বৃহস্পতিবার, ২২ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

জীবনের প্রয়োজনে জীবিকা নিশ্চিত করতে হবে

এ কে আজাদ

জীবনের প্রয়োজনে জীবিকা নিশ্চিত করতে হবে

মহামারী করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে জীবনের প্রয়োজনে জীবিকা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সবকিছুর সমন্বয় করতে হবে বলে মনে করেন ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ। তিনি বলেছেন, সবার আগে পণ্য উৎপাদন, বিক্রয় ও ক্রয় এবং সেবাগুলো সচল রাখতে হবে। এ লক্ষ্যে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে সরকার ও ব্যবসায়ীদের যৌথ মনিটরিং সেল গঠন করতে হবে। তার    মতে, সরকারকে সতর্কতার সঙ্গে জীবনের পাশাপাশি জীবিকা টিকিয়ে রাখতে হবে। এটা না করতে পারলে দেশে দারিদ্র্য বাড়বে। তা সামাল দিতে আবার সরকারকেই হিমশিম খেতে হবে। এ জন্য সরকারকে আরও বড় ধরনের ভূমিকা নিতে হবে। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছেন। কিন্তু ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা বা এসএমইরা ঋণ শিগগিরই পাচ্ছেন না।

গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ। দেশের খ্যাতনামা এই শিল্পোদ্যোক্তা বলেন, দেশে চিকিৎসাব্যবস্থা অপ্রতুল। হাসপাতালে জায়গা নেই। এখন প্রয়োজন প্রচুর অ্যাম্বুলেন্স। মানুষের কর্মস্থল ও বাড়ি বাড়ি গিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। সবাইকে স্বাস্থ্যসেবা দিতে হবে।

তিনি বলেন, লকডাউনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র আয়ের মানুষ। রিকশাচালক, ঠেলাগাড়ি আর ভ্যানচালকদের মতো নিত্য আয়ের মানুষ খুব কষ্টে আছেন। দিনমজুরদের আয় নেই। তাদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর সাহসী ও দৃঢ় পদক্ষেপ দেশের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে গতিশীলতা ফিরিয়ে এনেছে। যদিও কিছু খাত এখনো সম্পূর্ণ সচল হয়ে ওঠেনি। তবু আশার কথা, সরকারপ্রধান এ ব্যাপারে তীক্ষè দৃষ্টি রাখছেন এবং সময়ানুযায়ী প্রয়োজনীয় সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধা করছেন না।

এ কে আজাদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজ ব্যবসা-বাণিজ্য স্বাভাবিক করতে দেওয়া হয়েছিল এবং এটা সফল হয়েছে। বড় ব্যবসায়ীদের খুব একটা সমস্যা নেই। তারা কম-বেশি ভালো আছেন। কিন্তু ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ-এসএমই খাত কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। তবে প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। ছোট ব্যবসায়ীদের পাশে ব্যাংকগুলো নেই। এ ক্ষেত্রে সরকারি ব্যাংকগুলো ভূমিকা রাখেনি।

এই শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতার মতে, দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে ঊর্ধ্বগতি দেখা যাচ্ছে। অনেক খাতে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়িক কর্মকান্ড প্রায় সচল। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আছে। রপ্তানিও স্বাভাবিক হয়েছে।

শিল্পমালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রির (বিসিআই) সাবেক এই সভাপতি বলেন, এবার রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হবে। তবে গত বছর এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত অনেক বাতিল হওয়া অর্ডার আবার ফিরে আসছে। এখন অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। এর পরও ২০ থেকে ৩০ ভাগ কারখানায় কোনো অর্ডার নেই।

পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়েছে। বড় কারখানাগুলো এ সুযোগ পেয়েছে। ছোট ও মাঝারি কারখানা এ সুযোগ পায়নি। এফবিসিসিআইর সাবেক এই সভাপতি বলেন, সরকারি প্রণোদনার টাকা ব্যাংকগুলো তাদেরই দিয়েছে, যাদের ফেরত দেওয়ার সামর্থ্য আছে। ফেরত দেওয়ার সক্ষমতা যাদের ছিল, তাদেরই ব্যাংক টাকা দিয়েছে। যাদের সন্দেহ হয়েছে, তাদের টাকা দেয়নি ব্যাংকগুলো। এখানে সরকারকে ভালো ভূমিকা নিতে হবে।

সর্বশেষ খবর