শনিবার, ১ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

সরকার নির্ধারিত বেতন বঞ্চিত চসিকের ৪২৮ চালক-কর্মচারী

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নিয়মিত দক্ষ শ্রমিকের মজুরি ৬০০ টাকা ও অনিয়মিত অদক্ষ শ্রমিকের মজুরি ৫০০ টাকা নির্ধারণ করে। ২০২০ সালের ১২ অক্টোবর সরকার ‘দৈনিক ভিত্তিক শ্রমিক মজুরির হার পুনঃনির্ধারণ’ শীর্ষক চিঠিতে বেতন কাঠামো চূড়ান্ত করা হয়। অভিযোগ উঠেছে, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) সরকারি এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না করার গড়িমসি করছে। ফলে চসিকের তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির প্রায় ৪২৮ জন চালক-কর্মচারী সরকার নির্ধারিত বেতন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ নিয়ে চালক-শ্রমিকরা গত এক সপ্তাহ ধরে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে। চলছে অসন্তোষ। তবে বিষয়টির নানা প্রেক্ষিত বিবেচনা ও প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে চসিক ছয় সদস্যের একটি আহ্‌বায়ক কমিটি গঠন করে। কমিটি আগামী ৯ মে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা। চসিকে বর্তমানে জনবল আছে ৯ হাজার ২৮৯ জন। এর মধ্যে স্থায়ী ২ হাজার ৯৬২ ও অস্থায়ী ৬ হাজার ৩২৮ জন। চসিক চালক ঐক্য পরিষদের অর্থ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, সরকার নির্ধারিত বেতন মতে চতুর্থ শ্রেণির একজন কর্মচারী দৈনিক ৬০০ টাকা হিসাবে মাসে ১৮ হাজার টাকা বেতন পাওয়ার কথা। কিন্তু এখন দেওয়া হচ্ছে দৈনিক ৩৫৭ টাকা হিসাবে মাসে ১০ হাজার ৭১০ টাকা। নির্ধারিত বেতন থেকে ৭ হাজার ২৯০ টাকা কম দেওয়া হচ্ছে। একইভাবে তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীদের দৈনিক ৭০০ টাকা হিসাবে মাসে ২১ হাজার টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হচ্ছে মাত্র ১৩ হাজার ৮০ টাকা। চসিকের কর্মচারী বুলবুল আহমেদ বলেন, আমার চাকরির বয়স ১৮ বছর। বর্তমানে আমার বেতন মাত্র ১০ হাজার ৬০০ টাকা। অথচ পরিচ্ছন্ন বিভাগের ডোর টু ডোর শ্রমিকদের চাকরির বয়স মাত্র তিন বছর। তাদের বেতন ১৪ হাজার টাকা। একই সমস্যা শিক্ষা বিভাগেও আছে। কিন্তু আমাদের অপরাধটা কী তাও জানি না। আমাদের দাবি হলো সরকার নির্ধারিত বেতন বাস্তবায়ন করা হোক। চসিকের সচিব ও তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি সম্পর্কিত কমিটির আহ্‌বায়ক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, তৃতীয়-চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের বেতনের বিষয়টি নিয়ে একটি সভা হয়েছে। আগামী ৯ মে আরেকটি সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় বিষয়টির একটি চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করা হবে। শ্রমিকদের দাবি ও নিয়োগ, সরকারের প্রজ্ঞাপন এবং চসিকের আর্থিক সক্ষমতার বিষয়গুলো বিবেচনা করে সুপারিশমালা তৈরি করা হবে। জানা যায়, অস্থায়ী কর্মচারীদের ‘দৈনিক ভিত্তিক শ্রমিক মজুরির হার পুনঃনির্ধারণ’ কেবল সিটি করপোরেশন নয়, একই সময়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে, ওয়াসাসহ সরকারি বিভিন্ন সংস্থায় বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেওয়া হয়। এর মধ্যে বংলাদেশ রেলওয়ে গত ১৯ জানুয়ারি ও চট্টগ্রাম ওয়াসা ২১ ডিসেম্বর বাস্তবায়ন করে। কিন্তু চসিক বাস্তবায়ন না করায় কর্মরতদের মধ্যে হতাশা ও চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।

সর্বশেষ খবর