শনিবার, ২২ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

গাজায় ১১ দিন পর যুদ্ধবিরতি, সতর্ক উচ্ছ্বাসে ফিলিস্তিনিরা

আল-আকসায় ফের হামলা

প্রতিদিন ডেস্ক

গাজায় ১১ দিন পর যুদ্ধবিরতি, সতর্ক উচ্ছ্বাসে ফিলিস্তিনিরা

যুদ্ধবিরতির পর ফিলিস্তিনি নারীর উচ্ছ্বাস

যুদ্ধবিরতি নিয়ে উল্লাস করার সময় ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি পুলিশ। আল-আকসা মসজিদে জুমার নামাজের পর আনন্দ করতে থাকেন ফিলিস্তিনি মুসলিমরা। এ সময় তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় ইসরায়েলি পুলিশ। ছোড়া হয় টিয়ার গ্যাস, স্টান গ্রেনেড ও রাবার বুলেট। মিডল ইস্ট আইয়ের অনলাইন খবরে বলা হয়, টানা ১১ দিন সংঘাত চলে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে। বৃহস্পতিবার মাঝরাতে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় দুই পক্ষ। একে বিজয় হিসেবে দেখছেন ফিলিস্তিনিরা। বিজয় উদযাপন করতে আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে জড়ো হয়েছিলেন কয়েক হাজার ফিলিস্তিনি। তারা ইসরায়েলবিরোধী স্লোগান দেন,  মিষ্টি বিতরণ করেন। এ সময় তাদের হটিয়ে দিতে রাবার বুলেট ছোড়ে ইসরায়েলি বাহিনী। এদিকে ইসরায়েলি পুলিশের মুখপাত্র মিকি রজেনফেল্ড জানিয়েছেন, ফিলিস্তিনিরা তাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়তে শুরু করলে তারা দাঙ্গা দমনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। পুলিশের হামলায় অন্তত ১০ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে রয়টার্স। ইসরায়েলি পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর ও পেট্রোলবোমা ছোড়া হয়েছে বলেও জানিয়েছে সংবাদ মাধ্যমটি।

উভয় পক্ষেরই বিজয় দাবি : আপাতত ইসরায়েল এবং হামাস দুই পক্ষই দাবি করছে এই লড়াইয়ে তাদের বিজয় হয়েছে।

ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী আইডিএফ বলছে গাজায় ১১ দিনের লড়াইয়ে তারা ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাস এবং ইসলামিক জিহাদের ২৫ জন ঊর্ধ্বতন কমান্ডার ও দু’শর মতো সক্রিয় সদস্যকে হত্যা করেছে। তবে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় ২৪৩ জন মারা গেছে, যার মধ্যে ৬৬ জন শিশু এবং ৩৯ জন নারী। হামাস তাদের যোদ্ধাদের হতাহতের কোনো পরিসংখ্যান দেয়নি। ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তাদের সামরিক অভিযান ‘অভূতপূর্ব সফল’ দাবি করে বলেছেন, তারা বিমান হামলা চালিয়ে হামাসের ১০০ কিলোমিটার বিস্তৃত সুড়ঙ্গ নেটওয়ার্ক বিধ্বস্ত করে দিয়েছে।

এদিকে বিবিসির মধ্যপ্রাচ্য সম্পাদক জেরেমি বোওয়েন বলেছেন, হামাসের একজন শীর্ষ নেতা গাজায় বিবিসিকে বলেছেন যে, ইসরায়েল ‘শেখ জারা এবং আল-আকসা মসজিদ থেকে সরে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।’ মুসলিমদের জন্য অন্যতম সবচেয়ে পবিত্র একটি মসজিদ হলো আল-আকসা। জেরুজালেমের এই শেখ জারা এলাকায় ফিলিস্তিনি কয়েকটি পরিবারকে তাদের বাড়ি থেকে উৎখাত করাকে কেন্দ্র করেই এবারের সংঘাতের সূত্রপাত হয়েছিল। হামাসের একজন কর্মকর্তা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস সংবাদ সংস্থাকে বলেছেন, ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতির ঘোষণা ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য একটা বিজয়। এই বিজয়ের আনন্দ দেখা গেছে গাজাজুড়ে। যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর রাস্তায় নেমে আনন্দ উল্লাস করেছে গাজার জনগণ। ‘আজ বিজয়ের দিন, স্বাধীনতার দিন, আমাদের জন্য সবচেয়ে আনন্দের একটা দিন’, বলেছেন একজন ফিলিস্তিনি। তবে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক হামাস কাউন্সিলের সদস্য বাসেম নাঈম বিবিসিকে বলেছেন, এই যুদ্ধবিরতি স্থায়ী হবে কি না তা নিয়ে তার সংশয় রয়েছে। ‘ফিলিস্তিনিদের প্রতি ন্যায়বিচার এবং ইসরায়েলের আগ্রাসন ও নৃশংসতা বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত এর স্থায়িত্ব নিয়ে তিনি সন্দিহান। হামাসের রাজনৈতিক শাখার একজন সদস্য ইজ্জাত আল-রেশিক ইসরায়েলের প্রতি সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেছেন। তিনি রয়টার্সকে বলেন, ‘আজ যুদ্ধ থেমেছে সেটা ঠিক, কিন্তু নেতানিয়াহু এবং সারা বিশ্বের জানা উচিত, আমাদের আঙুল ট্রিগারে রাখাই আছে এবং প্রতিরোধের প্রয়োজনে তার গতি বাড়ানো অব্যাহত থাকবে।’

সর্বশেষ খবর