মঙ্গলবার, ১৫ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

খালেদা জিয়ার কিডনি লিভার সঠিকভাবে কাজ করছে না : ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ফুসফুস ও কিডনি জটিলতার কারণে তিনি বারবার জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন। দলীয় প্রধানের সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা জানাতে গিয়ে গতকাল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ তথ্য জানান।

এদিকে, চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, করোনা-পরবর্তী জটিলতায় খালেদা জিয়ার ফুসফুস, হার্ট, লিভার ও কিডনি আক্রান্ত হয়েছে। এরমধ্যে লিভার ও কিডনি প্রায় অর্ধেক কার্যক্ষমতা হারিয়েছে। তিনি স্বাভাবিক কার্যক্রম যথাযথভাবে করতে পারছেন না। এমন পরিস্থিতিতে বিএনপি চেয়ারপারসনের লিভার ট্রান্সপ্লান্টেশনের (প্রতিস্থাপন) সুপারিশ করেছেন। এ ছাড়াও আশঙ্কা ব্যক্ত করে বলেছেন, হৃদরোগের কারণে বেগম খালেদা জিয়ার শরীরের যেকোনো একটি অংশের গুরুতর জটিলতা দেখা দিতে পারে। এই অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।

মির্জা ফখরুল বলেন, চিকিৎসকদের কাছ থেকে যতটুকু জেনেছি তার (খালেদা জিয়া) হার্টের সমস্যা আছে, সেই সমস্যা না গেলে তার ফুসফুসে যেভাবে পানি আসছে সেটা বন্ধ হবে না। যেটা তারা (চিকিৎসক) মনে করছেন যে, কিডনি সঠিকভাবে কাজ করছে না। তার লিভারও ঠিকভাবে কাজ করছে না। যার কারণে জ্বর সেরে গেলে আবারও তার জ্বর আসছে। রবিবারও তার জ্বর এসেছিল।

এভারকেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, তারা তাদের সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করছেন। যেটা বার বার করে তারা বলছেন, আমাদের হাসপাতালগুলো ইকুপ্ট না। তাকে অ্যাডভান্স সেন্টারে নিয়ে চিকিৎসা করানো উচিত।

হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের মেডিকেল টিমের তত্বাবধানে বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসা চলছে। করোনা পরবর্তী নানা জটিলতা দেখা দিলে খালেদা জিয়া গত ২৭ এপ্রিল এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন। এর ৬ দিন পরে (৩ মে) তিনি শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয় তাকে। পরে অবস্থার উন্নতি হলে ১ মাস পর গত ৩ জুন চিকিৎসকদের পরামর্শে খালেদা জিয়াকে কেবিন ফিরিয়ে আনা হয়। সিসিইউতে থাকা অবস্থায় গত ২৮ মে খালেদা জিয়া ‘হঠাৎ’ জ্বরে আক্রান্ত হন। ৩০ মে তার জ্বর নিয়ন্ত্রণে আসে।

উল্লেখ্য, গত ১০ এপ্রিল গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’য় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। করোনামুক্ত হন ৯ মে।

জনগণকে বিভ্রান্ত করতেই খালেদা জিয়ার জন্মতারিখ নিয়ে রিট : জনগণকে বিভ্রান্ত করতেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্মতারিখ নিয়ে রিট করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। উচ্চ আদালতে খালেদা জিয়ার জন্মতারিখের নথি তলবের বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, যে বিষয়টার (খালেদা জিয়ার জন্মতারিখ) কথা বলা হয়েছে-এটা তো ফেক। এভারকেয়ারের যে রিপোর্টের কথা বলা হয়েছে এই ধরনের কোনো রিপোর্টই এভারকেয়ার করেনি। যে তারিখটা বসিয়েছে তারা- এটা ফলসলি করা হয়েছে। যে কাগজটা তারা দিয়েছে যার ওপরে আদালত একটা হুকুম দিয়েছে। এই হুকুমটা আমি জানি না বিং এ ল ইয়ার, এটা কীভাবে দিলেন? দেশে তো রাজনীতি নেই। এখন উদ্দেশ্য তাদের একটাই- এই ধরনের (জন্মদিন) ইস্যুগুলো তুলে এনে জাতিকে বিভ্রান্ত ও ডায়ভার্ট করার চেষ্টা করা। মূল সমস্যা থেকে জনগণকে ভুল দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা। আর কিছুই না। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এসব তারা করছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, এখানে দুর্ভাগ্যজনকভাবে একদলীয় শাসনে দেশ চলছে। এটা থেকে প্রমাণিত হয়- জুডিশিয়ারি ইজ নট ফ্রি। জুডিশিয়ারির কিন্তু এটা আমলেই নেওয়া উচিত ছিল না। যে ভদ্রলোক করেছেন তিনি তো পারসোনালি সংক্ষুব্ধ নন। বাংলাদেশে একটা জিনিস খেয়াল করে দেখবেন- বহুলোকের কিন্তু জন্মতারিখ আসল একটা আর সার্টিফিকেটে তারিখ আরেকটা আছে। কারণ হচ্ছে, বিশেষ করে আমাদের জেনারেশনের সময়ে তখন সঠিকভাবে বাবা-মায়ের জন্মতারিখ মনে রাখতে পারতেন না-জন্ম কবে হয়েছে, ডায়েরি-টায়েরি মেনটেইন করতেন না। ফলে দুই রকম হতে পারে। এটা কোনো দিন ইস্যু হতে পারে না।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপির শেকড় আছে বলেই বিএনপি টিকে আছে। এত নির্যাতন, গুম-খুন, হাজার হাজার মামলার পরও বিএনপি টিকে আছে শুধু এই দলের ‘ডিপ রুট’, মানুষের হৃদয়ের অনেক গভীরে চলে গেছে বিএনপি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর