বৃহস্পতিবার, ৮ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

সোনারগাঁয়ে হামলায় মামুনুলসহ ৭০০ আসামি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তাণ্ডবে ৪৫ মামলায় আসামি ৩০ হাজার

নারায়ণগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

সোনারগাঁয়ে হামলায় মামুনুলসহ ৭০০ আসামি

রয়েল রিসোর্টে হেফাজতে ইসলামের যুগ্মমহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করার পরবর্তী ঘটনায় সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের দুই নেতার বাড়ি, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও রয়েল রিসোর্ট ভাঙচুর এবং এক সাংবাদিককে মারধর করায় মামুনুল হকসহ হেফাজতের ৭০০ জনকে            আসামি করে পৃথক তিনটি মামলা হয়েছে। আসামির মধ্যে ১০০ জনের নামোল্লেখ করা হয়। নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম পিপিএম জানান, গতকাল সোনারগাঁ থানায় দুই পুলিশ কর্মকর্তা বাদী হয়ে দুটি ও হেফাজত নেতা-কর্মীদের হামলায় আহত সাংবাদিক হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। সাংবাদিক নির্যাতনের মামলায় মোস্তফা নামে এক আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সোনারগাঁ থানার ওসি মো. হাফিজুর রহমান জানান, সিসিটিভির ফুটেজ দেখে আসামি শনাক্ত করে নাম-ঠিকানা অন্তর্ভুক্ত করা হবে। জানা যায়, মামুনুল হক তার কথিত দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে ৩ এপ্রিল সোনারগাঁয়ে বেড়াতে এসে রয়েল রিসোর্টে ওঠেন। সেখানে ‘পরনারী আনা হয়েছে’ অভিযোগে স্থানীয় কিছু লোক মামুনুলকে আটকে রাখেন। এ ঘটনাটি ফেসবুকে লাইভ প্রচারিত হলে সন্ধ্যায় হেফাজতের কয়েক শ কর্মী-সমর্থক রয়েল রিসোর্টে হামলা ও ভাঙচুর করে মামুনুল হককে পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেন। রাতে মোগরাপাড়া চৌরাস্তা জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা মহিউদ্দিন খান ও মাওলানা ইকবালের নেতৃত্বে বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মী ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নেমে আতৃণ। মামুনুল হককে হেনস্তা করার প্রতিবাদে তারা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। তাদের ইট-পাটকেল নিক্ষেপে পথচারী, সংবাদকর্মীসহ ১৫ জন আহত হন। সড়কে টায়ার ফেলে তাতে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করেন। ভাঙচুর চালানো হয় যুবলীগ নেতা রফিকুল ইসলাম নান্নুর রেস্তোরাঁ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়সহ আরও কয়েকটি দোকান। গতকাল দুপুরে পুলিশের কাজে বাধা, হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় সোনারগাঁ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইয়াউর রহমান বাদী হয়ে মামুনুল হককে প্রধান আসামি করে ৪১ জনের নামোল্লেখ করে একটি এবং সন্ত্রাসবিরোধী আইনে আরিফ হাওলাদার বাদী হয়ে মামুনুল হকসহ ৪২ জনের নামোল্লেখ করে আরও একটি মামলা করেন। এ ছাড়া ৫ শতাধিক অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। এদিকে ৩ এপ্রিল মাওলানা মামুনুল হককে অবরুদ্ধের তথ্য সংগ্রহ করতে যাওয়া স্থানীয় সাংবাদিক হাবিবুর রহমান মামুনুল হকের দাড়ি ধরে টান দিয়েছেন অভিযোগ তুলে সনমান্দি ইউনিয়নের ভাটিরচর গ্রামে তার ওপর হামলা ও বাড়িঘর ভাঙচুরের ঘটনায় মামুনুল হককে প্রধান আসামি ও ১৭ জনের নামোল্লেখসহ ৭০-৮০ জনের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা করেছেন ওই সাংবাদিক।

৪৫ মামলায় ৩০ হাজার আসামি, গ্রেফতার ৩২ : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তান্ডবের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৪৫টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামি করা হয়েছে ৩০ হাজারেরও বেশি লোককে। এর মধ্যে শুধুমাত্র সদর মডেল থানাতেই ৪০টি মামলা দায়ের হয়। এছাড়া আশুগঞ্জ থানায় ২টি, সরাইল থানায় ২টি ও আখাউড়া রেলওয়ে থানায় ১টি মামলা দায়ের করা হয়। সদর থানায় ৪টি মামলা দায়ের করা হয়। ৪৫ মামলায় মাত্র ৩২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে হরতালের দিন বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙচুরকারী আরমান আলিফ (২২)। গত ৪ মে রাতে সদর উপজেলার বিশ্বরোড এলাকা থেকে র‌্যাব-১৪ এর একটি দল তাকে গ্রেফতার করে। পরে র‌্যাব সদস্যরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার কাজীপাড়ায় আরমান আলিফের ভাড়া বাসায় তল্লাশি চালিয়ে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙার কাজে ব্যবহৃত একটি শাবল, একটি বিদেশি পিস্তল, ২টি ম্যাগাজিন এবং ৪ রাউন্ড গুলি উদ্ধার  করে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর