রবিবার, ২৭ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

যত দ্রুত সম্ভব ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা

নিজস্ব প্রতিবেদক

যত দ্রুত সম্ভব ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা

করোনাভাইরাস মহামারীর চলমান পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে যত দ্রুত সম্ভব ভ্যাকসিনেশনের ব্যবস্থা করতে হবে এবং সেটি সরকারের পক্ষ থেকে করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। গতকাল দুপুরে অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে অনলাইন ব্রিফিংয়ে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা জানান। অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘একটি বিষয়ে আপনারা কনসার্ন, আমি নিজেও কনসার্ন। সেটা হলো আমাদের ভ্যাকসিনেশন। এটা আমাদের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। যত দ্রুত সম্ভব এটা আমাদের করতে হবে এবং সেটা করা হচ্ছে। আপনারা শিগগিরই এর রেজাল্ট পাবেন।’ করোনা পরিস্থিতির মধ্যে সামনে অর্থনীতিতে কী ধরনের প্রভাব পড়তে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময় ভালোটাই প্রত্যাশা করি। এখনো আমাদের সেটাই প্রত্যাশা। আমাদের চলতি অর্থবছরে যে ধরনের প্রজেকশন ছিল, সেগুলো কিন্তু আমরা অ্যাচিভ করতে পেরেছি। এটা অবিশ্বাস্য মনে হবে। সবচেয়ে কঠিন খাত হলো রেভিনিউ জেনারেশন। সেটাতেও আমাদের ১৭ শতাংশ গ্রোথ হয়েছে। ফরেন এক্সচেঞ্জ রিজার্ভেও গ্রোথ আছে। যারা একসময় বলেছিলেন রেমিট্যান্স আসবে না, মানুষ দেশে চলে এসেছে বলে রেমিট্যান্স পাঠানোর মতো কেউ থাকবে না। কিন্তু সেগুলো সব সত্যি হয়নি। সত্যি হয়েছে যেটি তা হলো এ দেশের মানুষ যারা বিদেশে আছেন, প্রবাসী ভাই-বোনেরা, তারা দেশকে ভালোবাসেন। দেশের জন্য দায়বদ্ধতায় তারা বিশ্বাস করেন। সেই দায়বদ্ধতার কারণে তারা সবকিছু মেনে নিয়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ অব্যাহত রেখেছেন।’ তিনি বলেন, “এক বছরে ২৫ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স থেকে, যা সব সময়ের চেয়ে সর্বোচ্চ। এমনটা আর কখনো হবে কি না জানি না। আমাদের লোকজন বলেছিল আসবে না, শুধু না না না। আমরা ‘না, না’ তে বিশ্বাস করি না। আল্লাহ আমাদের প্রতি সদয় ছিলেন। এবারও আমরা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করব, তিনি আমাদের সুস্থ রাখবেন এবং আমাদের জীবন সুন্দর হবে।”

অর্থমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাসের পরিস্থিতিতে যারা গরিব হয়েছেন তাদের চিহ্নিত করে সাহায্য করা হবে। বিবিএসের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৬ কোটির বেশি মানুষ দরিদ্র হয়েছে।

এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে কমেন্ট করার প্রয়োজন নেই। আমরা গরিবদের সাহায্য করে থাকি। তাদের ক্যাশ ট্রান্সফার করা হয়ে থাকে। আমার বিশ্বাস যারা গরিব, তাদের আমরা আইডেন্টিফাই (চিহ্নিত) করতে পারব। আইডেন্টিফায়েড যারা, তাদের তো ডেফিনেটলি সাহায্য করা হবে। তবে এই ৬ কোটি দরিদ্রের সংখ্যাটি আমার কাছে এখনো আসেনি।’

সর্বাত্মক লকডাউনের মধ্যে গরিবদের জন্য সরকারের বিশেষ কোনো পরিকল্পনা আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়টির জন্য আমাদের আলাদা একটি কমিটি আছে। প্রধানমন্ত্রী এটি দেখাশোনা করেন। আমার বিশ্বাস যে বিষয়গুলো বলছেন, অবশ্যই এগুলো আমরা দেখব।’

পরিকল্পনামন্ত্রী একটি ওয়েবিনারে বলেছেন, বাজেট পলিশিং করা দরকার, এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এটি আপনারা যেমন বোঝেননি আমিও তেমনি বুঝিনি। পরিকল্পনামন্ত্রীকে এটি জিজ্ঞেস করতে হবে, তিনি কী মিন করেছেন। বাজেটের ব্যাপারে তার যে মতামত, সেগুলো তো আমরা আগেই পেয়েছি। এখন তিনি আবার নতুন করে কী ভাবছেন আমি জানি না। বাজেট আমাদের সামনেই আছে, বাজেট সবার জন্য উন্মুক্ত। সবাই বাজেটের বিষয়গুলো বিবেচনা করছেন এবং পর্যালোচনাও করছেন। পরিকল্পনামন্ত্রী কিসের ভিত্তিতে এ মন্তব্য করেছেন আমি জানি না। এটা না জানা পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করা ঠিক না।’

চলতি অর্থবছর বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ৭০ শতাংশ অর্থছাড় করা হয়েছে। পরে সেটিকে ৮৫ ভাগ পর্যন্ত করা হয়েছে। আগামী অর্থবছরও কি বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে এই নীতি অব্যাহত থাকবে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এখনকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক না। আমরা সে জন্য যেটা প্রয়োজন, সেটাই দিচ্ছি। আমাদের থেকে টাকা নিয়ে অপচয় করবেন সেই অপরচুনিটি যদি আমরা বন্ধ করি, সে জন্য আমাদের ফুল মার্কস দেওয়া দরকার। আমরা এই অপচয় রোধ করতে এ কাজটি করেছি।’ গার্মেন্টস মালিকদের প্রণোদনার টাকা পরিশোধের সময় বাড়ানোর আবেদন বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি, সিদ্ধান্ত হলে আপনাদের জানানো হবে। সবাই এটি নিয়ে কাজ করছে। দেখা যাক কী করা যায় শেষ পর্যন্ত।’ ভূমধ্যসাগর থেকে অবৈধভাবে বিদেশগামী বাংলাদেশিদের উদ্ধার করা হয়। দেশে ব্যাপক উন্নতির পরও তারা কেন যাচ্ছে এমন প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু বাংলাদেশের মানুষ না, সেখানে আমরা দেখি এভাবে অন্যান্য দেশের মানুষ যাত্রা করছে। দেখেশুনে কেন তারা এই ঝুঁকি নিচ্ছে, সেটা আমার নিজেরও জানতে ইচ্ছা হয়।’

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর