পাবনায় পূর্ব শত্রুতার জেরে সুমন প্রামাণিক (৩৮) নামে এক যুবককে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল দুপুর ২টার দিকে সদর উপজেলার দোগাছি ইউনিয়নের দক্ষিণ রামচন্দ্রপুর ৭ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত সুমন দক্ষিণ রামচন্দ্রপুর মহল্লার মৃত বাকি বিল্লাহ প্রামাণিকের ছেলে ও স্থানীয় বালু ব্যবসায়ী।
সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। নিহত সুমন প্রামাণিক শহর থেকে বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তরা তার ওপর হামলা চালিয়ে হত্যা করে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।
ঘটনার পর উত্তেজিত এলাকাবাসী হত্যাকান্ডে অভিযুক্ত খুনিদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। এ সময় তিনটি বসতবাড়ি পুড়ে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দীর্ঘ এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।নিহত সুমন প্রামাণিকের স্ত্রী রিমা খাতুন বলেন, আমার স্বামী শহরের অনন্ত বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। ঘটনার সময় একজন আমাকে এসে বলেন আমার স্বামী সুমনকে কারা যেন মারছে। আমি দ্রুত সেখানে গিয়ে দেখি ওরা আমাদের প্রতিবেশী টিটু, মিঠু, সঞ্জু, মান্না। সবাই ধারালো অস্ত্র দিয়ে আমার স্বামীকে মারছে। আমি বাধা দিতে গেলে তারা আমাকেও মারতে আসে। তাদের সঙ্গে তাদের পরিবারের অন্য সদস্যরাও ছিল। খুনিদের চাচা সেলিম ও মানিক সেখানে উপস্থিত ছিল। স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিবার ও স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা গেছে, নিহত সুমন আগে প্রায় সাত বছর বিদেশে ছিলেন। বিদেশ থেকে আসার পর স্থানীয় দোগাছি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলী হাসানের গাড়ি চালাতেন। সম্প্রতি তিনি সে কাজ ছেড়ে দিয়ে বালুর ব্যবসা শুরু করেন। গত বছর একই এলাকার কাউন্সিলর বকুল শেখকে হত্যা করা হয়। নিহত সুমন বকুল শেখের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন। বকুল হত্যাকাে র ঘটনার সঙ্গে এ হত্যাকাে র সম্পর্ক থাকতে পারে বলে স্থানীয়রা ধারণা করছেন।
পরিবার এ হত্যাকাে র সঠিক কারণ বলতে পারেনি। কী কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে তা এখনো পরিষ্কার নয়। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি পরিবারসহ স্থানীয়দের। পাবনা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, হত্যাকাে র বিষয়ে আমরা তদন্ত করছি। পূর্ব শত্রুতার জেরে এ হত্যাকাে র ঘটনা হয়ে থাকতে পারে। হত্যাকারীদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান শুরু হয়েছে। আশা করছি খুব অল্প সময়ের মধ্যে আসামিদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।