বৃহস্পতিবার, ২৭ মে, ২০২১ ০০:০০ টা

বিশ্ববিদ্যালয় বাদে অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে ১৩ জুন

নিজস্ব প্রতিবেদক

করোনা সংক্রমণের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি আরও বেড়েছে। স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে ১২ জুন পর্যন্ত। পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে ১৩ জুন বিশ্ববিদ্যালয় বাদে অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়টি নির্ভর করছে বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক হলের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের করোনা টিকা দেওয়ার ওপর। গতকাল দুপুরে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।

দীপু মনি বলেন, স্কুল-কলেজ হয়তো আগেই খুলে দেওয়া যাবে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় খোলার বিষয়টি টিকার ওপর খানিকটা নির্ভর করছে। টিকা দেওয়ার ব্যাপারে শিক্ষার্থীদের তথ্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) সরকারের কাছে পাঠিয়েছে। যেহেতু শিক্ষার্থীদের বয়স ৪০-এর নিচে তাই বেশির ভাগই হয়তো টিকা নিতে পারেননি। টিকা নিতে জাতীয় পরিচয়পত্রের বাধ্যবাধকতা ও সংকট ছিল। এ সংকট কেটে গেছে। শিগগিরই আবাসিক শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় আনা হবে। টিকা ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় খুলতে বিকল্প কী কী করা যায় তা ইউজিসি ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে আলোচনা শেষে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনলাইনে পরীক্ষা নিতে পারবে। মন্ত্রী বলেন, গত বছরের এইচএসসি পরীক্ষার মতো এবার পরীক্ষা ছাড়া এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার মূল্যায়ন করা হবে না। সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে শ্রেণিকক্ষে ক্লাস করিয়েই এ বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া হবে। ৬০ দিন ক্লাস করিয়ে এসএসসি এবং ৮৪ দিন ক্লাস শেষে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া হবে। এ লক্ষ্যে ইতিমধ্যে সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচি প্রকাশ করা হয়েছে। একইভাবে আগামী বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষাও হবে সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচির ভিত্তিতে। আগামী বছরের এসএসসি পরীক্ষার জন্য ১৫০ আর এইচএসসি পরীক্ষার জন্য ১৮০ দিন ক্লাস করানোর জন্য পাঠ্যসূচি চূড়ান্ত করা হয়েছে। এসব শিক্ষার্থীর জন্য আগামী জুন থেকে সপ্তাহে দুটি করে অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হবে। এ ছাড়া চলতি বছরের জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা নেওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হলে পরীক্ষা নেওয়া হবে। নইলে অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে মূল্যায়ন করা হবে। মন্ত্রী বলেন, সবাই দায়িত্বশীল হয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার অনুকূল পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যখন খুলে দেব তখন প্রথমে ২০২১ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের সপ্তাহে ছয় দিন ক্লাস হবে। যারা আগামী বছর এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা দেবে তাদেরও সপ্তাহে ছয় দিন ক্লাস নেওয়ার চেষ্টা করব। এ ছাড়া ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা প্রথমে সপ্তাহে এক দিন করে ক্লাস করবে। প্রথমে আমরা দেখব কত দ্রুততার সঙ্গে তাদের ক্লাসটা এক দিন থেকে বাড়ানো যায়। এরপর ক্রমাগত বাড়িয়ে দুই, তিন, চার দিন এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলে পূর্ণাঙ্গভাবে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চলবে। দীপু মনি জানান, এক বছরের বেশি সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা জানতে সরকার তথ্য সংগ্রহ করছে। যেহেতু আমরা এখন নানা ধরনের প্রযুক্তির ওপর নির্ভর হয়ে গেছি তাই সে ক্ষতিটা আরও কম সময়ে আমরা পূরণ করতে পারব। তিনি বলেন, আমাদের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে। তা নিয়ে বিভিন্ন সময়ে আলোচনা করেছি। ক্ষতিটা যত তাড়াতাড়ি নিরূপণ হবে, ক্ষতি কীভাবে কত সময়ে পূরণ করতে পারব তা-ও বুঝতে পারব। ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর