বুধবার, ২৩ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

আমাদের আরও অনেক দূর যেতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

আমাদের আরও অনেক দূর যেতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় ‘দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন -পিআইডি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য (এমডিজি) বাস্তবায়নে বাংলাদেশ অগ্রগামী ছিল এবং যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনেও বাংলাদেশ সেই পথে এগিয়ে চলেছে। সবাই জীবনের ঝুঁঁকি নিয়ে দক্ষতার সঙ্গে কাজ করেছেন বলে এ অর্জন সম্ভব হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তবে সামনে আমাদের আরও অনেক দূর যেতে হবে।

গতকাল সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সেয়ের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)-এর সভায় যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, এমডিজি বাস্তবায়নে কিন্তু বাংলাদেশ অনেক অগ্রগামী ছিল এবং সেখানে যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। এসডিজির ক্ষেত্রেও আমরা একই পথে এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের সুষ্ঠু পরিকল্পনা, সুনির্দিষ্ট দিক দর্শন আছে এবং আমরা সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোচ্ছি বলেই এটা অর্জন সম্ভব। দেশ যা কিছু অর্জন করেছে তা সম্মিলিতভাবে কাজ করার কারণেই হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব থেকে ভালো লাগে, যখন দেখি সরকার কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে আর তা বাস্তবায়নে সামরিক-অসামরিক কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, দলীয় নেতা-কর্মীসহ দেশের জনগণ এগিয়ে আসে। অনেক সমস্যা মোকাবিলা করে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হয়েছে। সেগুলো অতিক্রম করেও বাংলাদেশ কিন্তু এগিয়ে যাচ্ছে এবং এগিয়ে যাবে। এসডিজি বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সরকার সুপরিকল্পিতভাবে পদক্ষেপ নিয়েছে এবং পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় এগুলো গ্রহণ করা হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগের যে ঘোষণাপত্র, গঠনতন্ত্র এবং নির্বাচনী ইশতেহার সেখানেও কিন্তু দেশের উন্নয়নের দিকে চিন্তা করেই বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা আমরা ঘোষণা করেছি। আমরা সেভাবেই সরকার গঠন করার পর থেকে কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছি। তিনি বলেন, এর ফলে আজকে এসডিজি বাস্তবায়নে বিশ্বের তিনটি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম অবস্থানে আছে। এটা আমাদের জন্য বড় অর্জন। কেননা করোনাভাইরাসের কারণে যখন সারাবিশ্বের অর্থনীতি স্থবির, সেই সময় কিন্তু একদিকে করোনাভাইরাস মোকাবিলা করা, মানুষকে সুরক্ষিত করা; অপরদিকে অর্থনৈতিক উন্নয়নকে গতিশীল রাখা চ্যালেঞ্জিং ছিল।’ অনুষ্ঠানে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশের সক্ষমতার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঝড়-ঝাপটা, জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড়, প্রাকতিক দুর্যোগ যতই আসুক না কেন বাংলাদেশের জনগণ তা মোকাবিলা করতে পারে। আমাদের মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এটা শিখিয়ে দিয়ে গেছেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুজিববর্ষ উপলক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় প্রকাশিত স্মারকগ্রন্থ ‘দুর্যোগ ঝুঁঁকি হ্রাসে বঙ্গবন্ধু’-এর মোড়ক উন্মোচন করেন।

১০ প্রকল্প অনুমোদন : ৪ হাজার ১৬৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয়ের ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। পাস হওয়া প্রকল্পগুলোর সবগুলোই নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়িত হবে। এর মধ্যে সরকার দেবে ৪ হাজার ১২৫ কোটি ৮২ লাখ টাকা এবং বাকি ৪০ কোটি ৭৯ লাখ টাকা সংস্থার নিজস্ব ফান্ড থেকে ব্যয় হবে। গতকাল একনেক চেয়ারপারসন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে প্রকল্পগুলো অনুমোদন দেওয়া হয়। একনেক সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের সামনে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে সাতটি নতুন এবং তিনটি সংশোধিত।

নতুন প্রকল্পগুলোর মধ্যে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ‘নোয়াখালী সড়ক বিভাগাধীন ক্ষতিগ্রস্ত কবিরহাট-ছমির মুন্সীরহাট-সোনাইমুড়ী সড়ক এবং সেনবাগ-বেগমগঞ্জ গ্যাসফিল্ড-সোনাইমুড়ী সড়ক উন্নয়ন’ প্রকল্পটি ৩৭১ কোটি ১৬ লাখ টাকা খরচে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুন মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ‘গোপালগঞ্জ জেলার পল্লী এলাকার নিরাপদ পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়ন’ প্রকল্পটি ২৬১ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। প্রকল্পটি ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের জুন মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে। এই মন্ত্রণালয়ের ‘গাজীপুর সিটি করপোরেশনের জন্য এবং বিভিন্ন অঞ্চলে বাস-ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণের নিমিত্তে জমি অধিগ্রহণ’ প্রকল্পটি ৭৮২ কোটি ২৫ লাখ টাকা। প্রকল্পটি ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের জুন মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ‘গাজীপুর জেলা পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্পটি ৬৮৫ কোটি খরচে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জুন মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে। এ ছাড়া এ মন্ত্রণালয়ের ‘গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প : জেলা টাঙ্গাইল’ প্রকল্পটি ৮৬৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকা খরচে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জুন মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের ‘উন্নতমানের আগর রেজিন সঞ্চয়ন প্রযুক্তি উদ্ভাবন’ প্রকল্পটি ৬৭ কোটি ৯২ লাখ টাকা খরচে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের ‘রংপুর, নীলফামারী, পীরগঞ্জ শহর ও আশপাশের এলাকায় গ্যাস বিতরণ পাইপলাইন নেটওয়ার্ক নির্মাণ’ প্রকল্পটি ২৫৮ কোটি ১১ লাখ টাকা খরচে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি ২০২১ সালের জুলাই থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে। সংশোধিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ‘সাপোর্ট টু জয়দেবপুর-দেবগ্রাম-ভুলতা-মদনপুর সড়ক (ঢাকা বাইপাস) পিপিপি’ প্রকল্পটির প্রথম সংশোধন অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটির মূল খরচ ছিল ২৩৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা। প্রকল্পটির ৪৩৮ কোটি ২৪ লাখ টাকা খরচ বাড়িয়ে ৬৭৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি শুরু হয়েছে ২০১৬ সালের মার্চে। শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২০ সালের জুনে। এখন সময় বাড়িয়ে করা হলো ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত।

কঠিন সময়ে জোরালো বৈশ্বিক সহযোগিতা প্রয়োজন : করোনা মহামারীর কঠিন সময় কাটিয়ে উঠতে জোরালো বৈশ্বিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে তিনি ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্প্রসারণের মাধ্যমে কভিড-১৯ মহামারীর বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে জরুরি ভিত্তিতে সম্মিলিত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। গতকাল বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যায় তিন দিনব্যাপী কাতার ইকোনমিক ফোরামের সম্মেলনে (ভার্চুয়াল) পূর্ব রেকর্ডকৃত ভিডিওবার্তায় তিনি এ আহ্বান জানান। কাতার ইকোনমিক ফোরামের থিম হলো ‘রি-ইমাজিনিং দ্য ওয়ার্ল্ড’।বিশ্বনেতাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কভিড-১৯ মহামারীতে ইতিমধ্যে লাখ লাখ মানুষের প্রাণহানি হয়েছে, বৈশ্বিক অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়েছে। এ মহামারীর ধাক্কায় বিশ্ব বহু দিক থেকে পিছিয়ে পড়েছে। এ কঠিন সময় কাটিয়ে উঠতে আমাদের জোরালো বৈশ্বিক সহযোগিতা প্রয়োজন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা কভিড-১৯-এর চ্যালেঞ্জগুলো প্রত্যক্ষ করছি। সবার সমৃদ্ধি অর্জনের জন্য ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ সম্প্রসারণের মাধ্যমে কভিড-১৯-এর প্রভাব প্রশমনে সবাই এক হয়ে জরুরি ভিত্তিতে সম্মিলিত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।

কভিড-১৯ মহামারীকে বৈশ্বিক সংহতির জন্য একটি ‘লিটমাস টেস্ট’ হিসেবে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্যারিস চুক্তি এবং আদ্দিস আবাবা অ্যাকশন এজেন্ডা এ সংকট উত্তরণে আমাদের জন্য ব্লু-প্রিন্ট হতে পারে।

নিজের দৃঢ়বিশ্বাসের কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, কভিড-১৯ ভ্যাকসিন বৈশ্বিক পাবলিক পণ্য হিসেবে ঘোষণা হওয়া উচিত। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কয়েক বছর ধরে আমরা বিশ্বজুড়ে জনবহুলতা, বিশ্ববিরোধী সংবেদনশীল মনোভাব এবং অর্থনৈতিক সুরক্ষাবাদের উত্থান দেখছি। বহুপাক্ষিকতাকে শক্তিশালী করতে আমাদের একসঙ্গে দাঁড়াতে হবে। অর্থনৈতিক কার্যক্রম সম্প্রসারণের পূর্বশর্ত হিসেবে বিশ্বের সবখানে শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে হবে।

বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী কভিড-১৯ মহামারী-পরবর্তী অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে ছয় পরামর্শ উপস্থাপন করেন। এগুলো হলো-

১. প্যারিস চুক্তির লক্ষ্য অর্জনে উচ্চাভিলাষী জলবায়ু পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। ২. ডিজিটাল বৈষম্য দূর করতে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনকে এগিয়ে নিতে হবে। ৩. বৈশ্বিক বাণিজ্য এবং রপ্তানি আয় পুনরুজ্জীবিত করতে লক্ষ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক সহায়তা প্রয়োজন। ৪. ক্ষতিগ্রস্ত অভিবাসী শ্রমিকদের পুনরায় সুসংহত করতে এ অঞ্চলের আয়োজক দেশ, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ এবং বিনিয়োগকারীদের অবদান রাখা উচিত। ৫. মহামারীর কারণে এলডিসি থেকে উত্তরণ হওয়া দেশগুলোর সম্ভাব্য ‘স্লাইড ব্যাক’ ঠেকাতে নতুন আন্তর্জাতিক সহায়তার ব্যবস্থা থাকতে হবে। ৬. সমৃদ্ধির জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক, টেকসই এবং সামগ্রিক একটি পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা প্রয়োজন। মহামারীর পরেও টেকসই এবং সমতাভিত্তিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

গত এক দশকে বাংলাদেশ ৬ শতাংশের বেশি টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা এলডিসি থেকে উত্তরণের চূড়ান্ত সুপারিশ লাভ করেছি কভিড-১৯ মহামারীর সঙ্গে লড়াই করার সময়। আমরা জীবন ও জীবিকার মধ্যে একটি ভারসাম্য তৈরির চেষ্টা করছি। আমাদের সরকার এ পর্যন্ত ১৫ দশমিক ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিমাণের বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। মহামারী সত্ত্বেও আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ২০২০-২১ সালে ৬ দশমিক ১ শতাংশে পৌঁছেছে।

বাংলাদেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের চমৎকার পরিবেশ রয়েছে এবং দেশটি বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা দিচ্ছে। কাতার এবং মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিশেষত অবকাঠামো, আইসিটি, নবায়নযোগ্য শক্তি, হালকা প্রকৌশল ও ফার্মাসিউটিক্যাল শিল্প এবং পাট ও কৃষি জাত পণ্যের ক্ষেত্রে সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর