শনিবার, ২২ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

আর্থিক দীনতা ও করোনায় বাড়ছে মানসিক রোগী

অধ্যাপক ড. মনিরুল ইসলাম খান

আর্থিক দীনতা ও করোনায় বাড়ছে মানসিক রোগী

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মনিরুল ইসলাম খান বলেছেন, বাংলাদেশে এখন মানসিক রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। কারণ, সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও করোনা মহামারী চলছে। দিন দিন মানুষের আর্থিক অবস্থা খারাপ হচ্ছে। মানুষ ঘরবন্দী হয়ে থাকছে। এতে বিভিন্ন ধরনের কলহ বাড়ছে। আমি মনে করি, করোনা ও আর্থিক দীনতাই মানসিক রোগী বাড়ার প্রধান কারণ হতে পারে। অনেকেই এখন সংসার চালাতে পারছেন না। নানা কারণে হতাশা চলে এসেছে। গতকাল সন্ধ্যায় বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে ফোনে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। আলাপচারিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সিনিয়র অধ্যাপক বলেন, বাংলাদেশে শহুরে এলাকাগুলোতে মানসিক রোগী বাড়তে পারে। সেখানে ডিভোর্স বাড়ছে। অনেকেই একাকী থাকছেন। ফ্যামিলি ভেঙে যাচ্ছে। অনেক ডিভোর্স নারীর আর্থিক দীনতা বাড়ে। বাচ্চাদের ঠিকমতো খাওয়াতে পারেন না। তখন অবসাদ বাড়ে। নানামুখী প্রতিবন্ধকতায় কেউ কেউ মানসিক রোগীও হয়ে যেতে পারেন। তিনি বলেন, তুলনামূলক স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে মানসিক রোগীর সংখ্যা কম। আমাদের দেশে মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যও ভালো। আমেরিকার মতো বাংলাদেশে সশস্ত্র সহিংসতা হয় না। এমনকি বিষাদে একাকিত্বে উল্লেখ করার মতো সংখ্যক আত্মহত্যাও করে না। আমাদের দেশে পারিবারিক বন্ধন এখনো অনেক ভালো। আমরা প্রাপ্ত বয়সেও বাবা মা, স্ত্রী সন্তানকে নিয়ে থাকি। কিন্তু আমেরিকাতে তা হয় না। তাদের দেশে ১৮ বছর পর পারিবারিক বন্ধন থাকে না। তিনি আরও বলেন, আমি দীর্ঘদিন আইসিডিডিআরবিতে কাজ করেছি। সেখানে আমরা দেখেছি, গ্রামে অনেক সময় মেয়েদের পিরিয়ড সমস্যায় ভিন্ন আচরণ করে। তখন সে এমন কোনো আচরণ করে তাকে বলা হয়, জিন বা ভূতে ধরেছে। কেউ কেউ বলতে চান, তার বাতাস লেগেছে। তাকে বলছেন মানসিক রোগ। সে কিন্তু মানসিক রোগী নয়। সেক্ষেত্রে আমাদের যত্নবান হতে হবে, কোনো কোনো আচরণকে মানসিক রোগী বলা যাবে। অধ্যাপক ড. মনিরুল ইসলাম খান আরও বলেন, বাংলাদেশে যে পারিবারিক, সামাজিক বা আত্মীয়তার যে বন্ধন আছে, তাতে মানুষ হতাশায় ভোগে না। আমাদের মামা বাড়ি, চাচা, খালু বাড়ি আছে। পাশ্চাত্য দেশগুলোতে এমন কোনো বন্ধন নেই। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন অনেকের উল্টাপাল্টা মন্তব্য করেন। আমার মনে হয়, এতে কেউ কেউ উত্তেজনা বাড়াতে চান। নিজের দৃষ্টি আকর্ষণ করাতে চেষ্টা করেন। এটা একটা নেগেটিভ এটেনশন। যারা পজিটিভ এটেনশন পাচ্ছেন না তারা নেগেটিভের দিকেই যাচ্ছেন।

সর্বশেষ খবর