বৃহস্পতিবার, ২৪ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

সেরাম টিকা না দিলে টাকা ফেরত দেবে : অর্থমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

চুক্তি অনুযায়ী ভারতীয় প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউট টিকা সরবরাহে ব্যর্থ হলে টাকা ফেরত দেবেই। আর এটা নিশ্চিত করবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। গতকাল ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে অনলাইন ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে টিকা আনার বিষয়টি আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দেখভাল করবে। টিকা দিতে চুক্তি অনুযায়ী কত দিন সময় নিয়েছিল তা দেখতে হবে। ভারতেও টিকার প্রয়োজন। সেসব কারণ বিবেচনায় নিয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। অবশ্যই এটা ঠিক, তারা টিকা দিতে ফেল করলে টাকা ফেরত দেবেই। এটা একটা চলমান প্রক্রিয়া।’

প্রসঙ্গ টাকা পাচার : বিদেশে টাকা পাচারসংক্রান্ত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, চুরি হওয়া টাকার বিষয়ে আমরা আইনি প্রক্রিয়ায় গেছি। যারা এর সঙ্গে সম্পৃক্ত বা আমাদের চিন্তায় যারা ছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে আমরা মামলা করেছি, মামলা এখনো চলমান। এ সময়ে এ বিষয়ে কোনো মামলা করা সমীচীন নয়। রিজার্ভ চুরির বিষয়টি নিয়েও মামলা চলমান।

সামষ্টিক অর্থনীতির গতি : অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামী অর্থবছরে অনেক চ্যালেঞ্জ থাকলেও দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির গতি ঊর্ধ্বমুখীই রয়েছে। নতুন অর্থবছরে সামষ্টিক অর্থনীতিতে কী ধরনের চ্যালেঞ্জ দেখছেন এবং সামনের অর্থবছরে পরিকল্পনা কী জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, চ্যালেঞ্জ অনেক, চ্যালেঞ্জ নেই তা বলব না। আমরা চ্যালেঞ্জগুলো সব সময় সুযোগ হিসেবে চিন্তা করি। কারণ ইতিহাসে দেখেছি কোনো দেশে যখনই অর্থনৈতিক দিক থেকে কোনো চ্যালেঞ্জ আসে তখনই সে দেশের সুযোগ-সুবিধা বাড়ে। আমরা মনে করি আমাদের সুযোগ-সুবিধা বাড়বে। এর মাঝে আমাদের এ বছর শেষ দিকে চলে এসেছে, এখানেও আমরা দেখেছি তুলনামূলক বছরের প্রথম থেকে শুরু করি। বছর শেষে আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতির গতিবিধি অনেক ঊর্ধ্বমুখী।

অনেকেই ধারণা করেছিলেন আমরা অর্জন করতে পারব না, আমরা তা পেরেছি। প্রধানমন্ত্রীর সময়োপযোগী সিদ্ধান্তের কারণে আমরা এটি করতে পেরেছি। আমাদের রেভিনিউ অর্জন ছিল প্রধান সমস্যা। রেভিনিউ অর্জন এখন আমাদের ১৭ শতাংশ গ্রোথ। এক্সপোর্টেও ১৪ শতাংশ গ্রোথ আছে। রিজার্ভের পরিমাণও ৪৬ বিলিয়ন ডলার ছুঁইছুঁই করছে, এ মাসেই ৪৬ বিলিয়ন ডলার হয়ে যাবে। রেমিট্যান্সের পরিমাণ ২৫ বিলিয়ন ডলার, গত বছর ১৮ বিলিয়ন ডলার ছিল।

প্রসঙ্গা কালো টাকা : আগামী অর্থবছরে বিশেষ প্রণোদনায় কালো টাকা সাদা করার সুযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে জানতে আপনাদের আরও কয়েকটা দিন অপেক্ষা করতে হবে। আমরা অর্থ বিল সংসদে পাস করব ২৯ তারিখ, সে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

বাজেট ঘাটতি সব দেশেরই থাকে : ঘাটতি বাজেট বাস্তবায়নে সামনে কোনো চ্যালেঞ্জ দেখছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বাজেট ঘাটতি এ বছর পৃথিবীর সব দেশই অনুসরণ করছে। আমরা যে কাজটি গত বছর করেছিলাম, প্রথমেই আমরা প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়েছি। আমরা জনগণের কাছে টাকার জোগান দিয়েছি বিভিন্ন প্রক্রিয়ায়। এতে সবাই অন্তত খাবার পেয়েছে, মোটামুটিভাবে তারা তাদের জীবন-জীবিকা নির্বাহ করতে পেরেছে। এজন্য আমি বলি বাজেটে ঘাটতি আমাদের একার নয়, সবার। জাতিসংঘের মহাসচিব প্রতিটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানকে অনুরোধ করেছেন যাতে এ বিষয়টি সাংঘর্ষিক না হয়। আমরা সেটিই অনুসরণ করেছি তা বলব না, আমরা অনেক আগে থেকেই প্রধানমন্ত্রী আমাদের দিয়ে সেই কাজটি শুরু করিয়েছেন এ দেশে। বাজেট ঘাটতির পরিমাণ জিডিপির ৬ দশমিক ২ শতাংশ। আমেরিকার বাজেট ঘাটতি ১৮ দশমিক ৭২ শতাংশ, ভারতের ১৩ দশমিক ০৭ শতাংশ, জাপানের ১২ দশমিক ৯ শতাংশ, চীনের ১১ দশমিক ৮৮ শতাংশ, ইন্দোনেশিয়ার ৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ এবং ভিয়েতনামের ৬ দশমিক ২ শতাংশ। ধনী অথবা ধনী নয়, উন্নয়নশীল অথবা উন্নত দেশের সবাই কিন্তু এ বাজেট ঘাটতি নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর