শনিবার, ৮ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

করোনায় বিশ্বে মৃতের সংখ্যা সরকারি হিসাবের দ্বিগুণ : আইএইচএমই

প্রতিদিন ডেস্ক

সারা বিশ্বে গত দেড় বছরে করোনায় (কভিড-১৯) কমপক্ষে ৬৯ লাখ মানুষ মারা গেছেন, যা দেশগুলোর সরকারি হিসাবের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিকস অ্যান্ড ইভাল্যুয়েশনের (আইএইচএমই) বিশ্লেষণে এ তথ্য উঠে এসেছে। এদিকে করোনায় দৈনিক আক্রান্তে গত বৃহস্পতিবার সর্বকালের রেকর্ড ভাঙার ঘটনা ঘটেছে ভারতে। রয়টার্স, এনডিটিভি।

আইএইচএমইর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেশির ভাগ দেশ শুধু হাসপাতালে মারা যাওয়া রোগীদের গণনা করায় মৃতের প্রকৃত সংখ্যা গোপন থেকে যাচ্ছে। সংস্থাটির হিসাব বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত কভিডে অন্তত ৯ লাখ ৫ হাজার মানুষ মারা গেছে। অথচ দেশটির রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) হিসাবে বলা হচ্ছে, সেখানে মৃতের সংখ্যা ৫ লাখ ৭৫ হাজার ৪৯১ জন। তবে এ প্রতিবেদনের বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি সিডিসি। তাদের মতে, কোনো দেশে কভিডে মৃত্যুর হারের সঙ্গে সেখানে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যার খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। আইএইচএমইর পরিচালক ক্রিস্টোফার মুরে এক সংক্ষিপ্ত ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপনি যদি পরীক্ষা খুব বেশি না করেন, তাহলে কভিডে অনেক মৃত্যু এড়িয়ে যাবেন।’ আইএইচএমইর এই বিশ্লেষণে শুধু সরাসরি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হিসাব করা হয়েছে। মহামারীর কারণে সৃষ্ট চিকিৎসা সংকটে যেসব মৃত্যু হয়েছে, তা গোনায় ধরা হয়নি। মহামারীপূর্ব সময়ে সব ধরনের কারণে মৃত্যুর প্রবণতার সঙ্গে মহামারীর সময়ে সর্বমোট মৃত্যুর সংখ্যার তুলনামূলক হিসাব করে করোনায় মৃত্যুর সম্ভাব্য প্রকৃত সংখ্যা বের করেছে আইএইচএমই। বিশ্বের বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার তুলনামূলক হিসাব তুলে ধরা একটি স্বাধীন স্বাস্থ্য গবেষণা সংস্থা আইএইচএমই। অতীতে হোয়াইট হাউসও সংস্থাটির দেওয়া তথ্যের উদ্ধৃতি দিয়েছে। এর প্রতিবেদনগুলো জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তারা ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করে থাকে।

আক্রান্তে সর্বকালের রেকর্ড ভাঙল ভারত : ভারতের করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দেশটিতে নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ৪ লাখ ১৪ হাজারের বেশি রোগী। যা বিশ্বের যে কোনো দেশেই এক দিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের পরিমাণ। এ ছাড়া এদিন নতুন করে মৃত্যু হয়েছে আরও ৩ হাজার ৯১৫ জনের। করোনা মোকাবিলায় অক্সিজেনসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের ঘাটতি এখনো দেশটির সবচেয়ে বড় উদ্বেগ। ভারতে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। গত ১ মে দেশটিতে দৈনিক সংক্রমণ প্রথমবারের জন্য ৪ লাখ ছাড়ায়। তারপর চার দিন সাড়ে ৩ লাখের বেশি থাকলেও ৪ লাখের নিচেই ছিল নতুন শনাক্তের সংখ্যা। তবে বৃহস্পতিবার শনাক্ত হয় ৪ লাখ ১২ হাজারের বেশি। আর শুক্রবার সেই পরিমাণও ছাড়িয়ে গেছে। বর্তমানে দেশটিতে সক্রিয় রোগীর পরিমাণ ৩৬ লাখ ৪৫ হাজার ১৬৪ জন। গত ১ মার্চেও ভারতে এক দিনে শনাক্ত হয়েছে মাত্র ১৫ হাজার ৫১০ জন রোগী। সেই দেশেই দুই সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন ৩ লাখের বেশি রোগী শনাক্ত হচ্ছে। করোনা মহামারীতে ভারতে প্রায় ২ লাখ ৩৪ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আর এই সপ্তাহে ভারতে মোট আক্রান্তের পরিমাণ ২ কোটি ছাড়িয়ে যায়। করোনা মোকাবিলায় নতুন করে লকডাউন ঘোষণা করেছে রাজস্থান ও কেরালা। রাজস্থানে ১০ থেকে ২৪ মে এবং কেরালায় ৮ থেমে ১৬ মে পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। সংক্রমণ ঠেকাতে আরও কয়েকটি রাজ্যেও কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। গত সপ্তাহে ভারত সব প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য টিকাদান কর্মসূচি সম্প্রসারণ করে। তবে বহু রাজ্যই টিকা সংকটের কথা জানাচ্ছে। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, টিকাদানের হার কোনোভাবেই ধীর হতে দেওয়া যাবে না।

সর্বশেষ খবর