শিরোনাম
বৃহস্পতিবার, ২২ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

গুজব ছড়ালেই কঠোর ব্যবস্থা

বিভিন্ন পেজ খুলে মামুনুলের মুক্তি দাবিতে ভুয়া মিছিল সমাবেশের খবর প্রকাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

হেফাজতের যুগ্মমহাসচিব মামুনুল হকের ওপর নির্যাতনের কল্পিত তথ্য প্রচার করছে একটি মহল। ফেসবুকে পেজ খুলে নানা কিসিমের গুজব ছড়ানো হচ্ছে জনরোষ তৈরির মতলবে। যেমন ‘মামুনুলের মুক্তি দাবিতে দেশের নানা স্থানে মিছিল-সমাবেশ হচ্ছে।’ এসব বিষয়ে কড়া নজরদারি করছে গোয়েন্দা পুলিশ। তারা বলছে, গুজব ছড়ানোয় লিপ্তদের শনাক্তের কাজ এগিয়ে চলছে। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গুজবে বলা হচ্ছে, ইফতারের সময় মামুনুল হককে পানির বদলে প্রস্রাব দেওয়া হয়েছে। তার হাতে থাকা তসবি ও পবিত্র কোরআন টয়লেটে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে। সাধারণ মানুষ কেউ কেউ এসব বিষয়ের সত্যতা যাচাই না করেই নানা আলোচনায় অংশ নিচ্ছে। কেউ কেউ বুঝে না বুঝেই সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা মন্তব্যও করে ফেলছে। খুবই স্পর্শকাতর এ বিষয়টি নিয়ে আরও সতর্ক হওয়া দরকার। বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন এমন তদন্তসংশ্লিষ্টরা বলছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এসব বিষয় পুরোপুরি ভিত্তিহীন। তারা বলছেন, এ ধরনের খবরের কোনো সত্যতা নেই। দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির পাঁয়তারা চালাচ্ছে একটি মহল। একই সঙ্গে যাচাই ছাড়া এসব গুজব শেয়ার না করার অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমরা সোশ্যাল মিডিয়ার ওপর কঠোর নজরদারি অব্যাহত রেখেছি। যারা গুজব ছড়িয়ে দেশকে অশান্ত করতে চায় কিংবা নেপথ্য থেকে মদদ দিচ্ছে তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। ইতিমধ্যে আমরা কয়েকজনকে শনাক্ত করতে পেরেছি। মামলার প্রস্তুতি চলছে।’

যেসব গুজব : ‘আমি চির বিদ্রোহী’ নামে একটি পেজ থেকে বলা হয়েছে, আল্লামা মামুনুল হকের হাত থেকে পবিত্র কোরআন ও তসবি টয়লেটে ফেলে দিয়েছে গোপালী পুলিশ লীগ। ইয়া আল্লাহ ভারতের দালাল মোনাফেকদের জুলুম-নির্যাতন থেকে বাংলাদেশের আলেম-ওলামাদের রক্ষা কর। এর বাইরেও এস এ আজাদ নামে এক ব্যক্তি ‘আল্লামা মামুনুল হক সমর্থক’ পেজে একটি ভিডিওবার্তা শেয়ার করেছেন, আতাউর রহমান খান, মাসুদ হাসান, তানিম ইউ এন এম, শিল্লী নুরুল্লাহ আহমেদ, সুমাইয়া আক্তার নামের আইডি থেকে শেয়ার করেছে গুজব লেখাটি, এমডি হিজবুল্লাহ, মাসুম বিল্লাহ, ডাকসু ভিপি নুরুল হক সমর্থক পরিবার, শায়খুল হাদিস আল্লামা মামুনুল হক, মুহাম্মাদ মামুনুল হক, আল্লামা মামুনুল হক সমর্থক গোষ্ঠী, আমরা শিবির সৈনিক নামের পেজে ছড়ানো হয়েছে একটি তৈরি করা ভিডিও।

‘আমরা শিবির সৈনিক’ নামের একটি পেজ থেকে লেখা হয়েছে জামায়াত-শিবিরের ওপর নির্যাতনের পাশাপাশি আল্লামা মামুনুল হকের ওপর যেসব নির্যাতন হচ্ছে :

গতকাল হুজুরের ওপর যা অত্যাচার হয়েছে রিমান্ডে, সূত্র : সেখানকার একজন অফিসার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বার্তাটি গোপনে দিয়েছেন। গতকাল রাতে রিমান্ডের প্রথম দিন যা ঘটেছে আমাদের প্রাণের শায়েখ, সবার চোখের মণি আল্লামা মামুনুল হক হাফি সাহেবের সঙ্গে। সত্যি আমি শুনতে পাচ্ছি না এগুলো। কান্নাজড়িত কণ্ঠে লিখতে হয়েছে, মাওলা তুমি রহম কর। তোমার কুদরতি হাত দ্বারা হেফাজত কর তোমার কোরআনের পাখিটাকে। গতকাল রাতে ইফতারির সময় হুজুরকে ইফতার খোলার জন্য পানির পরিবর্তে প্রস্রাব দেওয়া হয়েছে। হযরত হাতে তসবি নিয়েছিলেন সেই তসবিটাকে টয়লেটে ফেলে দেওয়া হয়। কোরআন শরিফ যেটা হুজুরের কাছে ছিল সে আল্লাহর কোরআন পর্যন্ত টয়লেটে ফেলে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, হুজুরকে উলঙ্গ করে হুজুরের পুরুষাঙ্গের ওপর টর্চার করেছে এ কুকুরের দলেরা। মাসুম বিল্লাহ নামের একজন ১৯ এপ্রিল রাত ৯টা ১২ মিনিটে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘আল্লামা মামুনুল হককে হিন্দু দিয়ে নির্মমভাবে অত্যাচার করা হয়। হিন্দু পুলিশ দেবাশিস রায় আল্লামা মামুনুল হককে মারতে মারতে মাটিয়ে শুয়ায়ে দিয়েছে। আল্লামা মামুনুল হকের হাত থেকে কোরআন শরীফ টয়লেটে ফেলে দিয়েছে। আল্লামা মামুনুল হককে রিমান্ডে মারধর করেছে। মামুনুল হককে মারে রক্তাক্ত করে দিয়েছে। নাস্তিকের বাচ্চারা আল্লামা মামুনুল হককে অনেক টর্চার করে শুনুন।’ তদন্তসংশ্লিষ্ট এক সূত্র বলেছেন, এখন পর্যন্ত জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের যুগ্ম আহ্‌বায়ক শামীম নামের একজন যিনি বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করছেন তার আইডি থেকে এ গুজবটি সর্বপ্রথম ছড়ানো হয়েছে। তার আইপিও এখন পর্যন্ত লন্ডনে। মো. শামীমের গ্রামের বাড়ি বরগুনায়। পরে এ বার্তাটি অনেকেই শেয়ার দিয়েছেন নিজের মতো করে। তবে একটি মহল সবকিছু উসকে দিচ্ছে নেপথ্যে থেকে।

সর্বশেষ খবর