শুক্রবার, ২৫ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

কোম্পানীগঞ্জে কুপিয়ে জখম সাংবাদিককে

বসুরহাটে ১৪৪ ধারা, কাদের মির্জার বিচার দাবিতে মানববন্ধন

নোয়াখালী প্রতিনিধি

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট বোন রোকেয়া বেগমের বাসায় বুধবার রাতে হামলা হয়। এর প্রতিবাদে ওই রাতেই বসুরহাট থানার সামনের সড়কে কাদের মির্জার বড় বোন তাহেরা বেগম ও ছোট বোন রোকেয়া বেগম উপজেলা আওয়ামী লীগের কর্মীদের নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে কাদের মির্জার বিচার চান। এদিকে এ হামলার প্রতিবাদে উপজেলা আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপ বসুরহাটে গতকাল বিকালে পাল্টাপাল্টি সমাবেশ ডাকে। পরিস্থিতি এড়াতে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জিয়াউল হক মীর গতকাল বেলা ১২টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করেন। বসুরহাটে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। অন্যদিকে গতকাল দুপুরে কোম্পানীগঞ্জের সাহাজাদপুরে প্রশান্ত সুভাষ চন্দ নামে এক স্থানীয় সাংবাদিককে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করেন আবদুল কাদের মির্জার অনুসারীরা। তারা সুভাষের মা দেবী রানী চন্দ ও ছেলে প্রমিত প্রতাপ চন্দকেও কুপিয়ে-পিটিয়ে আহত করেন। গতকাল বেলা পৌনে ১টার দিকে শহিদ উল্যাহ ওরফে কেচ্চা রাসেলের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা তার বাড়িতে হামলা চালায়। তারা সাংবাদিক সুভাষের বসতঘর ভাঙচুর করে। আহতদের নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালে সুভাষের স্বজনরা জানান, আবদুল কাদের মির্জার কাছের লোক কেচ্চা রাসেলের নেতৃত্বে ২৫-৩০ সন্ত্রাসী আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশি অস্ত্র নিয়ে অতর্কিতে সুভাষের বসতঘরে হামলা চালায়। তারা সুভাষকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করে। পরে তার ছেলে এবং মাকেও কুপিয়ে-পিটিয়ে আহত করা হয়। সন্ত্রাসীরা তার বসতঘরটিও কুপিয়ে তছনছ করে। কাদের মির্জার প্রতিপক্ষ সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বাদলের সমর্থক আহত সাংবাদিক সুভাষ। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, মির্জার সমর্থক কেচ্চা রাসেলের নেতৃত্বে প্রতিটি হামলা ও গুলির ঘটনা ঘটলেও পুলিশ এখনো তাকে গ্রেফতার করেনি। এর আগেও দুই পক্ষের সংঘর্ষ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে কেচ্চা রাসেলকে অস্ত্র হাতে ঘুরতে দেখা যায়। রোকেয়া বেগম অভিযোগ করেন, ‘মির্জার বাহিনী এ হামলা করেছে। আর কে আছে? সে (কাদের মির্জা) তো এখন গডফাদার। পুলিশ তাকে প্রটেকশন দিচ্ছে। সে বিশাল ক্ষমতাধর। বাসায় হামলা করে আমার ছেলে রাহাতকে খুঁজতে থাকে।’ এ হামলা কেচ্চা রাসেলের নেতৃত্বে হয়েছে বলে রোকেয়ার ছেলে ফখরুল ইসলাম রাহাত অভিযোগ করেন। এ বিষয়ে জানতে বসুরহাট পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জার ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ব্যক্তিগত সহকারী পরিচয় দিয়ে সাহাদাত সাহেদ ফোন রিসিভ করে বলেন, এ হামলার সঙ্গে মেয়রের অনুসারীরা জড়িত নন। এ সম্পর্কে তারা এইমাত্র (বিকাল ৫টা) শুনেছেন বলে জানান। এ বিষয়ে নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বসুরহাটে র‌্যাব, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন রয়েছে।’ এদিকে বসুরহাট রূপালী চত্বরে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন। গতকাল বেলা ১২টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত এ ঘোষণা বলবৎ থাকবে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জিয়াউল হক মীর।

সর্বশেষ খবর