মঙ্গলবার, ১ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

রাজধানীতে বাসায় নারী চিকিৎসকের রক্তাক্ত লাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীতে বাসায় নারী চিকিৎসকের রক্তাক্ত লাশ

সাবিরা রহমান লিপি

রাজধানীর কলাবাগান থেকে চিকিৎসক কাজী সাবিরা রহমান লিপির (৪৭) রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল দুপুরে কলাবাগানের ৫০/১ ফার্স্ট লেন ভবনের বাসায় নিজের ঘর থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি গ্রিন লাইফ হাসপাতালের  রেডিওলজি বিভাগের চিকিৎসক ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার বুড়িচংয়ে।

লাশ উদ্ধারের ঘটনায় ওই বাড়িতে যান পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ক্রাইম সিন ইউনিট ও ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। তারা ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন ধরনের আলামত সংগ্রহ করেন। লাশের গলা ও পিঠে ধারালো অস্ত্রের একাধিক আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। মুখমন্ডলও ছিল ঝলসানো।

ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, বাসার তিনটি রুমের মধ্যে একটিতে তিনি একাই থাকতেন। বাকি দুটি সাবলেট দিয়েছিলেন। ওই দুই রুমে দুই নারী শিক্ষার্থী ভাড়া থাকেন। তাদের একজন ঈদের পরে এখনো আসেননি। অন্যজন বাসায়ই ছিলেন। তিনি সকালে হাঁটতে বের হন, আনুমানিক ১০টায় এসে দেখতে পান লিপির রুম বন্ধ। রুম থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। বাড়ির দারোয়ানকে ডেকে রুমের লক ভাঙান। ভাঙার পর দেখেন রুমটা ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন এবং লিপি বেডে শুয়ে আছেন। তৎক্ষণাৎ তারা ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশে খবর দেন। লাশ উদ্ধারের পর সাবলেটের বাসিন্দা কানিজ সুবর্ণা, তার এক বন্ধু ও দারোয়ান রমজানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়। বাড়ির মালিক মাহবুব ইসলাম গণমাধ্যমেকে জানান, সাবলেট দেওয়ার বিষয়টি তিনি জানতেন না। লাশ উদ্ধারের পর জানতে পারেন বাকি দুটি রুম লিপি অন্যদের ভাড়া দিয়েছেন।

কবির হাসান নামে ওই নারী চিকিৎসকের এক আত্মীয় জানান, কিছুদিন আগে স্বামীর সঙ্গে ডা. লিপির ডিভোর্স হয়েছে। ওই ফ্ল্যাটে লিপি একাই থাকতেন। তার এক ছেলে (২১) ও এক মেয়ে (১০) আছে। তারা গ্রিন রোডে তাদের নানির বাসায় থাকে। তার সাবেক স্বামী শামসুর আজাদ একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করেন, থাকেন শান্তিনগর। ডিবি পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) এইচ এম আজিমুল হক জানান, প্রাথমিক আলামত দেখে মনে হচ্ছে ওই চিকিৎসককে হত্যা করা হয়েছে। এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) শাহেন শাহ মাহমুদ বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। আর সাবলেটে থাকা দুজনের মধ্যে একজন ওই বাসায় ছিলেন। তার ভাষ্য অনুযায়ী তিনি সকালে হাঁটতে বেরিয়েছিলেন। ফিরে এসে দেখেন ভবনের তিন তলায় আগুন। হত্যাকে অন্যদিকে প্রবাহিত করতেই আগুনের সংশ্লিষ্টতা বলে ধারণা করা হচ্ছে। ডা. লিপির শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ কারণে আমরা প্রাথমিকভাবে একে হত্যা বলছি।’ এদিকে ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার লিমা জানান, সকাল ১০টা ১০ মিনিটে কলাবাগানের ৫০/১ নম্বর ভবনের তিন তলায় আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে সেখান থেকে ডা. লিপির লাশ উদ্ধার করা হয়।

সর্বশেষ খবর