শুক্রবার, ৭ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

অনলাইনে পরীক্ষা নিতে পারবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো

নিজস্ব প্রতিবেদক

অনলাইনে চূড়ান্ত পরীক্ষা নিতে পারবে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। শিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠিত অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার কমিটির সঙ্গে গতকাল বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের ভার্চুয়াল বৈঠকে এ সুপারিশ গৃহীত হয়। বৈঠক শেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ড. মুনাজ আহমেদ নূর প্রতিবেদককে এসব তথ্য জানান।

করোনা সংক্রমণের কারণে এক বছরের বেশি সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন ক্লাস চলমান থাকলেও পরীক্ষা না নেওয়ায় শিক্ষার্থীরা সেশনজটে পড়েছেন। এ কারণেই অনলাইন পরীক্ষার সুপারিশ এলো।

তথ্যমতে, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে অনলাইনে পরীক্ষা নিতে গত ২৪ মার্চ বৈঠক করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ বৈঠকে ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. দিল আফরোজা বেগমকে সভাপতি করে ১০ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। অনলাইন পরীক্ষা কীভাবে নেওয়া যায় এ ব্যাপারে কমিটি সাত দফা সুপারিশ পেশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। এর মধ্যে রয়েছে- যে কোনো বিষয়ের পাঠদান সম্পন্ন হওয়ার পর কালক্ষেপণ না করে তার চূড়ান্ত মূল্যায়ন (সরাসরি বা অনলাইনে) সম্পন্ন করতে হবে। শুধু যেসব ব্যবহারিক কোর্সে হাতে-কলমে কাজ ছাড়া পরীক্ষা সম্পন্ন করা সম্ভব নয় তা অবশ্যই যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে সরাসরি সম্পন্ন করতে হবে। মূল্যায়নের ক্ষেত্রে সব বিষয়ের বিপরীতে চলমান পদ্ধতি ও স্কেল গ্রেড প্রদান করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের জন্য উপযোগী অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার সুস্পষ্ট পদ্ধতি গ্রহণ করবে এবং বাস্তবতার নিরিখে সব সুযোগ-সুবিধা বিবেচনায় রেখে যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করবে। এ ক্ষেত্রে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সংযোগ, অসাধু পন্থা বন্ধের ব্যবস্থা করতে হবে। তত্ত¡ীয় এবং হাতে-কলমে কাজ করার প্রয়োজন নেই এমন ব্যবহারিক বিষয়ে চূড়ান্ত নম্বর অনলাইনে পরীক্ষা নিয়ে প্রদান করা যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে কুইজ, সৃজনশীল কাজ, মৌখিক পরীক্ষায় গুরুত্ব দেওয়া যেতে পারে। তবে কুইজ, মৌখিক পরীক্ষার সময় শিক্ষার্থীদের ডিভাইসের ক্যামেরা ও মাইক্রোফোন চালু থাকতে হবে। এসব তথ্য সংরক্ষণেরও ব্যবস্থা রাখতে হবে। ব্যবহারিক ক্লাসের বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্টের ভিডিও সংশ্লিষ্ট বিভাগের ওয়েবসাইটে আপলোড করতে হবে। ল্যাবভিত্তিক নয় এমন থিসিস অনলাইনে সুপারভিশন করা যেতে পারে। অনলাইন ক্লাস ও পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের জন্য প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইন্টারনেট প্রাপ্যতা ও প্রয়োজনীয় স্পিড নিশ্চিত করা দরকার। এজন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাতে পারে।

বৈঠকসূত্র জানান, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কীভাবে অনলাইনে পরীক্ষা নেবে তা নিজ নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় আলোচনা করে ঠিক করবে। এ ছাড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠিত কমিটি এ বিষয়ে একটি গাইডলাইন তৈরি করেছে। সেটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। মন্ত্রণালয় অনলাইন পরীক্ষার পদ্ধতি পরিপত্র আকারেও জারি করতে পারে। উপাচার্য ড. মুনাজ আহমেদ নূর বাংলাদেশ প্রতিদিনকে আরও বলেন, কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা শিক্ষার্থী যদি অনলাইনে পরীক্ষা দিতে না চায় সে ক্ষেত্রে তাদের ওপর সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া যাবে না। কেউ যদি মনে করে তারা অনলাইনে না নিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সরাসরি পরীক্ষা নেবে, তা-ও তারা করতে পারবে। বৈঠকে এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন উপাচার্যরা।

সর্বশেষ খবর