মঙ্গলবার, ২০ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

প্রধানমন্ত্রীকে ডা. জাফরুল্লাহর খোলা চিঠি

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের কী করণীয় হওয়া উচিত সে বিষয়ে ১১টি প্রস্তাবনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর চিঠি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছে দেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের গণমাধ্যম উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু। গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করে জাহাঙ্গীর হোসেন মিন্টু বলেন, চিঠিতে করোনা আক্রান্ত রোগীদের সাশ্রয়ী চিকিৎসার জন্য অক্সিজেন, ওষুধ, মেডিকেল যন্ত্রপাতি ও সামগ্রী থেকে বিশেষ স্টেচুটরি রেগুলেটরি অর্ডারের (এসআরও) মাধ্যমে সব ধরনের শুল্ক, অগ্রিম আয়কর, মূসক প্রত্যাহার করাসহ ১১টি প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়েছে। ১১ প্রস্তাবনা হলো-

১. অক্সিজেন, ওষুধ, মেডিকেল যন্ত্রপাতি ও সামগ্রী থেকে বিশেষ এসআরওর মাধ্যমে সব ধরনের শুল্ক, অগ্রিম আয়কর, মূসক প্রভৃতি প্রত্যাহার করা; ২. আইসিইউ পরিচালনার জন্য জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসক ও নার্স প্যারামেডিকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা; ৩. ২০০ চিকিৎসক ও ৫০০ জন নার্স টেকনিশিয়ানকে আইসিইউতে দ্রুত অক্সিজেন প্রদান, নন-ইনভেসিভ শ্বাস-প্রশ্বাস প্রক্রিয়া, শ্বাসতন্ত্রে টিউব মারফত অক্সিজেন সরবরাহ, অন্যান্য নিয়ন্ত্রিত শ্বাস-প্রশ্বাস ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়া এবং শ্বাসনালি ট্যাকিয়া ছিদ্র করে দ্রুত অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য এক মাসের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা; ৪. সব ওষুধের মূল্য এবং রোগ পরীক্ষার পদ্ধতির চার্জ সরকার কর্তৃক নির্ধারণ করে দে?ওয়া; ৫. কারাগারে আবদ্ধ সব ব্যক্তিকে দ্রুত টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া এবং খুনের দায় ও দুর্নীতির কারণে দন্ডিত অভিযুক্ত ছাড়া অন্য সবাইকে জামিনে মুক্তি দেওয়া; ৬. সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে প্রতিবছর ২০ হাজার ছাত্র ভর্তি করা এবং এমবিবিএস পাসের পর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে এক বছর বাধ্যতামূলক ইন্টার্নশিপ করানো; ৭. আগামী বাজেটে সব ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের নিরাপত্তা-বেষ্টনী সংস্কার, গভীর নলকূপ ও বিদ্যুতায়ন ব্যবস্থার উন্নয়ন, মেডিকেল, নার্সিং, ফিজিওথেরাপি ও টেকনিশিয়ানদের জন্য ডরমেটরি, ক্লাসরুম, লাইব্রেরি, ডাইনিং রুম এবং পাঁচজন চিকিৎসক ও ১০ জন নার্সিং, ফিজিওথেরাপি ও টেকনিশিয়ান প্রধানদের জন্য ৬০০-৭০০ বর্গফুটের বাসস্থান, বহির্বিভাগসহ ৩০ শয্যার হাসপাতাল, ল্যাবরেটরি ও অপারেশন থিয়েটার নির্মাণের জন্য ৬ কোটি টাকা এবং অপারেশন থিয়েটার, এক্সরে, আলট্রাসনোলজি, চক্ষু ও বিভিন্ন ল্যাবরেটরির যন্ত্রপাতির জন্য অন্যূন ৪ কোটি টাকা বরাদ্দের ব্যবস্থা; ৮. লকডাউন কার্যকরে দরিদ্র ও নিম্নবিত্ত পরিবারকে সরাসরি আর্থিক প্রণোদনার পরিবর্তে বিনামূল্যে মাসিক রেশন চালু করে চাল, ডাল, আটা, আলু, তেল, চিনি, পিঁয়াজ, রসুন প্রভৃতি দেওয়া। রেশন বিতরণের জন্য সামরিক বাহিনী, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং এনজিওকর্মীদের কাজে লাগানো; ৯. ট্রিপসের বাধ্যতামূলক লাইসেন্সের মাধ্যমে ভ্যাকসিন উৎপাদন সুবিধা সৃষ্টির জন্য নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত করে ইউরোপে পাঠানো; ১০. ভ্যাকসিন উৎপাদনের জন্য ০.৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা; ১১. গত বছর দ্রুত সিনোভ্যাকের ট্রায়াল অনুমোদন না দিয়ে যে ভুল করা হয়েছিল, তার পুনরাবৃত্তি না করা। এ ছাড়া চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘গণস্বাস্থ্য উদ্ভাবিত অ্যান্টিবডি অ্যান্টিজেনের অনুমোদন এক বছরেও হয়নি। ড. বিজন কুমার শীলের ভিসা না হওয়ায় বাংলাদেশে ফিরতে পারছেন না। ছয় মাস আগে চার বিজ্ঞানীর তত্ত¡াবধানে রিয়েল টাইম পিসিআর ল্যাবরেটরি স্থাপিত হলেও ব্যবহার শুরু করার জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতর আজ পর্যন্ত অনুমতি দেয়নি। ক্ষতি হচ্ছে দেশের। বিষয়টি আপনাকে পুনরায় অবগত করলাম।’ চিঠিতে ‘দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণে জাতির কঠিন সমস্যা থেকে মুক্তির সম্ভাবনা অনেক বেশি’ বলে উল্লেখ করেন ডা. জাফরুল্লাহ। সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর