বুধবার, ৭ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দায় এড়াতে চায় সবাই

মোশাররফ হোসেন বেলাল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হরতালে তান্ডবের দায় এড়াতে চাচ্ছে সবাই। পুলিশ-প্রশাসন, হেফাজতে ইসলাম ও জেলা আওয়ামী লীগ, বিএনপি সবাই তান্ডব নিয়ে গা-ছাড়া ভাব দেখাচ্ছে। তবে কারা ঘটনা ঘটিয়েছে? কীভাবে এতগুলো তরতাজা প্রাণ চলে গেল? এত ধ্বংসযজ্ঞ হলো কীভাবে? তার কোনো সদুত্তর মিলছে না। এসব ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৫ জন নিহত হয়েছেন বলে হেফাজতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। আর অর্ধশত সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তি ধ্বংস হয়েছে। আহত হয়েছেন শতাধিক পুলিশসহ কয়েক শ লোক।

তান্ডব নিয়ন্ত্রণে অন্তত কয়েক হাজার রাউন্ড গুলিবর্ষণ করেছে পুলিশ। প্রশাসনের নীরবতার ব্যাখ্যায় পুলিশ ও প্রশাসন বলেছে, জানমালের ক্ষতি কমাতে চেষ্টা করা হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগ দাবি করছে, বিএনপি, জামায়াত ও হেফাজত এ তান্ডব চালায়। আর বিএনপির দাবি, তান্ডবের সঙ্গে বিএনপি জড়িত নয়। ভিডিও ফুটেজ ও স্থিরচিত্র দেখে প্রকৃত দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি দলটির। এদিকে হেফাজতের কোনো নেতা-কর্মী তান্ডব চালাননি বলে দাবি করেছেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও জেলা সভাপতি মাওলানা সাজিদুর রহমান। ক্ষতিগ্রস্ত ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবে প্রতিনিধি দল নিয়ে পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ দাবি করেন। তান্ডবের ঘটনায় দুঃখ পেয়েছেন উল্লেখ করে মাওলানা সাজিদুর রহমান বলেন, ‘২৮ মার্চ হেফাজতে ইসলামের হরতালের দিন হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মতো ন্যক্কারজনক ঘটনা কে বা কারা ঘটিয়েছে তা আমাদের জানা নেই। আমরা এ ঘটনার নয় দিন পর আনুষ্ঠানিকভাবে নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’ তিনি বলেন, ‘আপনাদের কাছে এসেছি সমবেদনা জানানোর জন্য। দুঃখ প্রকাশ করার জন্য। আমরা নিন্দা জানাই। আহত ও নিহতের পরিবারকে সমবেদনা জানাতে গিয়ে আমাদের আসতে দেরি হয়েছে। আপনাদের কাছে অনুরোধ, হত্যাকান্ডের জন্য প্রতিবাদ জানাবেন। যারা সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করে তারা কোনো দিন হেফাজতের নেতা-কর্মী হতে পারে না, তারা কোনো দিন আমার হতে পারে না, আপনাদেরও হতে পারে না। ঘটনার পেছনে উসকানিদাতাদের চিহ্নিত করা দরকার, যারা ভাঙচুর করেছে তাদের চিহ্নিত করা দরকার।’ তিনি বলেন, ‘আমরা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে হরতালের আগের দিন শান্তিপূর্ণ মিছিল করেছি। হরতালের দিনও শান্তিপূর্ণ মিছিল করেছি। আমরা হরতালের দিন মাদরাসাছাত্রদের নিয়ে মাদরাসার সামনে অবস্থান নিয়েছিলাম। তাই কে বা কারা এ ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটিয়েছে যেমন প্রেস ক্লাব, ভূমি অফিস বা অন্যান্য সরকারি স্থাপনা ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করেছে তা আমাদের জানা নেই।’ তিনি ভিডিও ফুটেজ দেখে প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করার দাবি জানান। এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ ও হেফাজতে ইসলাম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সাধারণ সম্পাদক মুফতি মোবারক উল্লাহ, মাওলানা আলী আজম, মুফতি বোরহান উদ্দিন কাসেমী, মুফতি নোমান হাবিবী, মাওলানা বোরহান উদ্দিন আল মতিন, মুফতি মুহাম্মদ এনামুল হাসান, মাওলানা তানভীর আহমেদ প্রমুখ। প্রসঙ্গত, ২৮ মার্চ পর্যন্ত হেফাজতের হরতাল চলাকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সরকারি-বেসরকারি বেশ কয়েকটি স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবও ভাঙচুর করা হয়। হামলায় ক্লাব সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন জামি হামলায় আহত হন।

সর্বশেষ খবর