মঙ্গলবার, ২৫ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

ট্রেন লঞ্চ দূরপাল্লার বাস চালু

করোনার বিধিনিষেধে এখনো যা কিছু বন্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক

মহামারী করোনার সংক্রমণ রোধে সারা দেশে ট্রেন, লঞ্চ ও দূরপাল্লার বাস বন্ধ ছিল ৪৯ দিন। দেড় মাসেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর চালু হয়েছে লঞ্চ, ট্রেন ও দূরপাল্লার বাস। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্ধেক যাত্রী বহন করতে হবে। ট্রেনের ভাড়া না বাড়লেও লঞ্চ ও বাসযাত্রীদের গুনতে হবে ৬০ শতাংশ বেশি ভাড়া। গতকাল দূরপাল্লায় বাস চলাচল শুরু হওয়ায় রাজধানীর বাস টার্মিনালে ফের কর্মচঞ্চল। বাসে টিকিট বিক্রি হচ্ছে এক আসন ফাঁকা রেখে।

রেলপথ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সোমবার থেকে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। তবে অবশ্যই যাত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের মাস্ক পরিধানসহ সব স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। আন্তনগর ট্রেনসমূহের টিকিট শুধু অনলাইনে কাটা যাবে। কাউন্টারে দেওয়া হবে না। রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনের ম্যানেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার জানিয়েছেন, কোনো যাত্রীকে মাস্ক ছাড়া স্টেশনে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্ল্যাহ জানিয়েছেন, সোমবার (গতকাল) থেকে দেশের সব দূরপাল্লা রুটের বাস চলাচল করছে। এ ব্যাপারে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে মাস্ক ছাড়া কোনো যাত্রী গাড়িতে উঠতে পারবেন না। গাড়িচালক, সুপারভাইজার, কন্ডাক্টর, হেলপার এবং টিকিট বিক্রয় কেন্দ্রের দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিদের মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করতে হবে এবং তাদের হাত ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত সাবান-পানি, হ্যান্ড স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা রাখতে হবে। গাড়িতে সিটের অর্ধেক যাত্রী বহন করতে হবে (২ সিটে একজন যাত্রী বসবে)। সারা দেশ থেকেও ট্রেন, লঞ্চ, দূরপাল্লার বাস চলাচলের খবর পাঠিয়েছেন আমাদের প্রতিনিধিরা-

মাদারীপুর : লকডাউনে দীর্ঘ ৪৯ দিন বন্ধ থাকার পর বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটে লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে। লঞ্চ চলাচল শুরু হওয়ায় স্বস্তি দেখা দিয়েছে যাত্রীদের মধ্যে। গতকাল ভোর ৬টা থেকে ঢাকাগামী যাত্রীরা লঞ্চে পার হতে শুরু করেছেন। বাংলাবাজার ঘাট সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সকাল থেকে লঞ্চ চলাচল শুরু করায় যাত্রীরা ফেরির পাশাপাশি লঞ্চে পদ্মা নদী পার হচ্ছেন। ফলে ফেরিতে কমে এসেছে যাত্রীর চাপ। বেশির ভাগ যাত্রীই লঞ্চেই পার হচ্ছেন। তবে লঞ্চে স্বল্পসংখ্যক যাত্রী পারাপারের নির্দেশনা থাকলেও এর কার্যকারিতা তেমন দেখা যায়নি। লঞ্চ কর্তৃপক্ষের দাবি, তারা স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী লঞ্চে যাত্রী ওঠাচ্ছেন।

রাজবাড়ী : দীর্ঘ দেড় মাস পর রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে। দৌলতদিয়া ঘাটে ফেরি চলাচলও স্বাভাবিক। ফলে এখানে যানবাহন ও যাত্রীদের চাপ নেই। গতকাল সকালে দৌলতদিয়া ঘাটে অবস্থান করে দেখা যায়, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে লঞ্চ চালাতে তৎপরতা শুরু হয়। সকালে বিআইডব্লিউটিএর শ্রমিকেরা ধোয়ামোছার কাজ করেন। দৌলতদিয়া ঘাটের তত্ত্বাবধায়ক নুরুল আনোয়ার মিলন বলেন, সকাল পৌনে ৮টার দিকে ৩২ জন যাত্রী নিয়ে প্রথম লঞ্চটি ঘাটে এসে ভেড়ে। দৌলতদিয়া ঘাট থেকে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মাত্র ১৮ জন যাত্রী নিয়ে লঞ্চ ছেড়ে যায়। এখন পর্যন্ত যাত্রীদের তেমন কোনো চাপ লক্ষ্য করা যায়নি।

বরিশাল : দীর্ঘ দেড় মাসেরও বেশি সময় পর শুরু হয়েছে স্থানীয় ও দূরপাল্লার লঞ্চ চলাচল। আগে আন্তজেলা বাস বন্ধ থাকলেও গতকাল সকাল থেকে শুরু হয়েছে দূরপাল্লা রুটের বাস চলাচল। প্রথম দিন নৌপথে যাত্রীসংখ্যা তুলনামূলক কম হলেও স্থানীয় ও দূরপাল্লার বাসে যাত্রীদের বেশ চাপ দেখা গেছে। লঞ্চে কিছুটা স্বাস্থ্যবিধি মানার চেষ্টা করা হলেও বাসে প্রতিটি সিটে, এমনকি দাঁড়ানো যাত্রীও বহন করা হচ্ছে। যদিও বাসে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাত্রী পরিবহনের কথা বলেন সংশ্লিষ্টরা। তবে এসব তদারক করার মতো দেখা যায়নি সংশ্লিষ্ট কোনো কর্তৃপক্ষকে।

চাঁদপুর : করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ প্রতিরোধে টানা ৪৯ দিন বন্ধ থাকার পর গতকাল থেকে চাঁদপুরে লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে। ভোর ৬টায় চাঁদপুর লঞ্চঘাট থেকে ঢাকার উদ্দেশে প্রথম ছেড়ে যায় এমভি রফরফ-৭। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ধারণক্ষমতার নির্দিষ্ট যাত্রীর চেয়ে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে লঞ্চটি চাঁদপুর ঘাট ছেড়ে যায়। চাঁদপুর লঞ্চঘাটে ভোর সাড়ে ৫টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত অপেক্ষা করে দেখা যায়, দিনের আলো যত বাড়ছে, লঞ্চের যাত্রীও তত বাড়ছে। সকাল ৭টায় ঢাকাগামী সোনার তরী-৩ ও সকাল ৮টায় ঈগল-৭ লঞ্চ দুটিতে যাত্রীর সংখ্যাও বাড়তে থাকে।

চট্টগ্রাম : করোনার সংক্রমণের কারণে দেড় মাসের বেশি সময় বন্ধ থাকার পর পুনরায় যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের গন্তব্যের উদ্দেশে গতকাল সকাল থেকে ট্রেন ছেড়ে যেতে শুরু করে। তবে ট্রেন চলাচল শুরুর প্রথম দিন যাত্রীসংখ্যা একেবারেই কম ছিল। অন্তত তিন কারণে ট্রেনে যাত্রী কম হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রামের স্টেশনমাস্টার রতন কুমার চৌধুরী। তিনি বলেন, গতকাল ছিল ট্রেন চলাচলের প্রথম দিন। আর ট্রেন চলাচলের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল রবিবার বিকালে। এই দুটি কারণে মানুষ হয়তো ট্রেন চলাচল শুরুর বিষয়ে পুরোপুরি অবগত নয়। এ ছাড়া কাউন্টারে কোনো টিকিট বিক্রির সুযোগ নেই। সব টিকিট বিক্রি হচ্ছে অনলাইনে।

রাজশাহী : রাজশাহী থেকেও চালু হয়েছে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে দূরপাল্লার বাস ও ট্রেন চলাচল। সকাল থেকেই ঢাকাগামী দূরপাল্লার বাস ও ট্রেন ছেড়ে গেছে। তবে যাত্রী স্বল্পতার কারণে অর্ধেকেরও কম যাত্রী নিয়ে ট্রেন ছেড়ে গেছে। ঢাকাগামী দূরপাল্লার বাসেও অর্ধেকের চেয়ে কম যাত্রীর উপস্থিতি দেখা গেছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মানতে দেখা গেছে আন্তনগর ট্রেন ও দূরপাল্লার বাসে। যাত্রীদেরও সবাই মাস্ক পরে চলাচল করছেন। তবে আন্তজেলা বাসের যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করতে উদাসীনতা দেখা গেছে।

রংপুর : দীর্ঘ দেড় মাস বন্ধ থাকার পর রংপুর থেকে ঢাকাসহ আন্তজেলার বাস চলাচল শুরু হয়েছে। গতকাল সকাল থেকে অর্ধেকের কম যাত্রী নিয়ে একাধিক দূরপাল্লার বাস ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। রংপুর-ঢাকা বাসস্ট্যান্ড সূত্রে জানা গেছে, বাস চলাচলের সিদ্ধান্ত রবিবার বিকালে হওয়ায় জরুরি ভিত্তিতে বাসগুলো ধোয়ামোছার কাজ করা হয়। সেই সঙ্গে প্রতিটি বাস কাউন্টার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতেও সময় লেগে যায়। এর ওপর অনেক পরিবহনের গাড়ি ঢাকায় আটকা পড়েছে। গাড়ি কম থাকা এবং হঠাৎ বাস চালুর সিদ্ধান্ত আসায় সকালের দিকে ঢাকার যাত্রী কিছুটা কম দেখা যায়।

সিলেট : দেড় মাস বন্ধ থাকার পর চালু হয়েছে ট্রেন চলাচল। গতকাল বেলা সোয়া ১১টার দিকে সিলেট থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস। সকালে সিলেট রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, সিলেট থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার জন্য জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস প্ল্যাটফরমে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সিলেট রেলস্টেশনের ব্যবস্থাপক মো. খলিলুর রহমান বলেন, সোমবার (গতকাল) থেকে সিলেট-ঢাকা রুটে পারাবত এক্সপ্রেস ও জয়ন্তিকা এবং সিলেট-চট্টগ্রাম রুটে উপবন এক্সপ্রেস চলাচল শুরু করেছে। কাউন্টারে কোনো টিকিট বিক্রি হচ্ছে না। যাত্রীদের টিকিট অনলাইন ও মোবাইল অ্যাপে কাটতে হবে। যাত্রীসহ সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরিধান ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে।

নাটোর : দীর্ঘ ৪৯ দিন পর দূরপাল্লার গাড়ি চলাচল শুরু হওয়ায় খুশি নাটোরের পরিবহন শ্রমিকসহ সাধারণ যাত্রীরা। সরকারের এ সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন তারা। গতকাল সকাল থেকে সরকারি সব নির্দেশনা মেনে দূরপাল্লার গাড়িগুলো নাটোরের বড় হরিশপুরসহ বিভিন্ন টার্মিনাল থেকে নানা জেলা এবং ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছে।

ঝিনাইদহ : দীর্ঘ ৪৯ দিন পর শুরু হয়েছে দূরপাল্লা ও আন্তজেলার বিভিন্ন রুটে বাস চলাচল। শহরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বাস চলাচল শুরু হয়েছে। এ ছাড়াও চলাচল করছে আন্তজেলা বাস। গতকাল সকালে শহরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, অর্ধেক যাত্রী নিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বাস ছেড়ে যাচ্ছে। তবে উপেক্ষিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি।

করোনার বিধিনিষেধে এখনো যা কিছু বন্ধ : গত রবিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের জারি করা বিধিনিষেধ সংক্রান্ত সর্বশেষ প্রজ্ঞাপনে দূরপাল্লার বাস, ট্রেন, লঞ্চ চালুর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। হোটেল রেস্তোরাঁয়ও বসে খাবার অনুমতি দিয়েছে সরকার। শহরের মধ্যে পাবলিক পরিবহন চালু ছিল আগে থেকেই। ঈদের আগে থেকেই খোলা হয়েছে শপিং মল, দোকান-পাট। ব্যাংক ও শেয়ারবাজারের লেনদেনের সময়সীমাও বাড়ানো হয়েছে। বেসরকারি অফিসও খোলা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে কলকারখানা তো চালু রয়েছে আরও আগে থেকেই। ফলে বিধিনিষেধের মধ্যে বন্ধ থাকল শুধু সরকারি অফিস, কোর্ট, পর্যটন, পার্ক এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। অবশ্য সরকারি অফিসের মধ্যে জরুরি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো খোলাই রয়েছে। এ ছাড়া অর্থ, জনস্বাস্থ্য, জনপ্রশাসন, বাণিজ্য, বৈদেশিক কর্মসংস্থান, স্বরাষ্ট্রসহ আরও কয়েকটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ আংশিকভাবে খোলা রয়েছে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম চলছে অনলাইনে। যদিও বলা হচ্ছে, শুধুমাত্র শহরকেন্দ্রিক স্কুলগুলোর অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম কোনো রকমে চলছে। শিক্ষা পদ্ধতি ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা এবং শিক্ষার্থীদের সুযোগ-সুবিধার কমতির কারণে বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের বাইরে রয়েছে। আদালতও চলছে ভার্চুয়ালি। তবে সেটা আংশিক।

জানা গেছে, উচ্চ ও নিম্ন আদালতসহ সারা দেশেই আদালতের কার্যক্রম চলছে আংশিক ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে। তবে রিমান্ড শুনানি ও আসামিদের আত্মসমর্পণ কার্যক্রম চলছে সশরীরে। সেটাও আংশিক। এতে করে নিম্ন ও উচ্চ আদালতে মামলার দীর্ঘ জট লেগে গেছে। এ ছাড়া মামলা ও বিচারিক কার্যক্রম চরমভাবে বিঘ্নিত হওয়ায় বিচারপ্রার্থীরা পড়েছেন বিপাকে। সুপ্রিম কোর্টের একটি সূত্র জানায়, করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতিসহ সব দিক বিবেচনায় আগামী ১ জুন থেকে খোলা হতে পারে উচ্চ ও নিম্ন আদালত। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রথমদিকে গুরুত্ব বিবেচনায় অগ্রাধিকারভিত্তিতে মামলা ও বিচারিক কার্যক্রম চালু করা হতে পারে। এতে করে আদালতগুলোতে জনসমাগম অনেকটাই কম হবে। যা করোনা সংক্রমণ রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।

আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি মোটামুটি নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে। কমেছে করোনায় মৃত্যুর হারও। এ ছাড়া টিকা প্রয়োগ কার্যক্রমও চলছে। যদিও মাঝপথে এসে টিকা প্রাপ্তি নিয়ে কিছুটা জটিলতা দেখা দিয়েছে। সেটা খুব শিগগিরই কেটে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ফলে এখন আংশিকভাবে অন্যান্য অফিস কার্যক্রমের মতো আদালতগুলোও খুলে দেওয়া যেতে পারে বলে তারা মনে করেন।

রবিবারের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, দোকানপাট/শপিং মলসমূহ আগের মতো খোলা থাকলেও সব দোকানপাট-শপিং মলে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে প্রতিপালন নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় দোকানপাট, শপিং মল তাৎক্ষণিক বন্ধ করে দেওয়া হবে। মাস্ক ব্যবহার শতভাগ নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। জনসমাবেশ হয় এ ধরনের সামাজিক ও রাজনৈতিক ও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে। কভিড-১৯ প্রতিরোধে সিটি করপোরেশন, জেলা সদর, পৌরসভা এলাকাসমূহে বাধ্যতামূলক মাস্ক পরিধান, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের জন্য তথ্য মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশন/পৌরসভা মাইকিংসহ ব্যাপক প্রচার প্রচারণার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

নতুন করে বিধিনিষেধের মেয়াদ বাড়লেও গতকাল থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দূরপাল্লার বাস চলছে। একই সঙ্গে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে চলছে লঞ্চ এবং ট্রেন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে চলমান বিধিনিষেধের মেয়াদ আরও সাত দিন অর্থাৎ ২৪ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত আরেক দফা বাড়িয়ে রবিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বিবেচনায় সবকিছুই সীমিত পরিসরে খোলা হলেও আসলে সবই চলছে। এখন শুধু বন্ধ থাকল সরকারি অফিস, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও আদালত। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদেরকে টিকার আওতায় এনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খুলে দেওয়ার ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করছে সরকার। অচল শিক্ষা কার্যক্রমের ফলে শিক্ষার্থীরা পড়েছেন সেশনজটে। একইভাবে বিচারিক কার্যকমে সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘ মামলাজট। এই মামলাজট কমাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দ্রুততম সময়ের মধ্যে আদালতগুলো খুলে দেওয়ার কথা ভাবছে সরকার।

সর্বশেষ খবর