বুধবার, ১৯ মে, ২০২১ ০০:০০ টা
মিতু হত্যা মামলা

কোথায় সেই মুছা খুঁজছে প্রশাসন ও পরিবার

মুহাম্মদ সেলিম, চট্টগ্রাম

আলোচিত মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার অন্যতম আসামি কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুছার হদিস মেলেনি গত পাঁচ বছরে। প্রশাসন কিংবা পরিবার কারও কাছেই নেই মুছার খবর। প্রশাসনের খাতায় মুছা ‘পলাতক’ হলেও তার পরিবার বলছে ভিন্ন কথা। তাদের দাবি, প্রশাসনের হেফাজতেই রয়েছেন মুছা। তবে মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) দাবি, পলাতক মুছাকে গ্রেফতারের জন্য হন্যে হয়ে খুঁজছে তারা।

পিবিআইর ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার বলেন, ‘মিতু হত্যাকান্ডের গুরুত্বপূর্ণ আসামি মুছা। সে দেশে আছে, নাকি বাইরে পালিয়েছে, তা এখনো পর্যন্ত নিশ্চিত নই। তাকে গ্রেফতার করা গেলে অনেক প্রশ্নের উত্তর মিলবে। তাই মুছাকে গ্রেফতারের জন্য আমরা খুঁজছি।’ মুছার পরিবারের দাবি নিয়ে তিনি বলেন, ‘কিসের ভিত্তিতে মুছার পরিবার এমন দাবি করছে তা আমাদের জানা নেই।’ পুলিশের খাতায় নিখোঁজ মুছার স্ত্রী পান্না আকতার বলেন, ‘মিতু খুনের পর ২২ জুন নগরীর বন্দর এলাকা থেকে সাদা পোশাকের একটি দল মুছাকে আটক করে নিয়ে যায়। এর পর থেকে তার হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। শুরু থেকে এ ঘটনার সঙ্গে বাবুল আকতারের সম্পৃক্ততা রয়েছে তা দাবি করে আসছিলাম। এত বছর পর বাবুল আকতারকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে থাকা মুছাকে আদালতে হাজির করার দাবি করছি। মুছা যদি এ খুনের সঙ্গে জড়িত হন তাহলে তাকে শাস্তির মুখোমুখি করা হোক।’ তদন্ত-সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আলোচিত মিতু হত্যা মামলার অন্যতম আসামি মো. কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুছা সিকদার মামলার গুরুত্বপূর্ণ আসামি। কিলিং মিশনের জন্য অন্য আসামিদের সঙ্গে যোগাযোগ, অস্ত্র ও গাড়ি জোগাড়, কিলিং মিশন পরিকল্পনা থেকে শুরু করে প্রায় সব কাজই হয় মুছার নেতৃত্বে। মিতু হত্যার প্রথম মামলায় (চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া মামলা) গ্রেফতার হওয়া দুই আসামির জবানবন্দিতেও উঠে এসেছে মুছার নাম। ঘনিষ্ঠ হলেও শুরু থেকেই মুছাকে নিজের সোর্স হিসেবে অস্বীকার করে আসছেন সাবেক এসপি বাবুল আকতার। খুনের পর একাধিকবার মুছার ভিডিও দেখানো হলেও পরিচয় নিশ্চিত করেননি বাবুল। স্ত্রী হত্যা মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর রিমান্ডে মুছার বিষয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বাবুলকে। শুরুতে তিনি অস্বীকার করলেও পরে মুছার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কথা স্বীকার করেন। কিন্তু মুছার বর্তমান অবস্থা জানাননি বাবুল। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, ‘মুছার সঙ্গে সম্পর্ক থাকার কথা শুরুতে অস্বীকার করেন বাবুল আকতার। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তা স্বীকার করে নেন। কিন্তু মুছার বর্তমান অবস্থান নিয়ে কোনো তথ্য জানাননি তিনি।’ প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৫ জুন নগরীর জিইসির মোড় এলাকায় ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে খুন হন সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। এ ঘটনায় বাবুল আক্তার বাদী হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। খুনের পাঁচ বছর পর পিবিআই তদন্তে এ খুনের সঙ্গে বাবুল আকতারের সংশ্লিষ্টতা পায়। পরে পুরনো মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে নতুন করে মামলা দায়ের করা হয়, যেখানে আসামি করা হয় বাবুল আকতারকে।

সর্বশেষ খবর