বৃহস্পতিবার, ১ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা
মগবাজার ট্র্যাজেডি

ইমরানও না ফেরার দেশে

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর মগবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনায় ৯০ শতাংশ দগ্ধ হওয়ায় নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়েছিল ইমরান হোসেন শুভকে (২৫)। বাঁচার আকুতি জানিয়ে একদিকে কাতরাচ্ছিলেন ইমরান, অন্যদিকে আইসিইউ বেডের বাইরে মোনাজাত ধরে বুক ভাসিয়ে যাচ্ছিলেন তার মা, খালা, বোন, শাশুড়িসহ স্বজনরা। স্ত্রী তামান্না বার বার অচেতন হয়ে পড়ছিলেন। সবার একটাই চাওয়া ছিল, অন্তত প্রাণে বেঁচে থাকুক ইমরান। কিন্তু সবাইকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন তিনি।

গতকাল সকাল পৌনে ৭টার দিকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মা লিজা আক্তার শেফালীর চোখের মণি ইমরান। এ নিয়ে মগবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল নয়জনে। এদিকে গতকাল ইমরান হোসেন এবং বিস্ফোরণস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া কেয়ারটেকার হারুন-অর-রশিদ হাওলাদারের (৭০) লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

বার্ন ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন ইমরানের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ইমরানের শরীরের ৯০ শতাংশ দগ্ধ ছাড়াও শ্বাসনালি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এ জন্য প্রথম থেকেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছিল। এ ঘটনায় আরও চারজন বার্ন ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে নবী মন্ডল ও মো. রাসেল নামে দুজনের অবস্থা সংকটাপন্ন। এ ছাড়া ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনজন শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। আহত ইমরানের ছোট বোন আইরিন সুলতানা জানান, তাদের গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর থানার লাউহাটি গ্রামে। ইমরান স্ত্রী তামান্না আক্তারকে নিয়ে মগবাজারে থাকতেন। তিন বছর আগে তামান্নাকে বিয়ে করেন তিনি। তাদের কোনো সন্তান নেই। দুই বছর ধরে ইমরান বিস্ফোরণ ঘটা ভবন মগবাজার প্লাজায় ‘বেঙ্গল মিট’ নামে মাংসের দোকানে সেলসম্যানের চাকরি করতেন।

রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর মগবাজারের ওয়্যারলেসের ৭৯ নম্বর আউটার সার্কুলার রোডের পুরনো একটি তিনতলা ভবনে বিস্ফোরণের বিকট শব্দে পুরো এলাকা কেঁপে ওঠে। ভবনটির একাংশ ধসে পড়ে। আশপাশের ডজনখানেক ভবনের কাচ চৌচির হয়ে ভেঙে পড়ে। সড়কে থাকা দুটি বাসও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিস্ফোরণে নয়জন নিহতসহ দুই শতাধিক লোক আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় অবহেলার অভিযোগ এনে পুলিশ বাদী হয়ে রমনা থানায় একটি মামলা করেছে। বিস্ফোরণের কারণ অনুসন্ধানে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, বিস্ফোরক অধিদফতর পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর