রবিবার, ১১ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

তামজিদকে অপহরণে ফাঁদ ছিল রানু

র‌্যাব সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

র‌্যাব সদস্যদের দ্বারা অপহরণের শিকার হওয়া তামজিদ হোসেন গতকাল আদালতে তার জবানবন্দি দিয়েছেন। রানুকে দিয়ে ফাঁদ পেতে রাজধানীর উত্তরার একটি রেস্টুরেন্ট থেকে তামজিদকে অপহরণ করা হয়েছিল। আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে তামজিদ বলেছেন, রানু বেগমের সঙ্গে জমির মিডিয়াকে কেন্দ্র করে গত বছর তার পরিচয় হয়। এরপর তার সঙ্গে তিনবার দেখা হয় গার্মেন্টসের স্টক লট বিষয়ে আলোচনার জন্য। ঘটনার সাত-আট দিন আগে রানু বেগমের সঙ্গে ২৫ লাখ টাকার গার্মেন্টস মালামাল কেনার বিষয়ে তামজিদের কথা হয়।

আদালত সূত্র জানায়, ৭ এপ্রিল রানু বেগম ফোন করে পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে উত্তরার রাজলক্ষ্মী মার্কেটের সামনে তামজিদকে থাকতে বলেন।

জবানবন্দিতে তামজিদ বলেছেন, সকাল আনুমানিক ১০টার দিকে তিনি রাজলক্ষ্মী মার্কেটের সামনে গেলে রানু বেগম তাকে ডাক দেন। রাকিব নামে অপরিচিত এক ব্যক্তি রানুর সঙ্গে আসেন। এর কিছুক্ষণ পর ইকবাল তার সঙ্গে দেখা করার জন্য সেখানে যান। তখন রাজলক্ষ্মী মার্কেটের পেছনে নিউ ভিআইপি নামে একটি হোটেলে বসে কথা বলার প্রস্তাব দেন রাকিব। সবাই সেই রেস্টুরেন্টে যান। ইকবালকে পাশের টেবিলে বসিয়ে তামজিদ বসেন রানু আর রাকিবের সঙ্গে।

আদালত সূত্র জানিয়েছে, রানু বেগম রেস্টুরেন্টে তামজিদকে জিজ্ঞেস করেন যে মালামাল বৃহস্পতিবারই নেবেন কি না। টাকা রেডি আছে কি না তাও জানতে চান। তখন তামজিদ হ্যাঁ বলেন। তামজিদ বলেন, মাল ডেলিভারি দিলেই টাকা পেয়ে যাবেন। এ কথা বলার পরপরই র‌্যাবের পোশাক পরা ছয়-সাতজন লোক হাতে হ্যান্ডকাফ ও ওয়াকিটকি নিয়ে সেখানে আসেন।

আদালতে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তামজিদ বলেছেন, ‘গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে আমাদের হ্যান্ডকাফ লাগায় এবং চোখ বাঁধে। আমাদের চড়থাপ্পড়ও মারে। এক-দেড় ঘণ্টা গাড়ি চালিয়ে আমাদের এক জায়গায় নিয়ে যায়। পাঁচ-সাত মিনিট পর একজন আমাকে বলে, তোর নামে অস্ত্র, ইয়াবা এবং বিভিন্ন প্রতারণার মামলা দিব। তুই তোর বাবার কাছে টাকা চাবি। আমি বলি, কত টাকা। সে বলে ২ কোটি টাকা।’

তামজিদ বলেছেন, ‘পরে ওরা আমার মোবাইল দিয়ে আমার আব্বার নম্বরে ফোন দেয়। আমার বাবা আমাকে জিজ্ঞেস করেন, তুই ঠিক আছিস কি না। আমি বলি, ঠিক আছি।

আমি আরও বলি, একটা ঝামেলায় পড়েছি। ওরা ২ কোটি টাকা দাবি করে। এরপর অপহরণকারীরা মোবাইল নিয়ে যায়। আমাকে মারধর করে। পরে জানতে পারি আমার বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন এবং আমার বোনের সঙ্গে তাদের কথা হয়েছে। ১২ লাখ টাকা নিয়ে আমার বোনকে যমুনা ফিউচার পার্কে আসতে বলে তারা। এরপর রানু বেগমের মোবাইল ফোনে কল আসে।

 আমার কানে ফোন দিলে দুলাল নামে একজন বলে, তোর (তামজিদ) বোন সিনক্রিয়েট করে আমাদের দুজনকে অপহরণ করেছে। এরপর ৩০০ ফিট থেকে আমাকে নিয়ে উত্তরা চলে যায়। সেখানে গিয়ে ড্রাইভার, রানু বেগম, আমি ও ইকবাল ছাড়া সবাই নেমে যায়। আমি চোখের বাঁধন খুলে ফেলি। তখন একটি ছেলে এসে র‌্যাবের সরঞ্জামাদি নিয়ে যায়। এরপর আমাকে নিয়ে হাতির ঝিল গেলে পুলিশ ঘেরাও করে আমাকে উদ্ধার করে।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর