শুক্রবার, ৪ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

বাজেটে দুর্নীতি-অপচয় সমন্বয়হীনতা আমলে নেওয়া হয়নি

রুহুল আমিন রাসেল

বাজেটে দুর্নীতি-অপচয় সমন্বয়হীনতা আমলে নেওয়া হয়নি

ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন

আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে দুর্নীতি, অপচয় ও সমন্বয়হীনতা আমলে নেওয়া হয়নি বলে মনে করেন প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। তার মতে, বাজেট বাস্তবায়নই মূল চ্যালেঞ্জ। অর্থনীতি বহুমুখী করতে হবে। সত্যিকার অর্থেই শেখ হাসিনা সরকারের এবারের বাজেট প্রতিশ্রুতিশীল ও ইতিবাচক। এই বাজেটে দেশীয় শিল্প ব্যাপক প্রসারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সব মিলিয়ে একটি চমৎকার বাজেট হয়েছে। গতকাল নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। তিনি বলেছেন, স্বাস্থ্য সেবাখাতে বিনিয়োগে কর অবকাশ সুবিধা রাখা হয়েছে। এটা খুবই ইতিবাচক দিক। তবে বাজেটে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ বা এসএমই-কে একসঙ্গে রাখা হয়েছে। এটা পৃথক করা উচিত। ক্ষুদ্র এবং মাঝারি এখন পৃথক করতে হবে। তিনি বলেন, মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে অনেক লোক নতুন করে দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে গেছে। তাদের সহায়তা দিচ্ছে সরকার। কিন্তু এখানেও অনেক দুর্নীতি হচ্ছে। কিন্তু ১৯৯৮ সালে বন্যার কারণে শেখ হাসিনার সরকার ১২ লাখ টন খাদ্য সহায়তা দিয়ে ৯ মাস সাধারণ মানুষকে খাবার সরবরাহ করেছেন। তখন তেমন কোনো দুর্নীতি হয়নি। প্রবীণ এই অর্থনীতিবিদ বলেন, চলতি অর্থবছরের বাজেট ৭০ শতাংশের বেশি বাস্তবায়ন হবে না। বর্তমান করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকারের একটি অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করা জরুরি। তারমতে, অপ্রদর্শিত আয় ১০ শতাংশ কর দিয়ে মূল স্রোতে আনার উদ্যোগ চলমান রয়েছে। কিন্তু এখানে জরিমানা না থাকলে বিষয়টি অনৈতিক হয়ে যায়। তাই কিছুটা জরিমানা থাকা উচিত। যদিও অর্থমন্ত্রী নিজেও বলেছেন, নতুন বাজেটে এ বিষয়ে পদক্ষেপ থাকছে। ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, আমাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ আগামী তিন বছরে দ্বিগুণ হবে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, তাদের কাছে ৫ লাখ কোটি টাকা তারল্য রয়েছে, যা খুবই সুখবর। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মহামারী করোনা প্রতিরোধের টিকা দেশেই উৎপাদন হবে। আমিও মনে করছি, করোনা মোকাবিলায় কমপক্ষে ১০ কোটি মানুষকে টিকা দিতে না পারলে আমাদের নিস্তার নেই। সাবেক এই গভর্নর বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে স্থানীয় বা দেশীয় পণ্য উৎপাদনে ব্যাপক শুল্ক ও কর ছাড় দেওয়া হয়েছে। এটা উত্তম উদ্যোগ। এরসঙ্গে আমাদের বস্ত্রশিল্পকেও যুক্ত করতে হবে। এটা করা হলে দেশের রপ্তানি আয়ের প্রধান খাত তৈরি পোশাকশিল্প লাভবান হবে। আমাদের অর্থনীতি বহুমুখী করতে হবে। বিদ্যমান আয়- বৈষম্য দূর করতে হবে। শিক্ষা খাত মহাসংকটে আছে, এখান থেকে উত্তরণের উপায় বের করতে হবে। হেফাজতের চাপে পাঠ্যপুস্তকে যে সংশোধনী হয়েছিল, তা পুনঃস্থাপন করতে হবে। রেল পরিবহনে নজর দিতে হবে। কারণ, রেলই হবে আমাদের প্রধান বাহন। বাজেটে পুনরায় শস্য বীমা চালুর কথা বলা হয়েছে, এটা খুবই ভালো খবর।

সর্বশেষ খবর