রবিবার, ৪ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফোন ধরেন না চিঠির উত্তর দেন না

----- জি এম কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

সংসদের বিরোধীদলীয় উপনেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, ‘সদর হাসপাতাল স্বাস্থ্যসেবা কমিটির সভাপতি পদে পদাধিকারবলে স্থানীয় সংসদ সদস্যকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু কমিটিকে কোনো ক্ষমতা বা কর্তৃত্ব দেওয়া হয়নি। নিয়ম, আইন বা অর্থ বরাদ্দ এমন কিছুই থাকে না (কমিটির হাতে), যাতে তারা সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে পারেন। প্রায় সময় সিদ্ধান্তকে বাস্তবে রূপ দিতে মন্ত্রণালয়ের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপ প্রয়োজন পড়ে। ফলে তাদের (জেলা প্রশাসনের) প্রধান কাজ হয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা সরাসরি মন্ত্রীকে খুশি করে কাজটি বাস্তবায়ন করা। কিন্তু প্রায় ক্ষেত্রেই সহযোগিতা পাওয়া যায় না। টেলিফোন করলে তারা ধরেন না। আমি মন্ত্রীকে ছয়-সাত বার টেলিফোন করেছি। তিনি ফোন ধরেন না। শুধু ফোনই নয়, চিঠি দিলেও স্বাস্থ্যমন্ত্রী উত্তর দেন না।’

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে গতকাল জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে বিরোধীদলীয় উপনেতা এসব কথা বলেন।

গোলাম মোহাম্মদ কাদের এ সময় নিজ নির্বাচনী এলাকা লালমনিরহাটের স্বাস্থ্যসেবার দুরবস্থার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘দুই দিন আগে সংসদে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন সদর হাসপাতাল স্বাস্থ্যসেবা কমিটির সভাপতি পদে পদাধিকারবলে স্থানীয় সংসদ সদস্যকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তারা (স্থানীয় প্রশাসন) সঠিকভাবে কাজ করেন না বলে স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন হচ্ছে না। এ কথাটার কারণে মানুষের মধ্যে ভুল-বোঝাবুঝির সৃষ্টি হতে পারে।’ তিনি বলেন, যাদের এভাবে সভাপতি করা হয় তাদের কোনো সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব দেওয়া হয় না। তারা নিজ উদ্যোগে হাসপাতালের সমস্যা নির্ধারণ করেন এবং সমাধানের প্রচেষ্টা চালান। স্বাস্থ্যসেবা কমিটিকে কোনো ক্ষমতা বা কর্তৃত্ব দেওয়া হয়নি।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘ওনার (স্বাস্থ্যমন্ত্রী) বাবা আমাদের দল করতেন। ওনার বাবার সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক ছিল। কিন্তু ওনার কাছ থেকে এ রকম ব্যবহার পেয়েছি। পত্র দিলে কোনো উত্তর বা সমাধান মেলে না। সংসদ সদস্যরা অনেকেই তখন বাধ্য হয়ে সমাধানের লক্ষ্যে বিষয়গুলো সংসদে তুলে ধরেন। যদিও এরপর সমাধান তেমন একটা পাওয়া যায় না।’ তিনি বলেন, ২৮ জন ডাক্তারের বিপরীতে ১২ জন ডাক্তার কর্মরত আছেন। এ সময় তিনি প্রতিটি হাসপাতালের জন্য আয়া-ওয়ার্ডবয়-ক্লিনার পদ সৃষ্টির দাবি জানান। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ারও দাবি জানান।

জি এম কাদের বলেন, ‘রংপুর হাসপাতালে ডায়ালাইসিস মেশিনের পানি বিশুদ্ধকরণ অংশটি নষ্ট ছিল দীর্ঘ প্রায় আট মাস। ফলে ২৫টি ডায়ালাইসিস মেশিন অকেজো হয়ে পড়ে ছিল। মন্ত্রীকে না পেয়ে স্বাস্থ্যের সচিব মহোদয়কে বলেছিলাম। তিনি আশ্বস্ত করে বলেছিলেন হয়ে যাবে। কিন্তু হয়নি। পরে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় জাকাতসহ ৬ লাখ টাকার দান উঠিয়ে নিজস্ব উদ্যোগে এটি মেরামত করা হয়েছে। বর্তমানে ২৫টির মধ্যে ১০টি কাজ করছে না। বারবার মন্ত্রণালয়ে জানিয়েও কোনো ফল হয়নি।’ তিনি বলেন, বর্তমানে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে সাধারণ রোগীর পাশাপাশি করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। সব ধরনের রোগীকে জরুরি চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কিছু যন্ত্রপাতি ও ওষুধের চাহিদা দিয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে চাহিদাপত্র পাঠিয়েছেন। লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের চাহিদাকৃত যন্ত্রপাতি ও ওষুধ জরুরি ভিত্তিতে সরবরাহের কোনো ব্যবস্থা এখনো নেওয়া হয়নি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর