বৃহস্পতিবার, ১ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবি অবান্তর

নিজস্ব প্রতিবেদক

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবি অবান্তর

করোনার উচ্চ সংক্রমণের সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবি অবান্তর বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। শিগগিরই এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলে জানান তিনি। গতকাল জাতীয় সংসদে বাজেট পাসের প্রক্রিয়ার সময় বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের বিভিন্ন ছাঁটাই প্রস্তাবের জবাব দিতে গিয়ে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন। এর আগে জাতীয় পার্টি, বিএনপি ও গণফোরামের সদস্যরা ছাঁটাই প্রস্তাবের পর তাদের বক্তব্য দেন। এ সময় কোনো কোনো সংসদ সদস্য স্কুল খুলে দেওয়ার দাবি করেন। অবশ্য কেউ কেউ এর বিরোধিতাও করেন। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বিজ্ঞানকে অস্বীকার করে বৈশ্বিক সংকট করোনা অতিমারীর মধ্যে চলতে পারি না। বিজ্ঞান বলছে শতকরা ৫ শতাংশ বা তার কমে সংক্রমণের হার না নামা পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা স্বাস্থ্যসম্মত নয়। বিজ্ঞান সম্মত নয়। এখন সংক্রমণের হার প্রায় ২৪ শতাংশ। কোনো কোনো জেলায় সংক্রমণ ৫০ শতাংশ বা তারও ঊর্ধ্বে। এই সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার দাবি আদৌ যৌক্তিক কি না তা ভেবে দেখার দরকার আছে। কারণ এই সংসদ জাতির জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। তিনি বলেন, বিশ্বের উন্নত দেশগুলো বিভিন্ন সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার চেষ্টা করেছিল। তারা খোলার পরে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার পরে আবারও বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে। উন্নত দেশগুলো যেখানে শ্রেণি সাইজ ২০/২৫ জনের বেশি নয়। আমাদের এখানে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা গায়ে গায়ে লেগে বসে থাকে। সেখানে খোলার প্রশ্নটা একেবারেই অবান্তর।

শিগগিরই এসএসসি-এইচএসসির সিদ্ধান্ত : এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, বিশ্বের বহু দেশ এমনকি উন্নত বিশ্বের দেশগুলোও পাবলিক পরীক্ষা বাতিল করেছে। কোনো কোনো প্রেডিকটেড গ্রেড দিচ্ছে। আমরা সেখানে ২০২০ সালের এসএসসি পরীক্ষা নিয়ে ফেলেছিলাম। এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর দিক দুই/তিন দিন আগে বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছিলাম। পরে আমরা জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে তার ফলাফল দিয়েছিলাম। আমরা যেভাবে বিচার বিশ্লেষণ ও টালি করে ফলাফল দিয়েছি দুই একটি ব্যতিক্রম ছাড়া পরীক্ষা হলে শিক্ষার্থীদের ফলাফল এরকমই হতো। কাজেই কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।

তিনি বলেন, এ বছরের সিদ্ধান্ত আমরা খুব শিগগিরই জানাব। কী পদ্ধতি আমরা করব সবকিছুই জানাব। তবে, শিক্ষার্থী অভিভাবকসহ সবাইকে বলব উদ্বিগ্ন হবেন না। বৈশ্বিক সংকট চলছে। এই সংকট মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সব ক্ষেত্রে সেভাবে সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। একইভাবে শিক্ষাক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত হবে। এটি সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ সেক্টর। অবশ্যই আমরা প্রজ্ঞা, জ্ঞানের সব কিছু প্রয়োগ করে সিদ্ধান্ত নেব।

মন্ত্রী বলেন, শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন সারা বিশ্বেই ব্যত্যয় ঘটেছে। আমাদের এখানেও কিছুটা ঘটেছে। কিন্তু তাদের যাতে দীর্ঘ মেয়াদে কোনো ক্ষতি না হয়ে যায় তার জন্য সর্বোচ্চ নজর রাখছি। আমরা কভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় পরামর্শক কমিটির পরামর্শ গ্রহণ করেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকি। সংসদ সদস্যরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতির বিষয়ে আপিল করা হয়েছে ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচনাকালে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংসদ সদস্যরা সভাপতি থাকতে পারবেন না বলে আদালতের নির্দেশনার প্রসঙ্গটি ওঠে। এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এখানে আইনমন্ত্রী রয়েছেন। উনার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আপিল হয়েছে। অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গেও আমার আলাপ হয়েছে। আমরা আশাকরি আপিলটি যখন উঠবে শুনানি হবে। তখন শিক্ষা মন্ত্রণালয় যথোপযুক্ত দায়িত্ব পালন করবে। ব্যক্তিগতভাবে মনে করি যে কোনো নাগরিকের এই অধিকার কেউ কেড়ে নিতে পারেন না।

সর্বশেষ খবর