মঙ্গলবার, ৬ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

চিরকুট লিখে স্কুল ছাত্রীর আত্মহত্যা

বরগুনায় যৌন হয়রানি, সাতক্ষীরায় ফাঁস নিলেন গৃহবধূ

বরগুনা ও সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

‘মা আমার নামে তারা যে বদনাম উঠিয়েছে তাতে আমি এ পৃথীবিতে থাকতে পারছি না। আমি একটা খারাপ মেয়ে, আমি নাকি খুব খারাপ। আমাকে কেউ বিশ্বাস করে না। কেউ না তুমি ছাড়া’- এভাবেই বরগুনায়  নিজের আত্মহননের কথা মায়ের কাছে চিরকুটে লিখে আত্মহত্যা করেছে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া শিক্ষার্থী সামিরা। এদিকে এ ঘটনায় জামাল হোসেন নামের একজনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছেন স্থানীয়রা।

জানা গেছে, গতকাল সকালে বরগুনা পৌর শহরের খামারবাড়ি এলাকার একটি ভাড়াটিয়া বাসার বাথরুম থেকে সামিরার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সে বরগুনা কলেজিয়েট স্কুলের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও সদর উপজেলার ২ নম্বর গৌরীচন্না ইউনিয়নের খাজুরতলা গ্রামের রফিকের মেয়ে।

এলাকাবাসী জানান, সামিরার মা সুমী বেগম ও তার বাবা রফিকের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্কের বিচ্ছেদ হয়। এরপর সামিরার মা সুমী বেগম দ্বিতীয় বিবাহ করেন। দ্বিতীয় স্বামী রাশেদ ও মেয়ে সামিরাকে নিয়ে পৌর শহরের খামারবাড়ি এলাকায় আবুল বাশারের ঘর ভাড়া নেন। এ বাসায় আসার পর থেকেই মালিকের ছেলে জামাল হোসেন স্ত্রী-সন্তান থাকা সত্ত্বেও সামিরাকে বিভিন্ন সময় উত্ত্যক্ত করতে থাকেন। জামাল প্রায়ই সামিয়া বাথরুমে গোসলে গেলে উঁকি দিয়ে দেখেন এবং অশ্লীল ইঙ্গিত করেন। বিষয়টি সামিরা তার মাকে এবং জামালের স্ত্রীকে জানায়। একপর্যায়ে এলাকার অনেকেই বিষয়টি জেনে যান। স্থানীয়রা মনে করছেন, উত্ত্যক্ত ও অপমান সইতে না পেরে আত্মহননের পথ বেছে নেয় সামিরা। আত্মহত্যার আগে একটি সুইসাইড নোট লিখে গেছে সামিরা। 

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বরগুনা সদর সার্কেল) মেহেদী হাসান বলেন, ঘটনাস্থল থেকে আমরা একটি সুইসাইড নোট পেয়েছি। এ বিষয়ে সদর থানায় অপমৃত্যু মামলা রজু করা হয়েছে এবং লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদেন্তর প্রতিবেদন পাওয়ার পর জানা যাবে এটা হত্যা নাকি আত্মহত্যা। এ ঘটনায় কিশোরীকে উত্ত্যক্তের অভিযোগে স্থানীয় এলাকাবাসী জামাল নামের একজনকে অভিযুক্ত করলে তাকে পুলিশ আটক করেছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এদিকে সাতক্ষীরায় বিয়ের মাত্র সাত দিনের মাথায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন আঞ্জুমান আরা (১৮) নামের তরুণী গৃহবধূ। ঘটনাটি ঘটেছে কালীগঞ্জ উপজেলার মথুরেশপুর ইউনিয়নের বসন্তপুর গ্রামে। গৃহবধূ বসন্তপুর গ্রামের আবদুল খালেকের নাতনি ও স্থানীয় কালীগঞ্জ সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের মেধাবী ছাত্রী ছিলেন। আঞ্জুমান আরার নানি ছকিনা খাতুন (৫০) জানান, কালীগঞ্জ সরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় গত সোমবার পারিবারিকভাবে একই এলাকার বাবর আলী ওরফে বাবু মোড়লের ছেলে রাজমিস্ত্রির সহযোগী সাইদুল ইসলামের (২৮) সঙ্গে তার বিয়ে হয়। গত রবিবার সকালে আঞ্জুমান আরার স্বামী সাইদুল ইসলাম কাজের জন্য বাইরে চলে যান। এ সময় ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়নায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন আঞ্জুমান আরা। সকাল ১০টার দিকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন আঞ্জুমান আরাকে আড়ার সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে তাৎক্ষণিক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নাতনি মানসিক সমস্যায় ভুগছিল বলে জানান নানি ছকিনা খাতুন। কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা জানান, এ ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর