মঙ্গলবার, ৪ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

লকডাউন বাড়ছে ১৬ মে পর্যন্ত

৬ মে থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে গণপরিবহন, শিল্পকারখানায় ছুটি তিন দিনের বেশি নয়, বন্ধ থাকবে আন্তজেলা পরিবহন ট্রেন লঞ্চ

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে চলমান লকডাউনের (বিধিনিষেধ) মেয়াদ আগামী ১৬ মে পর্যন্ত বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে ৬ মে থেকে ঢাকাসহ জেলার মধ্যে চলবে গণপরিবহন। কিন্তু সংক্রমণের ভয়াবহতা ঠেকাতে মানুষের দূরযাতায়াত বন্ধই থাকবে। এ জন্য আন্তজেলা গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। একইভাবে বন্ধ থাকবে ট্রেন ও লঞ্চ। স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা রাখা হয়েছে সব ধরনের শিল্প-কারখানা। বিশেষ করে তৈরি পোশাক কারখানা। এসব কারখানায় ঈদুল ফিতরের ছুটি তিন দিনের বেশি না দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৈঠকের পর সচিবালয়ে এক সংক্ষিপ্ত ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।

এর আগে কভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে ১৪ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে আট দিনের কঠোর লকডাউন শুরু হয়। লকডাউনের মধ্যে পালনের জন্য ১৩টি নির্দেশনা দেওয়া হয় সরকারের পক্ষ থেকে। পরে সাত দিন করে দুই দফা লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হয়। সেই মেয়াদ শেষ হবে ৫ মে বুধবার মধ্যরাতে। নির্দেশনা অনুযায়ী, লকডাউনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান ও শপিং মল সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা রয়েছে। খোলা রয়েছে শিল্প-কারখানা। এ ছাড়া জরুরি সেবা দেওয়া প্রতিষ্ঠান ছাড়া যথারীতি সরকারি-বেসরকারি অফিস, গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। সীমিত পরিসরে ব্যাংকে লেনদেন করা যাচ্ছে সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘গত রবিবার স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সভাপতিত্বে একটা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে সুপারিশ করা হয়। আজকে (গতকাল) সেই বিষয়ে মন্ত্রিসভা সিদ্ধান্ত দিয়েছে- আজকে (গতকাল) থেকে পুলিশ, সিটি করপোরেশন, ম্যাজিস্ট্রেট ও অ্যাডমিনিস্ট্রেশন তারা দেশের প্রতিটি মার্কেট সুপারভাইস করবে। কোনো মার্কেটে এতে হয়তো লোক কন্ট্রোল করা যাবে না কিন্তু মাস্ক ছাড়া যদি বেশি লোকজন ঘোরাফেরা করে প্রয়োজনে সেসব মার্কেট বন্ধ করে দেওয়া হবে। ক্লিয়ারলি এটা বলে দেওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘দোকান মালিক সমিতির সভাপতি ওনারা আমাদের সহযোগিতা করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। ওনারা নিজেরাও এটা সুপারভাইস করবেন। বাইরে প্রচার করতে হচ্ছে যে, কোনো অবস্থায় যদি স্বাস্থ্যবিধির ব্যাপক ভায়োলেশন হয়, তবে প্রয়োজন হলে আমরা ওই মার্কেট বন্ধ করে দেব।’

১৬ মে পর্যন্ত চলবে লকডাউন : মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, গতকাল মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে লকডাউন যেটি আছে সেটি ১৬ মে পর্যন্ত এভাবেই কন্টিনিউ করবে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে। এ সময় সবাইকে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।

গণপরিবহন চলবে ৬ মে থেকে, বন্ধই থাকবে লঞ্চ-ট্রেন : খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ৬ মে থেকে গণপরিবহন জেলার মধ্যে চলাচল করতে পারবে। তবে আন্তজেলা বাস চলাচল করতে পারবে না। ঢাকার বাস ঢাকার মধ্যে চলাচল করবে। প্রতিটি জেলার বাস জেলাতেই চলবে। এ ছাড়া লঞ্চ ও ট্রেন বন্ধ থাকবে। তিনি বলেন, ‘গণপরিবহন মালিকরা আমাদের কথা দিয়েছেন, কোনোভাবেই গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করা হবে না। লঙ্ঘন করা হলে বন্ধ করে দেওয়া হবে। সেই নির্দেশনাও দেওয়া আছে। সেটা আমরা দেখব।’

তিনি বলেন, ঈদুল ফিতর হতে পারে আগামী ১৪ মে। সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঈদ উপলক্ষে অতিরিক্ত কোনো বন্ধ দেওয়া যাবে না। ঈদের ছুটি তিন দিন। এর মধ্যে দুই দিন পড়েছে শুক্র ও শনিবার। শিল্প-কারখানাও এই সময়ের বেশি বন্ধ দিতে পারবে না। সরকারি অফিস যেগুলো যেভাবে চলছে সেভাবেই চলবে বলে মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে তিনি জানান।

শিল্প-কারখানায় ঈদের ছুটি তিন দিনের বেশি নয় : মন্ত্রিসভার বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানিয়ে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, আগামী ঈদুল ফিতরের সময় শিল্প-কারখানায় সরকার নির্ধারিত তিন দিনের বেশি ছুটি দেওয়া যাবে না। সরকারি অফিসও এই তিন দিনই বন্ধ থাকবে। সব ধরনের শিল্প-কারখানাতেও ঈদের ছুটি তিন দিনের বেশি দেওয়া যাবে না। এ ব্যাপারে ইতিমধ্যে কারখানা মালিকদের জানিয়েও দেওয়া হয়েছে। এ সময় স্বাস্থ্যবিধিও কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে।

সর্বশেষ খবর