বৃহস্পতিবার, ২০ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

বিশ্ববিদ্যালয় খোলা নিয়ে অনিশ্চয়তা

আকতারুজ্জামান

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের পর এক বছর দুই মাস অতিবাহিত হলেও স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় খোলা নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটেনি। করোনার সংক্রমণ বন্ধ না হওয়া, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-ছাত্রীদের টিকার আওতায় আনতে না পারার কারণে কবে খুলবে বিশ্ববিদ্যালয় এটিও নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না সরকারের কর্তাব্যক্তিরা। টিকার আওতায় আনতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) মাধ্যমে সরকারের কাছে শিক্ষার্থীদের তালিকা পাঠালেও শিক্ষার্থীদের এই টিকাদান কার্যক্রম আর এগোয়নি। এদিকে করোনা পরিস্থিতিতে কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন ক্লাস যেনতেনভাবে চললেও পরীক্ষা না হওয়ায় মুখ থুবড়ে পড়ছে এই অনলাইন ক্লাসগুলোও।

ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বর্তমানে টিকার স্বল্পতা রয়েছে। শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার ব্যাপারে যেভাবে ভেবেছিলাম তা নিয়ে সন্তোষজনক কোনো পর্যায়ে যেতে পারিনি আমরা। এটি নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। আমরা মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেছি শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেওয়ার জন্য। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীদের তালিকাও পাঠিয়েছি। কিন্তু সন্তোষজনক কোনো অগ্রগতি হয়নি। তিনি বলেন, শিক্ষাব্যবস্থার সবাইকে ফ্রন্টলাইনার হিসেবে বিবেচনা করে টিকা কার্যক্রম সম্পন্ন করতে সরকারের কাছে দাবি জানাই। তাছাড়া তো বিশ্ববিদ্যালয় খুলতে পারব না।

গত ফেব্রুয়ারিতে সংবাদ সম্মেলন করে ২৪ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ও ১৭ মে থেকে হলগুলো খুলে দেওয়ার ঘোষণা দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তবে এর আগে আবাসিক হলের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের করোনার টিকা দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। কিন্তু সেই ঘোষণার প্রায় তিন মাস পার হলেও এখন পর্যন্ত টিকা পাননি শিক্ষার্থীরা। এরই মধ্যে টিকার সংকটে প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। সরকারের সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, করোনা মহামারীর কারণে বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি আগামী ২৯ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। ফলে প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত কয়েক কোটি শিক্ষার্থী বড় ধরনের সমস্যায় পড়েছে। করোনা টিকাদান কার্যক্রমকে বিবেচনায় নিয়ে আবাসিক হল ও বিশ্ববিদ্যালয় খোলার তারিখ আরও পেছাতে পারে বলে জানা গেছে। এদিকে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে। এসব সমস্যা সমাধানে এর মধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এসব কাজ শেষ হলে করোনা পরিস্থিতির অবস্থা দেখে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার। গত সোমবার মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এসব কথা জানান। তিনি বলেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সুবিধাজনক পরিস্থিতিতে এবং বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়া গেলেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হবে। কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০টি আবাসিক হলের সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি। তথ্য মতে, দেশে বর্তমানে ৪৬টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম চালু রয়েছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক হলে থাকেন প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার শিক্ষার্থী। আর শিক্ষক আছেন প্রায় ১৫ হাজার। এদের ২৪ মের আগে টিকা দেওয়ার কথা ছিল। এদিকে ১৪ মাস ধরে বন্ধ থাকায় বড় ধরনের সেশনজটে পড়তে যাচ্ছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। অনলাইন ক্লাস চললেও পরীক্ষা না থাকায় অনেকটাই গতি হারিয়ে ফেলেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন ক্লাস চললেও সেসব ক্লাসে অংশগ্রহণের আগ্রহ নেই তাদের। এ ছাড়া প্রয়োজনীয় ডিভাইস না থাকা, ইন্টারনেটের ধীরগতির কারণেও অনেকেই ক্লাসে অংশ নিতে পারছেন না।

সমন্বিতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করতে হবে

অনেক ছাত্রছাত্রী এখন কান্নাকাটি করছে

অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দিয়ে ক্লাসে আনতে হবে শিক্ষার্থীদের

 

 

সর্বশেষ খবর