিকান্ড আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।

সর্বশেষ খবর