শুক্রবার, ৭ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

অবশেষে টিকার মেধাস্বত্ব ছাড়তে রাজি আমেরিকা

প্রতিদিন ডেস্ক

অবশেষে টিকার মেধাস্বত্ব ছাড় দিতে রাজি হয়েছে আমেরিকা। ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশনের (ডবিøউটিও) পদক্ষেপের সঙ্গে এ বিষয়ে তারা সম্মতি দিয়েছে। রয়টার্স।

এ বিষয়ে গত বুধবার এক বিবৃতিতে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি ক্যাথেরিন টাই জানিয়েছেন, বর্তমানে বিশ্বে যে অভাবনীয় স্বাস্থ্য সংকট চলছে, তা মোকাবিলার জন্য অভূতপূর্ব পদক্ষেপের প্রয়োজন আছে। সেই পরিস্থিতিতে করোনাভাইরাস টিকার ওপর থেকে মেধাস্বত্বের অধিকার তুলে নেওয়ার পক্ষে আমেরিকা। ক্যাথেরিন বলেন, ‘বাইডেন প্রশাসন দৃঢ়ভাবে মেধাস্বত্বের অধিকার রক্ষায় বিশ্বাস করে। কিন্তু এই (করোনা) মহামারী শেষ করার জন্য বাইডেন প্রশাসন কভিড-১৯ টিকার ওপর সেই ধরনের রক্ষাকবচ তুলে নেওয়ার প্রস্তাবকে সমর্থন করছে।’

ভারত এবং দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম এমন আলোচনা তোলে। দেশ দুটি বলছে, টিকার মেধাস্বত্ব এবং মেধাস্বত্ব উন্মুক্ত করলে ভ্যাকসিনের উৎপাদন বাড়বে। কিন্তু ওষুধ প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোর যুক্তি, এতে প্রত্যাশা অনুযায়ী ফল নাও মিলতে পারে। বিল গেটস যেমন কয়েক দিন আগে বলেছেন, মেধাস্বত্ব উন্মুক্ত করলে উন্নয়নশীল দেশগুলোর বেনামি কোম্পানি যাচ্ছেতাইভাবে টিকা তৈরিতে নামতে পারে। তাতে হিতে বিপরীত হবে।

ভ্যাকসিনের মেধাস্বত্ব উন্মুক্ত করতে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকার পাশাপাশি আরও ৫৮টি দেশের একটি গ্রুপ কয়েক মাস ধরে সোচ্চার। কিন্তু তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যুক্তরাজ্য এবং ইইউ এর বিরোধিতা করছিল। তবে জো বাইডেন এসে বিষয়টি সমর্থন করলেন। নির্বাচনী প্রচারের সময়ই তিনি এ বিষয়ে নিজের সমর্থনের কথা জানান। গত বুধবারও সেটি স্মরণ করিয়ে দেন।

যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্তে সমর্থন জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদরোস আধানোম। তিনি বলেছেন, কভিড অতিমারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত ঐতিহাসিক হয়ে থাকবে। বাকি ধনী দেশগুলোকেও আমেরিকার পথে চলার আবেদন করেছেন তিনি। ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার এই প্রস্তাবে সমর্থন করেছে কেনিয়া, মোজাম্বিক, পাকিস্তান, বলিভিয়া, ভেনেজুয়েলা, মঙ্গোলিয়া, জিম্বাবুয়ে, মিসর, আফ্রিকান গ্রুপ ও এলডিসি গ্রুপ। এর পাশাপাশি মালদ্বীপ, ফিজি, নামিবিয়াসহ বিশ্ববাণিজ্য সংস্থার ৬০টি সদস্য দেশ এই প্রস্তাবে সমর্থন করে।

এর আগে ৩০ এপ্রিল বিশ্ববাণিজ্য সংস্থায় ট্রেড রিলেটেড আসপেক্টস অব ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি রাইটসের (ট্রিপস) এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ৫-৬ মের বৈঠকে এ নিয়ে পরবর্তী আলোচনা হবে। এবার সেই বৈঠকেই যুক্তরাষ্ট্র সায় দিল। তবে কেবল যুক্তরাষ্ট্র সায় নয় ট্রিপসের বাকি সদস্যদেরও সমর্থন লাগবে এ প্রস্তাব কার্যকর হতে। একটি দেশ দ্বিমত করলেও তা কার্যকর হবে না। এরপর তা জেনারেল কাউন্সিলে অনুমোদিত হবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এখন মূলত ধনী দেশগুলোর মানুষ টিকা পাচ্ছে। তাতে অনেকটা কাজও হচ্ছে। তবে গরিব দেশগুলো এই টিকা না পেলে বিশ্বেও বেশির ভাগ মানুষ অরক্ষিত থেকে যাবে। তাতে এই মহামারী আরও প্রলম্বিত হবে বলেই ধারণা করা যায়। এর মধ্যে আবার ভাইরাসের নতুন রূপ সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে টিকাদানে যতটুকু অগ্রগতি হয়েছে, ততটুকু আবার হুমকির মুখে পড়তে পারে।

সর্বশেষ খবর