বুধবার, ২ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

বিশ্ববিদ্যালয় দলদাস শিক্ষকদের স্বার্থ রক্ষার কেন্দ্রবিন্দু : ইফতেখার

নিজস্ব প্রতিবেদক

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দুর্নীতির নিত্য-নতুন ধরন সম্পর্কে আমরা অবগত হচ্ছি। অভিযুক্ত দুর্নীতিবাজ উপাচার্যদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি একথা বলেন।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে উপাচার্যসহ প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ে এমন সব ব্যক্তিকে পদায়ন ও নিয়োগ প্রদান করা হচ্ছে, যারা উচ্চ শিক্ষার পরিবেশ নয়, বরং ক্ষমতাসীন দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন। দলীয় নেতা-কর্মীদের সুযোগ-সুবিধার নিশ্চয়তা বিধানে সচেষ্ট থাকেন তারা। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষাদান, গবেষণা ও জ্ঞানচর্চার কেন্দ্রবিন্দু হওয়ার পরিবর্তে সুবিধাভোগী, দলদাস শিক্ষকদের কারণে দলীয় লেজুড়বৃত্তি রাজনীতির স্বার্থ রক্ষার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শিক্ষাগত যোগ্যতার বদলে রাজনৈতিক পরিচয় ও সম্পৃক্ততা নিয়োগ প্রদানের অন্যতম বিবেচ্য হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। জবাবদিহি ও শাস্তির অভাবে উপাচার্যদের একাংশ কোনো ধরনের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে স্বেচ্ছাচার মনোবৃত্তির ন্যক্কারজনক দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছেন। এ ব্যাপারে কারও কোনো মাথাব্যথা আছে বলে মনে হয় না। সংশ্লিষ্টদের জবাবদিহিরও কোনো বালাই নেই। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ জরুরি। বিবৃতিতে বলা হয়, তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী অভিযুক্ত একজন উপাচার্যকেও যদি ন্যায়বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হতো, তাহলে পরবর্তী সময়ে অন্য উপাচার্যরাও অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িত হওয়ার সাহস করতেন না। কোনো উপাচার্যের বিরুদ্ধে ২৫টি আবার কারও বিরুদ্ধে ৪৫টি পর্যন্ত অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও দুর্নীতি দমন কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হয়েছে, যা হতাশাব্যঞ্জক। দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)-এর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশের পরও তার বাস্তবায়ন না হওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে টিআইবি। বিবৃতিতে বলা হয়, ইউজিসির সুনির্দিষ্ট সুপারিশ বাস্তবায়নে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যে অনীহা তা দুর্নীতি-অনিয়মের যোগসাজশের ইঙ্গিত দিচ্ছে এবং সামগ্রিকভাবে এটা সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সদিচ্ছা, জবাবদিহিতার অভাব ও বিচারহীনতার সংস্কৃতিরই প্রতিফলন। টিআইবি মনে করে, এমন পরিস্থিতি দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠগুলোকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছে। দেশের উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে ও জাতীয় জীবনে যার সুদূরপ্রসারী নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

সর্বশেষ খবর