প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলার প্রধান আসামি জঙ্গিনেতা মুফতি হান্নানের খালাতো ভাই মুন্সি মাহফুজ হাসানাত কামরুলকে সভাপতি করে কোটালীপাড়া উপজেলা কৃষক লীগের কমিটি গঠনের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে অনতিবিলম্বে এ কমিটি বাতিল করা না হলে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
গতকাল সকালে কোটালীপাড়া উপজেলা কৃষক লীগের একাংশের নেতা-কর্মীরা এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। এতে কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা কৃষক লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক অরুণ মল্লিক। সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে তিনি বলেন, গত বছর কোটালীপাড়ার ১১ ইউনিয়ন ও এক পৌরসভা কৃষক লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা কৃষক লীগের সম্মেলনের লক্ষ্যে একাধিক প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়। মুন্সি মাহফুজ হাসানাত কামরুল উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সদস্য নন। এমনকি সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটিসহ কোনো কমিটিতেও তিনি ছিলেন না। তিনি অরাজনৈতিক ব্যক্তি। কামরুলের আপন খালাতো ভাই জঙ্গিনেতা মুফতি আবদুল হান্নান মুন্সি। তার আপন বড় ভাই মুন্সি সরাফত হোসেন কোটালীপাড়া উপজেলা বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য। অরুণ মল্লিক বলেন, ‘কোনো সম্মেলন না করে অর্থের বিনিময়ে রাতের আঁধারে উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখ বিতর্কিত কামরুলকে সভাপতি করে ৪ এপ্রিল কোটালীপাড়া উপজেলা কৃষক লীগের ‘পকেট কমিটি’ গঠন করেন। এতে কৃষক লীগ নেতা-কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম হুমায়ুন কবির, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান হাজরা, মহিলা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী রাফেজা বেগম, ইউপি চেয়ারম্যান হান্নান শেখ, আওয়ামী লীগ নেতা সুমন হোসেন বাচ্চু, কামাল হোসেন, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক বাবলু হাজরা, যুবলীগ নেতা মাসুদ রানা, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বাবুল হাজরা, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মেহেদী হাসান মুন, কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি স্বপন তালুকদারসহ আওয়ামী লীগ, কৃষক লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখ বলেন, ‘১১ ইউনিয়ন ও পৌর কৃষক লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও আহ্বায়ক কমিটির সদস্যরা বর্ধিত সভা করেন। পরে তারা উপজেলা কৃষক লীগের নতুন কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত জেলা কৃষক লীগকে পাঠান। জেলা কৃষক লীগ ওই কমিটি অনুমোদন করেছে। এখানে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।’ গোপালগঞ্জ জেলা কৃষক লীগ সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বিশ্বাস কোটালীপাড়া উপজেলা কৃষক লীগের নতুন কমিটি গঠনের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘এখানে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ সত্য নয়।’ উপজেলা কৃষক লীগের নবনির্বাচিত সভাপতি মুন্সি মাহফুজ হাসনাত কামরুল বলেন, ‘আমার বাবা মুন্সি আবুল কাসেম আওয়ামী লীগ নেতা ও বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন। আমার ভাই মুন্সি এবাদুল ইসলাম উপজেলা কৃষক লীগের আহ্বায়ক ছিলেন। আমার বড় ভাই মুন্সি সরাফত হোসেন কোনো দিনই বিএনপি করেননি। জঙ্গিনেতা হান্নান মুন্সি (মুফতি হান্নান) আমার খালাতো ভাই। তারা স্বাধীনতাবিরোধী তাই তাদের সঙ্গে আমাদের ৫০ বছর ধরে কোনো সম্পর্ক নেই। আমি ঢাকায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলাম।’