শুক্রবার, ৯ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক

ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ শুরু

করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া শুরু হয়েছে গতকাল -বাংলাদেশ প্রতিদিন

সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে দেশে করোনাভাইরাস টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া শুরু হয়েছে। গতকাল একযোগে সারা দেশে দ্বিতীয় ডোজের টিকা দেওয়া শুরু হয়। পাশাপাশি নিবন্ধিতদের প্রথম ডোজের টিকাও দেওয়া হবে। ৭ ফেব্রুয়ারি গণটিকাদান শুরুর পর এ পর্যন্ত ৫৫ লাখ ৬৮ হাজার ৭০৩ জন টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন। তাদেরই এখন দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া শুরু হলো।

গতকাল শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে টিকা নেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। এ সময় তার সহধর্মিণী সামিনা খালেকও টিকা নেন। টিকা নেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক। জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে দ্বিতীয় ডোজ টিকা নেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে দ্বিতীয় ডোজের টিকা নেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সুলতানা কামালসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদাও এখানে করোনাভাইরাসের টিকা নেন।

জানা গেছে, দ্বিতীয় ডোজ টিকার জন্য এসএমএস পাঠানো শুরু হয়েছে সোমবারই। এসএমএসে দেওয়া তারিখ অনুযায়ী আগের টিকাদান কেন্দ্র থেকে দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিতে হবে। বাংলাদেশে দেওয়া হচ্ছে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কভিশিল্ড। এ টিকার দুটি ডোজ নিতে হয়। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে সকাল থেকেই টিকা নিতে আগ্রহী মানুষের ভিড় দেখা গেছে। এখানে স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশাপাশি বয়স্কদের অনেকেও টিকা নিতে এসেছেন। তবে বয়স্করা অগ্রাধিকার পাচ্ছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড়ও কিছুটা বেড়েছে টিকা নিতে আগ্রহীদের। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রে দ্বিতীয় ডোজ নিতে আসা মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। জুনাইদ আহমেদ পলক সাংবাদিকদের বলেন, ‘আইসিটি বিভাগ ‘ভ্যাকসিন পাসপোর্ট দেওয়ার চিন্তা করছে। আমরা দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার পর আমাদের ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট অটোমেটিক জেনারেট হবে। একটা ভ্যাকসিন পাসপোর্ট দেওয়ার ব্যাপারেও প্রযুক্তিগত প্রস্তুতি আমরা নিয়েছি। বিদেশ যেতে যাদের কভিডমুক্ত সনদ প্রয়োজন, তাদের এটা কাজে লাগবে।’ জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান-নিটোরেও সকাল থেকে টিকাদান শুরু হয়েছে। তবে এখানে ভিড় তুলনামূলক কম লক্ষ্য করা গেছে। এ হাসপাতালে টিকা নিতে আসা মানুষের মধ্যে বেশির ভাগই চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী বলে জানা গেছে। টিকা নেওয়ার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শারফুদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘টিকা নেওয়ায় বাংলাদেশ পৃথিবীর অনেক দেশ থেকে এগিয়ে আছে। এখনো ১৩৯টি দেশ করোনাভাইরাসের টিকা পায়নি। আমরা অলরেডি ৬ কোটি ডোজ টিকার আশ্বাস পেয়েছি। সে হিসাবে আমি মনে করি আমরা পিছিয়ে থাকব না।’ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এমএনসিঅ্যান্ডএএইচ অপারেশনাল প্ল্যানের লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. শামসুল হক গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, যারা টিকা নেবেন তাদের কাছে এসএমএস যাওয়া শুরু হয়েছে। ৭ ও ৮ ফেব্রুয়ারির পাশাপাশি এর আগে ২৬ ও ২৭ জানুয়ারি যারা পরীক্ষামূলক টিকা নিয়েছিলেন তাদেরও অনেকে দ্বিতীয় ডোজ নেবেন। কেউ কোনো কারণে এসএমএস না পেলে কেন্দ্রে গিয়ে টিকা দিতে পারবেন। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত এ টিকার দুটি ডোজ দুই মাসের ব্যবধানে দেওয়া হচ্ছে বাংলাদেশে। শামসুল হক বলেন, ‘প্রথম ডোজের জন্য যারা নিবন্ধন করেছেন তাদের অনেকে বিভিন্ন কারণে টিকা নিতে পারেননি। তারা যদি আসেন আমরা তাদের টিকা দিয়ে দেব। আর প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ হবে কি না এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো নির্দেশনা আসেনি। নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত প্রথম ডোজ টিকাও দেওয়া হবে।’ কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের একজন নার্সকে করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়ার মধ্য দিয়ে ২৭ জানুয়ারি বাংলাদেশে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। টিকা নেওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন ৬৯ লাখ ৭৫ হাজার ৯৩৯ জন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর